থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার সহযোগিতায় কে.টি.ও

মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ, নতুন গতি,কালনা:

    থ্যালাসেমিয়া রোগীদের সাহায্যার্থে পূর্ব বর্ধমানের কালনায় ‘কালনা থ্যালাসেমিয়া অর্গানাইজেশন'(কে.টি.ও)-এর ভোলেনটিয়ারদের ট্রেনের উপর অভিনব কায়দায় টাকা আদায়।ট্রেনের কামরায় ৪ থেকে ৫ জন করে স্বেচ্ছাসেবি উঠে অল্প সময়ের মধ্যে থ্যালাসেমিয়া রোগ সম্পর্কে বলে এবং ১০ টাকার এক কূপন যাত্রীদের হাতে তুলে দেয়।আশ্চর্যের বিষয় এই যে বেশির ভাগ যাত্রীই এই অভিনব টাকা আদায়ের কৌশলকে সাধুবাদ জানায় এবং নির্দ্বিধায় ১০ টাকা সাহায্যার্থে দেয়।

    নতুন গতির প্রতিনিধির কাছে ট্রেনের উপর স্বেচ্ছাসেবি মৌসুমী থ্যালাসেমিয়া সম্পর্কে জানতে চাইলে, তিনি বলেন-“থ্যালাসেমিয়া একটি বংশগত মারাত্মক রোগ।প্রাথমিক পর্যায়ে থ্যালাসেমিয়া হল রক্তাল্পতা জনিত রোগ।সেই কারনে থ্যালাসেমিয়া রোগীরা প্রতি মাসে এক থেকে দুই ব্যাগ রক্ত গ্রহণ করে বেঁচে থাকে। যদি সঠিক সময়ে চিকিৎসা করা না হয় বা রক্ত না নেয়, তবে আক্রান্ত রোগী রক্ত শূন্যতায় মারা যেতে পারে। থ্যালাসেমিয়ার বেশ কিছু প্রকারভেদ আছে।মানুষের রক্তের যে লোহিত কণিকা, এর প্রধান উপাদান হলো হিমোগ্লোবিন। সেটার চেন আছে। আলফা চেন, বিটা চেন।

    এই চেনের জিনের মিউটেশনের ওপর নির্ভর করে সে রোগীটি আলফা থেলাসেমিয়া না কি বিটা থেলাসেমিয়ায় আক্রান্ত, না কি অন্য কোনো অস্বাভাবিক কিছু দিয়ে আক্রান্ত।মা-বাবার মধ্যে যেটি প্রবশে করে একে বাহক বলে। বাহকের সাধারণত কোনো লক্ষণ ধরা পড়ে না। দেখা যায়, সারা জীবনে তার কোনো রোগের উপসর্গ ধরা পড়ে না। সে স্বাভাবিক জীবন যাপন করছে।

    তবে মা-বাবা উভয়ের মধ্য দিয়ে যদি জিনটা আসে, তাহলে আমরা বলি এটি ডিজিজ বা মেজর। এদের ক্ষেত্রে দেখা যায় রোগের উপসর্গগুলো আগে থেকেই প্রকাশ পায়। এক থেকে দু্ই বছরের বাচ্চার মধ্যেই এটি পরিলক্ষিত হয়। বাচ্চারা তখন একটু দুর্বল হয়, ফ্যাকাসে হয়। সুস্থ সবল বাচ্চার মতো এই বাচ্চা বেড়ে ওঠে না। স্বাভাবিক বৃদ্ধি ব্যহত হয়। পেট ফুলে যায়।

    প্রথমে প্লীহা বেড়ে যায়। পড়ে লিভার বাড়ে। মুখমণ্ডলের কিছু পরিবর্তন আসে। রক্ত না দিলে এই বাচ্চাগুলোর পাঁচ থেকে ছয় বছরের বেশি বাঁচার সম্ভাবনা থাকে না।রক্ত নিয়েই তাদের বেঁচে থাকতে হয়। প্রাথমিক চিকিৎসা হলো রক্ত দেওয়া।ট্রেনের উপরেই থ্যালাসেমিয়া সচেতনতা নিয়ে গান পরিবেশনও করে এই সংগঠন। ।