নিজের স্কুলের বাগদেবীর পুজোর প্রতিমা গড়ছে রাহুল পড়াশোনার পাশাপাশি মৃৎ শিল্পকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চায় সে

ময়নাগুড়ি, ৩১ জানুয়ারি: রথেরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের বাগদেবীর পূজার প্রতিমা গড়ে চলেছে সেই স্কুলেরই প্রাক্তন ছাত্র রাহুল রায়। বর্তমানে সে জলপাইগুড়ি আনন্দ চন্দ্র কলেজে শিক্ষা বিজ্ঞান সাম্মানিক নিয়ে দ্বিতীয় বর্ষে পড়াশোনা করছে।

    ময়নাগুড়ি ব্লকের চূড়াভান্ডার গ্রাম পঞ্চায়েতের রথেরহাট গ্রামের এই রাহুল ছোট বেলা থেকেই বাবার মৃৎ শিল্পের কাজের প্রতি টান ছিল। আর সেই থেকেই মৃৎ শিল্পের কাজের প্রতি তার ভালোবাসা জন্মে যায়। রাহুলের বয়স যখন ৭বছর , তখন থেকেই বাবার সাথে কাজে হাত লাগাতো। কিন্তূ সেই কাজের প্রতি টান থাকলেও পড়াশোনাও চালিয়ে যেত রাহুল।

    জানা গেছে, রাহুল বরাবরই রথেরহাট স্কুলের ভালো ছাত্র ছাত্রীদের তালিকায় স্থান পেতো। সে মাধ্যমিকে ৬২ শতাংশ এবং উচ্চ মাধ্যমিকে ৮৮ শতাংশ নম্বর অর্জন করেছে। এরপর সে জলপাইগুড়ি আনন্দ চন্দ্র কলেজে শিক্ষা বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করছে। বর্তমানে সে সেই কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। স্কুল জীবন শেষ করলেও এখনো রাহুলের মনে স্কুলের প্রতি ভালোবাসার টান রয়ে গেছে । আর তাইতো বিগত চার বছর ধরে স্কুলের সরস্বতী পূজার প্রতিমা গড়ে চলেছে রাহুল।একদিকে স্কুলের প্রতি ভালোবাসা অন্যদিকে মৃৎ শিল্পের প্রতি টান যার জেরেই প্রতিমা তৈরির কাজ করে চলেছে সে। পড়াশোনার পাশাপাশি এই শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা করছে রাহুল। তাই রাহুল সাহায্যের আর্জি জানিয়েছে প্রশাসনের কাছে। জানা গেছে, রাহুলের পরিবারে তার বাবা, মা এবং একটি বোন রয়েছে। পরিবারের মূল আয় এই মৃৎ শিল্প। তাই রাহুল পড়াশোনার পাশাপাশি এই শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে প্রতিমা তৈরির কাজ করে চলেছে।

    তবে প্রতিমা তৈরির কাজ করলেও নিজের স্কুলের প্রতিমা তৈরি করতে পেরে বেশ আনন্দিত রাহুল। রাহুল জানায়, “স্কুলের সরস্বতী পূজার প্রতিমা তৈরি করতে আমার খুব ভালো লাগে। আমার হাতে তৈরি প্রতিমা স্কুলের শিক্ষক, শিক্ষিকা সহ সকলে দেখেন তাই খুবই ভালো লাগে। আমি চাই আমি যাতে প্রতি বছর আমার নিজের স্কুলের জন্য প্রতিমা তৈরি করতে পারি।” রথেরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক জ্যোতিরাম রায় বলেন, “রাহুল স্কুলে খুব ভালো ছাত্র ছিল। সে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় খুব ভালো ফল করেছিল। কয়েক বছর ধরে আমাদের স্কুলের সরস্বতী পুজোর প্রতিমা গড়ছে। মৃৎ শিল্পেও সে নিপুণ ভাবে কাজ করে।”