|
---|
স্টাফ রিপোর্টার : পশ্চিম বর্ধমানের আসানসোল লোকসভার জামুড়িয়া বিধানসভার খনি-শিল্পাঞ্চলের পান্ডবেশ্বর থানার প্রাচীন গ্রাম আলীনগরে লক্ষ্মী পূজা উপলক্ষে দু’রাত্রিব্যাপী কীর্তন গানের আয়োজন করে ঘোষ পরিবার। প্রায় ১৫০ বছর ধরে চলে আসছে এই প্রথা। লক্ষ্মী মণ্ডপের সম্মুখে এই কীর্তন গানে জনজোয়ার দেখা গেল এবছরও। শরতের নাতিশীতোষ্ণ আবহাওয়ায় কীর্তন গানের আসর গ্রামের কাছে আজও লোভনীয়। শুধুমাত্র ধর্ম, পূর্ণার্জন নয় মানসিক বিশ্রাম বিনোদনের অনন্য উপায়। চাষ হয়ে যাওয়ায় কাজের ক্ষেত্র কমে যাওয়ার মানুষের মন চলে যায় একটু ধর্ম- কর্মের দিকে। সংকীর্তনের সুর ভেসে যায় নিজের হাতে বোনা সবুজ প্রান্তর ছাড়িয়ে। লক্ষ্মীর আরাধনায় লক্ষ্মীর মাঠে ভাণ্ডার পূর্ণ করার প্রত্যাশা জাগে মনে। সৃষ্টির মহা আনন্দে উৎসব মুখর হয়ে ওঠে গ্রামের অনাবিল আনন্দের পরিবেশ।
শ্রীকৃষ্ণ – রাধার দৈবপ্রেমের সুরলোলিত ক্যাবিক বর্ণনায় মানবপ্রেমের আবেশ ছড়িয়ে পড়ে। কীর্তনীয়া মিঠু মণ্ডলের সুরেলা কন্ঠে মানুষ মোহিত হয়ে যান। তোমরা কুঞ্জ সাজানো গো -/ আজ আমার প্রাণনাথ আসিতে পারে। আবেগ ও ভক্তির নিপুন ব্যবহার দেখা যায় তাঁর গলায়। এলাকার মানুষ বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের অনেক কীর্তন গান আছে। সেখানে কবি যেমন বলেছেন, সখি সাজায়ে রাখ লো পুষ্প বাসর তেমনি করিয়া তোরা / কী জানি কখন আসিবে ফিরিয়া গোপীনীরও মন চোরা / সখি সাজায়ে রাখ লো – । কালো মাটির রুক্ষ দেশে নামগান-কীর্তনের মিস্টি সুরের সমঝদারের অভাব নেই। বাঁশির সুর ভেসে বেড়ায় মাঠে ঘাটে।
স্থানীয় শিক্ষক বাবলু মণ্ডল জানালেন, ঐতিহ্যবাহী এই সংকীর্তনের সঙ্গে এলাকার মানুষের আবেগ জড়িয়ে আছে। কমবেশি ১৫০ বছরের পুরনো এই অনুষ্ঠান সামাজিক উৎসবে পরিণত হয়েছে।