আন্তর্জাতিক স্তরেও এবার নিজের পরিচিতি তৈরি করতে মাঠে নামলেন ঐক্য বাংলা

নতুন গতি নিউজ ডেস্ক: প্রায় সমস্ত আন্তর্জাতিক ফুটবল প্রতিযোগিতাই শুনতে হত ইংরেজি ধারাভাষ্যে। কিন্তু এবার ‘ঐক্য বাংলা’র দৌলতে সামনের মাসে হতে চলা Euro Cup এ বাঙালি তাঁর নিজের মাতৃভাষায় ধারাভাষ্য শুনতে পারবে।

    এই প্রসঙ্গে ‘ঐক্য বাংলা’র সাধারণ সম্পাদিকা শ্রীমতী সুলগ্না দাশগুপ্ত জানালেন, “সঠিক পরিকল্পনা, বাঙালির স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ এবং আমাদের টানা চাপের জেরে সোনি কর্তৃপক্ষ বাংলা ভাষায় ধারাভাষ্য প্রদান করতে কার্যত বাধ্য হয়। ”

    সভাপতি শ্রী অভিজিৎ গুহ নিয়োগী বলেন, “বাঙালি আর ফুটবল একে অপরের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত। ষাট, সত্তর এমনকি আটের দশকের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত রেডিওতে বাঙালি ডার্বি ম্যাচের স্বাদ উপভোগ করেছে রেডিওতে। অজয় বসুদের বাংলা উচ্চারণে কার্যত মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে ফুটবল ম্যাচের প্রতিটা মুহূর্ত উপভোগ করত বাঙালি ‌। অথচ নব্বইয়ের দশক থেকেই ধীরে ধীরে বাংলা ভাষায় ধারাভাষ্য কমতে থাকে। আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা তো দূর, দেশীয় প্রতিযোগিতাতেও বাংলা ভাষায় ধারাভাষ্য শুনতে পাওয়া যেত না। দীর্ঘ দু – আড়াই দশক ধরে নিজের মাতৃভাষায় ধারাভাষ্য শুনতে না পাওয়ার ক্ষোভই এক্ষেত্রে আমাদের এই বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে উৎসাহিত করে।”

    অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ঐক্যযোদ্ধা শ্রী সৌম্য চৌধুরী জানালেন, “আমরা বিষয়টা পর্যবেক্ষণ করার পরেই সোনির অফিসে গিয়ে স্মারকলিপি প্রদান করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি। সেখানে তারা স্মারকলিপি গ্রহণ না করার ফলে আমরা সোনি কর্তৃপক্ষের নির্দিষ্ট জায়গায় নিয়মিত যোগাযোগ করে, আবেদন করে, চিঠি দিয়ে ও অন্যান্য সামাজিক মাধ্যমে চাপ বজায় রাখতে থাকি। এই সবের সংমিশ্রণেই ‘ঐক্য বাংলা’ সাফল্য অর্জন করেছে বলে আমার বিশ্বাস। ”

    কলকাতায় অবস্থিত সোনির অফিস স্মারকলিপি গ্রহণ করল না কেন তার উত্তরে ‘ঐক্য বাংলা’র সাধারণ সম্পাদিকা শ্রীমতী সুলগ্না দাশগুপ্ত জানালেন, “প্রথমেই বলে রাখি দক্ষিণ কলকাতায় অবস্থিত সোনির অফিস কিন্তু পূর্ব ভারতের হেডকোয়ার্টারও। এই ধরনের অফিস শুধুমাত্র সোনির বাংলা ভিত্তিক সম্প্রচারের দিকটা দেখে, এছাড়া কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার বা কোনো স্মারকলিপি প্রদান করবার ক্ষমতা তাঁদের নেই।”

    সুলগ্না দেবী আরো জানান, “সোনির কলকাতা অফিসের চিত্র পরিষ্কার বলে দিচ্ছে বাঙালি শুধুমাত্র গ্রাহক হয়ে থাকছে এবং বাংলা হয়ে যাচ্ছে উপনিবেশ।সে কি দেখবে, কি দেখবে না,সেই বিষয়ে অভিযোগ জানাবার জায়গাটুকু ও প্রায় নেই বললেই চলে, যা খুবই বিপজ্জনক দিকের প্রতি আমাদের ইঙ্গিত দিচ্ছে।”

    অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ও গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ঐক্যযোদ্ধা শ্রী রঞ্জন কুমার সাহু জানান, “আমরা সবাই ঐক্য বাংলার সদস্য- ঐক্যযোদ্ধা। তবে হ্যাঁ, আমি নিজেও আগে ফুটবল খেলতাম, কাজেই সংগঠনের এই সাফল্যে আমি বেশ খুশি।”

    ঐক্য বাংলার অন্যতম তরুণ সদস্য দেবায়ন সিংহ অবশ্য জানালেন, বাংলা ভাষায় ধারাভাষ্য প্রদানের বিষয়ে সর্বপ্রথম আলোকপাত করেছিলেন ঐক্যযোদ্ধা শ্রী যাজ্ঞবল্ক্য সিংহ।

    ঐক্যযোদ্ধা যাজ্ঞবল্ক্য সিংহ জানান, “আমাদের সংগঠনের অনেকেই ক্রীড়া ভালোবাসে। ফলে ক্রীড়া জগতে বাংলা-বাংলার ভূমি সন্তানদের বিষয়ে আমরা আগামী দিনেও কাজ করতে বদ্ধপরিকর।”

    অর্থাৎ বোঝাই যাচ্ছে প্রথাগত ছক ভেঙেও এবার কার্যত আন্তর্জাতিক স্তরেও নিজের পরিচিতি তৈরি করতে বেশ কোমর বেঁধে নামল এক বছর দু মাস বয়সী বাংলার প্রথম মুক্তপন্থী বাঙালি জাতীয়তাবাদী সংগঠনটি।