সিয়াম সাধনার মাস মাহে রমজান

বাবলু হাসান লস্কর : রমজান হলো ইসলামী নববর্ষের নবম মাস, যে মাসে বিশ্ব মুসলিম রোজা পালন করে থাকেন। রমজান মাস চাঁদ দেখার উপর নির্ভর করে ২৯ অথবা ৩০ দিনে হয়ে থাকে যা নির্ভরযোগ্য হাদিস দ্বারা প্রমাণিত। ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা শুভহে সাদেক থেকে শ্যাম পর্যন্ত অর্থাৎ ভোরের সূর্ক্ষ কাল থেকে শুরু করে সূর্যাস্ত পর্যন্ত সকল প্রকার পানাহার, পাপাচার, কামাচার, তার সাথে যাবতীয় ভোগবিলাস থেকে বিরত থাকার নাম রোজা। অনাহার উপবাসের মাধ্যমে সিয়াম বা রোজা পালন করেন। ইসলামী বিধান অনুসারে প্রতিটি প্রাপ্তবয়স্ক মুসলমানদের জন্য রমজান মাসে রোজা ফরজ করা হয়েছে শাস্ত্রমতে।
সামনে খাদ্যসামগ্রী থাকলেও নির্দিষ্ট সময় ছাড়া তা পানাহার কিম্বা খাওয়া যাবেনা। রমজানে আল কোরআন অবতীর্ণ হয়েছে আর রমজান মাসে রোজা মানুষকে পাপ থেকে মুক্তি দেয় কুকাজ থেকে আত্মাকে ঈমানের বিধান অনুসারে চলার প্রেরণা দেয়। ঈশ্বরের নৈকট্যের জন্য খাবার সামনে থাকলেও তা খাওয়া যায়না ঈশ্বরের ভয়ে। ভোরে সেহেরি খাওয়ার পর সারাদিন পানাহার থেকে বিরত থাকাকে রোজা বলে পূর্ণ বয়স্ক ব্যক্তিদের রোজা ফরজ করা হয়েছে। তবে ব্যতিক্রম হিসেবে অসুস্থ রোগীদের ক্ষেত্রে তা নিষেধ করা হয়েছে। সুস্থ-সবল ব্যাক্তিদের জন্য যেমন রোজা ফরজ করা হয়েছে অপরদিকে অসুস্থ ব্যক্তিদের জন্য রোজা না করার বিধান রয়েছে।

    ইসলামের পরিভাষায় এই মাসে দরিদ্র ও অসহায় ব্যাক্তিদের সাহায্য করলে অন্য মাস অপেক্ষা ৭০ গুণ বেশি সওয়াব পাওয়া যায়। হাদীসে বর্ণিত আছে এই সময় যারা অপরাধীকে ক্ষমা করেন ঈশ্বর তাদেরকে ক্ষমা করেন। সাথে সাথে ঈশ্বরের আরাধনা ও উপাসনা- ঈশ্বরের নৈকট্য লাভ করা যায়। আর তারই প্রধান লক্ষণ সংযম- এই সংযমের মাধ্যমে ঈশ্বরের ধর্মপ্রাণ। মুসলমানেরা বিশেষ করে পানাহার থেকে বিরত থেকে একধ্যানে-একমনে ঈশ্বরের উপাসনার মাধ্যম দিয়ে দিন অতিবাহিত করা। বিশেষ করে ধর্মীয় গ্রন্থ পাঠ করে ও অপরের মঙ্গল কামনায় নিজেদেরকে উৎসর্গ করা এই মহান প্রয়াস। এই মাসে অসহায় ব্যাক্তিদের সহায়তা প্রদান করা অভুক্ত মানুষের অন্ন দেওয়া থেকে শুরু করে অসামাজিক কাজকর্ম থেকে বিরত থাকাই হলো রোজার মাহাত্ম্য যা ইসলামের শাস্ত্রমতে রোজাদারদের এমনই ইসলাম ধর্মাম্বলীদের কাছে যে প্রধান পাঁচটি কালেমা নামাজ রোজা হজ্ব যাকাত তার তৃতীয় স্তম্ভ রোজা। বিশেষ করে এই রোজা মাসের চাঁদ দেখে রোজা শুরু হয় আবার চাঁদ দেখে রোজা শেষ হয় ২৯ কিম্বা ৩০ দিনের রোজার পরেই আসে খুশির উৎসব ঈদুল ফিতর। ওই দিনে ধর্মপ্রাণ মানুষেরা ধনী-দরিদ্র এক সাথে ঈদের নামাজ পড়তে যান নতুন বস্ত্র পরিধান ও সুগন্ধি দ্রব্য ব্যবহার করে। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতে ভারতবর্ষের মুসলিমরা নামাজ পড়তে ঈদগাহে যায়। ইসলামের যে পাঁচটি প্রধান স্তম্ভ তার মধ্যে কালেমা, নামাজ, রোজা, হজ, জাকাত। রোজা হলো তার তৃতীয় স্তম্ভ। বিশেষ করে এই সময়ে ধর্মপ্রাণ মুসলমানেরা ঈশ্বরের নৈকট্য লাভের জন্য সারাদিন তারা উপবাস থাকেন এবং যে মুহূর্তে মাগরিবের আযান দেওয়ার সাথে সাথে তারা পানাহার করেন। সারাদিন রোজা রাখার উদ্দেশ্য হলো আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের- পাপ কাজ থেকে বিরত থাকা এবং কামনা-বাসনা নিয়ন্ত্রণের প্রশিক্ষণ এর মাধ্যমে তাকওয়া বৃদ্ধি করা। হে ঈমানদার তোমাদের জন্য রোযা ফরয করা হয়েছে যেমন করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তী উম্মতের উপর। যাতে তোমরা তাকওয়া অর্জন করতে পার।