সিলেবাসের উপর নয় পড়ুয়াদের জ্ঞানের পরিধি বাড়াতে দায়িত্ত নিতে শিক্ষকদের বললেন : আই এ এস নুরুল হক।

সংবাদদাতা: শনিবার নাবাবিয়া মিশনে সিলেবাসের উপর নির্ভর নয় পড়ুয়াদের জ্ঞানের পরিধি বাড়াতে অতিরিক্ত দায়িত্ত নিন। শিক্ষকদের উদ্দেশ্য বললেন অবসরপ্রাপ্ত আইএএস নুরুল হক। শনিবার হুগলী জেলার খানাকুল এর নবাবিয়া মিশনে জিডি স্টাডি সার্কেলের অন্তর্ভুক্ত দক্ষিণবঙ্গ জেলার মিশন গুলির বিজ্ঞান বিষয়ের শিক্ষকদের নিয়ে এক সেমিনারের আয়োজন হয়। যেখানে ছাত্র-ছাত্রীদের পড়ানোর ধরন থেকে শিক্ষক ও পড়ুয়াদের স্বাস্থ্য সম্পর্কে একাধিক পরামর্শ দেন অবসরপ্রাপ্ত আইএএস নুরুল হক।
বিশিষ্ট শিল্পপতি তাতা পতাকা গোষ্ঠীর কর্ণধার মোস্তাক হোসেন রাজ্যের সংখ্যালঘু সম্প্রদায় কে শিক্ষায় এগিয়ে নিয়ে যেতে উদ্যোগী হয়ে ওঠেন । জিডি স্টাডি সার্কেলের তত্ত্বাবধানে রাজ্যে বিভিন্ন জেলায় একাধিক আবাসিক মিশন কে নানাভাবে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন । তার অনুপ্রেরণায় একাধিক মিশন গড়ে ওঠে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে । খানাকুলের নবাবিয়া মিশন তার মধ্যে অন্যতম । যেখানে প্রতিবছর মাধ্যমিক উচ্চমাধ্যমিক এমনকি জয়ন্ত নজর করা ফলাফল লক্ষ্য করা যাচ্ছে । একই রকম ভাবে অন্যান্য মিশন গুলি তো ধারাবাহিক সাফল্যের নজির করতে উদ্যোগী জিডি স্টাডি সার্কেল । এর জন্য জিডি স্টাডি সার্কেলে অন্যতম কর্মকর্তা নুরুল হক সাহেব মাঝেমধ্যেই একাধিক মিশনে পরিদর্শন করেন । নিজে ক্লাস ও নেন । ভুলত্রুটি থাকলে শিক্ষকদের ধরিয়ে দেন । একইসঙ্গে প্রতিবছর শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দেন । এদিন অংক,সায়ন, পদার্থবিদ্যা এবং জীবন বিজ্ঞান এই বিষয়গুলি ছাত্র-ছাত্রীদের সহজ উপায়ে কিভাবে পড়ানো উচিত সেই সম্পর্কে শিক্ষকদের উদ্দেশ্যে একগুচ্ছ পরামর্শ তুলে দেন। নুরুল হক সাহেব প্রশাসনিক কর্তা হওয়ার আগে বেশ কিছুদিন অধ্যাপনা করেছিলেন। প্রথম জীবনের সেই অভিজ্ঞতা ও এদিন শিক্ষকদের কাছে শেয়ার করেন। তার কথায় পড়াশোনায় ছাত্র ছাত্রীদের ওপর মানসিক চাপ না না দিয়েও সহজেই ছাত্র ছাত্রীদের জ্ঞানের পরিধি বাড়ানো যায়। তা করতে হলে সিলেবাস এর দিকে তাকালে চলবে না। কার কথায় যারা সিলেবাস তৈরি করেন, তা ছাত্র-ছাত্রীদের কথা ভাবেন না। উদাহরণস্বরূপ তিনি বলেন উচ্চ মাধ্যমিকে পদার্থবিদ্যায় ভেক্টর সিলেবাস এর প্রথম দিকে রয়েছে। আবার অংকে সেই ফেক্টর সিলেবাস এর শেষের দিকে। কিন্তু এই দুটি বিষয় যদি সিলেবাসের প্রথম দিকে রাখা হতো তাহলে ছাত্র-ছাত্রীদের অনেক সুবিধা হত। সেই কারণে শিক্ষকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, নতুন শিক্ষা বর্ষের ক্লাস শুরু হওয়ার আগে বিজ্ঞান বিষয়ে সমস্ত শিক্ষক একসঙ্গে বসে পড়ানোর ধরন ঠিক করে নেয়া উচিত। যাতে করে ছাত্র-ছাত্রীদের উপর মানসিক চাপ না পারে।
উল্লেখ্য মিশন গুলি আবাসিক হওয়ায় ছাত্র ছাত্রীদের সঙ্গে অনেক শিক্ষক শিক্ষিকা কেউ থাকতে হয়। পড়াশোনায় ছাত্র ছাত্রীদের মধ্যে একঘেয়েমি মনোভাব আসলে, সিলেবাসের বাইরে এমন কোন গল্প তুলে ধরতে হবে। যা পড়ুয়াদের জ্ঞানের পরিধি বাড়াতে সাহায্য করবে। একইসঙ্গে শিক্ষকদের উদ্দেশ্যে নুরুল সাহেব বলেন, পড়ানোর সময় বই বন্ধ রাখতে হবে, ছাত্র-ছাত্রীদের সামনে থেকেও বই সরিয়ে দিতে হবে। এতে ক্লাসে প্রতি পড়ুয়াদের মনোযোগ বাড়বে। এইসব পদ্ধতি মেনে চললে শিক্ষকদের অনেক পরিশ্রম করতে হবে এটাই স্বাভাবিক। তার জন্য শারীরিকভাবে সুস্থ থাকা ও জরুরি। সেই কারণে স্বাস্থ্যসম্মত একাধিক পরামর্শ দিন শেয়ার করলেন অবসরপ্রাপ্ত আইএএস। কর্মজীবনে নুরুল সাহেব বিভিন্ন ধরনের জটিল রোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন। পরবর্তীকালে স্বাস্থ্যসম্মত একাধিক সচেতনতা অবলম্বন করায়, তিনি এখন সম্পূর্ণ সুস্থ। তার মতে সুস্থ থাকতে হলে এলাপতি ওষুধ কে এড়িয়ে চলতে হবে। সেই কারণে দৈনন্দিন খাওয়া দাওয়া এবং শরীর চর্চার ওপর জোর দিতে বলেন জিডি স্টাডি সার্কেলের অন্যতম কর্তা। শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ সম্পর্কে নব মিশনের সম্পাদক আকবর বলেন, প্রখ্যাত শিল্পপতি তথা জিডি স্টাডি সার্কেল এর কর্ণধার মোস্তাক হোসেন এর অনুপ্রেরণায় রাজ্যে যে সমস্ত আবাসিক মিশন পরিচালিত হচ্ছে, সেই সমস্ত মিশনের শিক্ষকদের নিয়ে প্রতিবছর এই ধরনের কর্মশালার আয়োজন করা হয়। এদিন দক্ষিন বঙ্গের 12 টি উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের মিশনের শিক্ষকদের নিয়ে এই কর্মশালার আয়োজন করা হয়েছিল। নুরুল সাহেবের এই পরামর্শ শিক্ষক শিক্ষিকাদের জীবনে অনেক মূল্যবান পরামর্শ হয়ে থাকবে। বিভিন্ন জেলা থেকে আসা মিশন গুলির শিক্ষকরাও নুরুল সাহেবের পরামর্শে অনুপ্রাণিত।