প্রয়াগরাজের শ্রীঙ্গভেরপুর ধামে প্রয়াগরাজ ছাড়াও প্রতাপগড়, সুলতানপুরের বাসিন্দাদের মৃতদেহ সৎকারের জন্য আনা হয়।

নতুন গতি ওয়েব ডেস্ক: প্রতিদিনই যেন রেকর্ড ভাঙছে। সারা দেশে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ। প্রায় রোজই নতুন করে সংক্রমিত হচ্ছেন তিন লক্ষাধিক মানুষ। সরকারি হিসেবে, মৃত্যুও হচ্ছে অন্তত চার হাজার জনের। যদিও বিশেষজ্ঞদের ধারনা, মৃত্যুর এই সংখ্যা হিমশৈলের চূড়া মাত্র। আদতে মৃত্যু হচ্ছে বহুগুণ বেশি, এমনই মত বিশেষজ্ঞদের একাংশের। সংক্রমণের হার কবে কমবে, তা নিয়ে কোনও স্পষ্ট ধারণা দিতে পারছেন না বিশেষজ্ঞরা। এহেন পরিস্থিতিতে নতুন করে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে কিছু দায়িত্বজ্ঞানহীন মানুষের জন্য। গঙ্গার জলে ভাসিয়ে দেওয়া হচ্ছে করোনা আক্রান্তদের মৃতদেহ। কোথাও আবার গঙ্গার চরেই পুঁতে দেওয়া হচ্ছে দেহ। আর এই ঘটনায় বারবার উঠে আসছে বিজেপি শাসিত উত্তরপ্রদেশের নাম।

    এর আগে যোগী আদিত্যনাথের রাজ্যের উন্নাও, কনৌজ, কানপুর, রায়বরেলির মতো জায়গায় গঙ্গার চর থেকে উদ্ধার হয়েছিল অগুন্তি মৃতদেহ। এবার একই ঘটনা ঘটল সঙ্গমনগরী প্রয়াগরাজেও। গঙ্গার ধারে বালির চর থেকে উদ্ধার হল সার-সার অর্ধদগ্ধ দেহ। প্রতিটি দেহই করোনায় আক্রান্তদের বলে ধারনা স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের।

    জানা গিয়েছে, প্রয়াগরাজের শ্রীঙ্গভেরপুর ধামে প্রয়াগরাজ ছাড়াও প্রতাপগড়, সুলতানপুরের বাসিন্দাদের মৃতদেহ সৎকারের জন্য আনা হয়। গোটা দেশে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়ার আগে ওই ধামে ৫০ থেকে ৬০ জনের দেহ সৎকার করা হত। কিন্তু এপ্রিল মাসের পর থেকেই বদলে যেতে থাকে চিত্রটা। মৃতদেহের দৈনিক সংখ্যা ১০০ পেরিয়ে যেতে থাকে। কখনও সখনও তা ১৫০ মতো হয়ে যাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে শ্মশান কর্তৃপক্ষ দাবি করেছে, এই বিপুল সংখ্যক দেহ দাহ করার জন্য সৎকারের কাঠ মিলছে না। আবার, মৃতদের পরিবারের একাংশের অভিযোগ, শ্মশানে দেহ দাহ করতে আকাশছোঁয়া টাকা দাবি করা হচ্ছে। ফলে অনেকেই সেই টাকা দিতে পারছেন না। এর কিছুদিনের মধ্যেই প্রয়াগরাজে গঙ্গার চর থেকে উদ্ধার হল বহু মৃতদেহ। কোনও দেহ আবার অর্ধদগ্ধ অবস্থায় ফেলে রাখা হয়েছিল বালির উপরে।

    এর আগে বিহারের বক্সার ও রাউতপুরের গঙ্গার চরের বালিতে লাইন দিয়ে পোঁতা হয়েছিল মৃতদেহ। মৃতদেহ খুবলে খেতে দেখা গিয়েছিল শিয়াল, কুকুরদের। জলের তোড়়ে বেশ কয়েকটি মৃতদেহের অংশাবশেষও বেরিয়ে পড়ে। স্থানীয়দের অনেকেই জানিয়েছিলেন, গত এক মাসে রোজ গড়ে ১০-১২টি করে মৃতদেহ ওই বালির চরে এনে পোঁতা হয়েছে। ওই এলাকার শ্মশানে রোজ দুই থেকে তিনটি মৃতদেহ দাহ করার মতো পরিকাঠামো রয়েছে। কেউ কেউ বলছেন, ওই এলাকায় অনেকেরই এখন দাহকার্যের জন্য কাঠ কেনার মতো সামর্থ নেই। তাই প্রিয়জনদের দেহ দাহ না করে মাটিতে পুঁতেছে তাঁরা।