পঞ্চানন্দপুরের নয়াবাজার হাই স্কুলের সুবর্ণ জয়ন্তী উৎসব।

নিজস্ব সংবাদদাতা, মোথাবাড়ি : বুধবার বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের মাধ্যমে কালিয়াচক দুই নং ব্লকে র  পঞ্চানন্দপুর    নয়াবাজার উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের  সুবর্ণজয়ন্তী উৎসব শেষ হলো । এই সুবর্ণজয়ন্তী  উৎসব শুরু হয় সোমবার। তিন দিনের এই সুবর্ণজয়ন্তী উৎসব নাচ গান আবৃত্তি  নাটক গম্ভীরা থেকে নানা  সংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে  ভরপুর ছিলো ।

    এই অনুষ্ঠান ঘিরে গঙ্গার পাড়ে  মানুষের মধ্যে উৎসাহ ও উদ্দীপনা ছিল চোখে পড়ার । অনুষ্ঠান  বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ আলোচনাচক্র,  আবৃত্তি,  গান, নৃত্য, নাটক,  কৃতি ছাত্র ছাত্রীদের পুরস্কার বিতরণ করে ।  ছাত্র ছাত্রী, স্থানীয় ও বহিরাগত শিল্পীদের সমন্বয়ে এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে  মুখরিত হয়ে ওঠে  সুবর্ণজয়ন্তী  উৎসব ।অনুষ্ঠানে র দ্বিতীয় দিনে প্রতিভাধর শিল্পী রাফা ইয়াসমিনের সংগীত সকলের মনে দাগ কাটে । এছাড়া ও নজরকারে স্হানীয়  শিল্পী  স্নেহা দাসের যোগনৃত্য ।এছাড়া ও বিভিন্ন  দিনে মানব পুতুল গীতি আলখ্য গম্ভীরাগান অনুষ্ঠান কে মাতিয়ে তুলে । শেষ দিন মালদা  শহরের “মানবীকথা”র  নেতাজী কে নিয়ে  আবৃত্তি ও সঙ্গীত কোরাস সবাই কে মুগ্ধ  করে । মুগ্ধ  করে  পাকুয়া হাট এ এন এম হাই স্কুলের নাটক ” ভূষুন্ডীর মাঠ “। বিদ্যালয়ের  ছাত্র ছাত্রীরা ও কন্যশ্রীর উপর একটি  নাটক  সকলের নজর  কারে  ।

    এছাড়াও অনুষ্ঠানের  প্রথম দিনে ছাত্র ছাত্রী ও শিক্ষক শিক্ষিকারা  পথ পরিক্রমার মধ্যে অনুষ্ঠানের  শুভসুচনা করেন । এর পর প্রদীপ প্রজ্জ্বলন  করেন  প্রতিষ্ঠিতা প্রধান শিক্ষক  উমা শঙ্কর  আগরওয়ালা ও বিশিষ্ট সমাজ সেবী শক্তি  পাত্র । জহরুল ইসলাম ।  এই বিদ্যালয়ের  ইতিহাস ঘাটলেই জানা যায়  আজথেকে  পঞ্চাশ বছর আগে ২ জানুয়ারি, ১৯৬৯ সালে পঞ্চানন্দপুরের  বিশিষ্ট  সমাজ সেবী  বাদিরুদ্দিন সাহেবের  বৈঠকখানায়  স্হানীয়  কয়েক  জন্য শিক্ষানুরাগী  এই বিদ্যালয় চালু করে । এর পর স্হানীয়  প্রাক্তন  প্রধান  তথা কংগ্রেস  নেতা  দুলাল সেখের ঠাকুরদা  হাজি সাহেবজান সেখ নিজের ৭৭ শতক জমি বিদ্যালয়ের  নামে  দান করে । এবং বিদ্যালয়ের  আত্মপ্রকাশ ঘটে।

    কালিয়াচক  দুই নং ব্লকের পঞ্চায়েত  সমিতির কৃষি কর্মাধ্যক্ষ তথা  স্কুল পরিচালন কমিটির  সভাপতি আমিনুর আলম জানান ,  ” আজ থেকে  50 বছর আগে  ১৯৬৯ সালে এই বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা হয় “। এর পর ১৯৭২ সালে অনুমোদন পায়। ১৯৭২সালে সপ্তম ও অষ্টম এবং ১৯৯৫  সালে মাধ্যমিক। ২০১২ সালে উচ্চ মাধ্যমিক  বিদ্যালয়ে রূপান্তরিত হয়। অনুষ্ঠানের শেষ দিনে  উপস্থিত ছিলেন  প্রাক্তন  মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দু নারায়ন চৌধূরী ও  উত্তর উত্তর বঙ্গ উন্নয়ন পরিষদের সদস্য প্রসঞ্জিত দাস । প্রাক্তন মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দু নারায়ন চৌধূরী জানান, ” বিদ্যান কে সবাই  পূজা  করে । শিক্ষা  না থাকলে  সমাজ  অন্ধকার । শিক্ষার আলোয়  আমরা  আলোকিত  করতে পারি । পড়াশোনা  করলে কেউ আটকে  পারবে না । আমি মেন্টর হয়েছি সদ্য । আপনারা  বিদ্যালয়ের জন্য  আসলে আমি  সাহায্য করবো।”

    উত্তর বঙ্গ  ক্রীড়া উন্নয়ন  পরিষদের  সদস্য  ও ইংরেজ বাজার পুরসভার  কাউন্সিলর  প্রসঞ্জিত  দাস  খেলার  মাঠ ও জিম তৈরির জন্য  প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ।এবং বিদ্যালয়ের যে কোন কাজের জন্য  সাহায্যর প্রতিশ্রুতি দেয়। কালিয়াচক দুই নং ব্লকে র পঞ্চায়েত সমিতির  সভাপতি  টিঙ্কু র রহমান বিশ্বাস ও  বিদ্যালয়ের বিভিন্ন  উন্নয়ন  ছারা একশ দিনের কাজে ১৫ লক্ষ্য  টাকা  পঞ্চায়েত থেকে  দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। এই বিদ্যালয়কে প্রতিষ্ঠিত করতে  সকল শিক্ষকদের অবদান  অনস্বীকার্য।

    বর্তমানে এই বিদ্যালয়ের ছাত্র ছাত্রী প্রায় ১৮০০ জন,শিক্ষক ২৭ জন। বিভন্ন সমস্যার মধ্যে ও সমস্ত  শিক্ষক  দলবদ্ধ  ভাবে  এগিয়ে  যায় ।”  বিদ্যালয়  প্রধান শিক্ষক সামসের জামান মনি  তার ভাষণে  জানান, ” এক বছর আগে থেকে  এই বিদ্যালয়ের  সুবর্ণ জয়ন্তী উৎসবের পরিকল্পনা চলছে। এলাকার  সবধরনে মানুষ  ও অভিভাবকদের  নিয়ে  একটি কমিটি  করা হয় । বহু  সমস্যা  নিয়ে  এই বিদ্যালয় এগিয়ে  চলছে । আমদের বিদ্যালয়ে  বর্তমানে ১২ জন শিক্ষকের অভাব  রয়েছে । এই পরিস্থিতিতে  সকল শিক্ষকদের  সহযোগিতায়  আমরা  এই বিদ্যালয়েকে এগিয়ে  নিয়ে  যাওয়ার  চেষ্টা  করছি ।