স্বপ্ন-ভঙ্গ শোকে পাথর, তবু যুদ্ধ নয়, মীমাংসা হোক অন্য পথে: অমিতা, গুর মেহরদের

শরিফুল ইসলাম, নতুন গতি ডেস্ক:

    রক্তের রং তো লাল, তবে মৃত্যুর রং কি ?
    সে নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন মত বা ভাবনা রাখতে পারেন দার্শনিক, কাব্য রসিয়ে বা আঁতেলরা, তবে এই মুহূর্তে জম্মু-কাশ্মীরের পুলওয়ামাই জঙ্গি হানায় নিহত সুদীপের মা, সুবল সাঁতরার স্ত্রী কিংবা প্রদীপ সিং যাদবের দশ বছরের কন্যার কাছে শোক যন্ত্রণার তীব্রতা একই।
    সেদিনের জঙ্গী হানায় নিহত ভারতীয় জোয়ান নাসির আহমেদ-অমিত কুমারদের লম্বা তালিকায় এঁরাও আছে যে।

    এতবড় একটা কাণ্ডের পর গোটা দেশ স্বাভাবিক ভাবেই উত্তাল। সেদিনের রক্তে ভেঁজা উপত্যকার মাটি ভালো করে শুকিয়ে গেছে কি না, জানা নেই। তবে পাল্টা আক্রমণে প্রতিপক্ষের মাটি রক্তাক্ত করতে দেশের মানুষ আজ প্রতিশোধের আগুনে সেঁকে উদ্দীপ্ত করছে নিজেদের। আর করবে নাই বা কেন, মানুষ , মেশিন তো নয়।

    গতকাল তেহট্টে দেশের বাড়িতে কফিন বন্দি হয়ে ফিরে আসা সুদীপের দেহ চিতার আগুনে তখনো হয়তো পুরোপুরি পোড়েনি, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী রাজনাথ সিংহের পৌরহিত‍্যে সংসদে সর্বদলীয় বৈঠকে সি আর পি এফ কনভয় হামলার মু’তোড় জবাব দেওয়ার প্রস্তাব বিরোধীদের না পছন্দে বিরত হয়ে গেল।
    কিন্তু , কেন ? রক্ত’র বদলে রক্তই তো আমরা চাই।
    একটা খুনের বদলা দশ টা হওয়া চাই-ই-ই।
    না, কে বলছে আমরা সবাই খুনের বদলা খুন চাই ?
    বাউড়িয়ার চক কাশি রাজবংশী পাড়ার বাবুল সাঁতরার স্ত্রী এমন কথা তো ভাবে না। পুলওয়ামাই জঙ্গী হামলায় সদ্য নিহত বাবুল সাঁতরার স্ত্রী মিতা সাঁতরার কাছে যুদ্ধ সমস্যা সমাধানের এক মাত্র পথ হতে পারে না। সরকার অন্য পথে সমাধান করুক।

    হিংসার বদলে হিংসা নয়
    ঠিক যেমন কার্গিল যুদ্ধে নিহত বাবার মৃত্যু শোকে কাতর তাঁর কন্যা গুরমেহরের দাবি ছিল যুদ্ধ সকলের শত্রু।
    জম্মু-কাশ্মীর পুলওয়ামার ঘটনা নিয়ে তাঁর এখনকার প্রতিক্রিয়াও তাৎপর্যপূর্ণ। “সাম্প্রতিক পরিস্থির পরিপ্রেক্ষিতে দেশের মানুষের মধ্যে উত্তাপের পরিবেশ তৈরির একটা প্রক্রিয়া চলবে। এই মুহূতে দেশের মানুষের সতর্ক থাকা প্রয়োজন।” এবং আরো জানান , ‘তিনি আন্তরিক ভাবে হামলাবাজ চক্রবন্ধের পক্ষপাতী।’
    ছোট্ট ছেলেকে সামরিক পোশাক পরিয়ে কোলে নিয়ে অমিতার দাবি, “অন্যপথে হউক মীমাংসা।”
    একটু থেমে মাথা উঁচু করে বলেন, “প্রয়োজনে সীমান্ত রক্ষায় স্বামীর মতন দাঁড়াতে তিনিও প্রস্তুত।
    কারণ ওই দায়িত্বটা কাউকেই তো নিতেই হবে।”

    সত্যিই তো , যাঁরা দেশ রক্ষা নীতি তৈরির মতন গুরুত্বপূর্ণ কাজে দিন রাত এক করছেন, তাঁদের পক্ষে সীমান্ত পাহারা দেওয়া তো সম্ভব নয়।