|
---|
লুতুব আলি, চুরুলিয়া : প্রমিলাদেবীর প্রয়াণ দিবসে কবিতীর্থ চুরুলিয়ায় অনুষ্ঠিত হল নারী ও পুরুষ সম্মাননা। ৩০ জুন কাজী নজরুল ইসলামের পত্নী প্রমিলাদেবীর প্রয়াণ দিবস। এই উপলক্ষে চুরুলিয়ায় অনুষ্ঠিত হল প্রমিলা দেবীর সমাধিতে পুষ্পার্ঘ নিবেদন ও বর্ণাঢ্য সম্মাননা। উদ্যোক্তা ছিল দোলনচাঁপা নজরুল ফাউন্ডেশন ও আসানসোলের স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা আসানসোল মেরিনার্স। প্রমিলাদেবীর সমাধিতে পুষ্পার্ঘ নিবেদন করেন কাজী নজরুল ইসলামের ভ্রাতুষ্পুত্র ও কবির নাতনি সোনালী কাজী সহ অসংখ্য নজরুল প্রেমী মানুষ। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নজরুল প্রেমিক মানুষেরা এদিন চুরুলিয়ায় হাজির হয়ে প্রমিলাদেবীর সমাধির সামনে হাজির হয়ে তাঁর আত্মার প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। কাজি রেজাউল করিম বলেন, প্রমিলা দেবী ধর্মান্তরিত না হওয়ায় তিনি যখন ১৯৬২ সালের ৩০ জুন মারা যান তখন এক ভয়াবহ সংকট তৈরি হয় অন্তেষ্টি ক্রিয়া সম্পন্ন করার জন্য। মুজাফফর আহমেদদের সহযোগিতায় কলকাতা থেকে প্রমীলা দেবীর মরদেহ চুরুলিয়া এনে সমাধিস্থ করা হয়। দোলনচাঁপা নজরুল ফাউন্ডেশন এর কর্ণধার সোনালি কাজী বলেন, কবি পত্নী একজন মহীয়সী নারী। ধর্মের ভেদাভেদকে উপেক্ষা করে তিনি স্বাধীনতা আন্দোলন উত্তর যুগে ১৯২৪ সালে কাজী নজরুল ইসলামের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। সেই সময় গোঁড়া ব্রাম্ভন সমাজ থেকে ও প্রমিলাদেবীর পরিবারের পক্ষ থেকে নজরুলের সঙ্গে বিবাহ মেনে নিতে অস্বীকার করে। চুরুলিয়ার নজরুল একাডেমীর শহর গ্রন্থাগারের এদিন এই অনুষ্ঠান উপলক্ষে নারী ও পুরুষদের সম্মাননা দেওয়া হয়। উল্লেখ্য, বীরভূমের সিউড়ির বাসিন্দা চন্দ্রাবলী ঘোষাল কে এদিন বিশেষভাবে সম্মানিত করা হয়। চন্দ্রাবলী ঘোষাল সম্মানিত হওয়ার পর বলেন এই পুরস্কার তাঁর কাছে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ পুরস্কারের সমান বলে তিনি মনে করেন। এদিন ১৩৫ জন গুণী মানুষদের সম্মাননা দেওয়া হয়। আসানসোল মেরিনার্সের কর্ণধার শৈলেন চক্রবর্তী সকলকে অভিবাদন জ্ঞাপন করেন। এদিন যাঁদের সম্মাননা দেয়া হয় তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যরা হলেন, প্রণতি বন্দ্যোপাধ্যায়, সত্য কাম বাগচী, শৈলজানন্দ মুখোপাধ্যায়ের নাতনি ইতুশ্রী মহান্ত, সেলিম দুরানি, সুতপা চৌধুরী, দোলনচাঁপা নজরুল ফাউন্ডেশন হুগলি জেলার ইউনিটের কর্ণধার সুতপা রায় সহ ড. তৃপ্তি কুন্ডু, আবু মনিরুদ্দীন চৌধুরী, নন্দিনী লাহা, দেবিকা মুখোপাধ্যায়, ছবি বসু পাল, সীমা মুখার্জী, কৃষ্ণা মুখার্জী, কাকলি দাস গুপ্ত চক্রবর্তী, জ্যোতির্ময় রায় প্রমুখ। এদিন সম্মাননা জ্ঞাপন অনুষ্ঠানে শেষে এলাকার কৃতি ছাত্র-ছাত্রীদের সংবর্ধিত করা হয় এবং একটি মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়। চন্দ্রাবলী ঘোষালের সাংস্কৃতিক সংস্থা টুলটুল আহমেদ সংহতি, অনুভবে টুলটুল গুরুকুল পরম্পরা নৃত্যাঙ্গন বিদ্যানিকেতনের ছাত্র-ছাত্রীরা একটি আকর্ষণীয় নৃত্যানুষ্ঠান পরিবেশন করেন।