|
---|
নিজস্ব সংবাদদাতা : দক্ষিন দিনাজপুরের গঙ্গারামপুরে মাটির তৈরি মিনি ফ্রিজের চাহিদা বাড়ছে ভিন রাজ্যেও। দক্ষিণ দিনাজপুর : গাল ভরা নাম মিনি ফ্রিজ হলে ও আসলে তা মাটির তৈরি জল রাখার জালা বলেই ডাকি অনেক সময়।বছরের অন্যান্য সময় তেমন বিক্রিবাটা না থাকলেও গরমের কারণে এসময়ে বিক্রি ব্যাপকভাবে বেড়ে যায়। তাই চাহিদার জোগান দিতেও বিক্রির থেকে দুপয়সা ঘরে আনতে ছুটতে হয় ভিন রাজ্যে কানপুর, এলাহাবাদ থেকে উড়িষ্যা পর্যন্ত।তবে চাহিদা বাড়লেও বাজার মূল্য না বাড়ায় কুমোর শিল্পীরা হতাশ। তাই এই পেশা থেকে বর্তমান প্রজন্মের অনেকেই মুখ ঘুরিয়ে নিচ্ছে।তবুও দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার গঙ্গারামপুরের এলাকার প্রায় ২৫০ জন কিছু কিছু সরকারি সাহায্য পেয়ে এই শিল্পকে বাচিয়ে রাখার প্রয়াস চালাচ্ছেন।তাতে মহিলারাও যুক্ত। তাদের দাবি জেলা শিল্প কেন্দ্র থেকে দু একটি সরকারি সাহায্য মিললেও এই শিল্পের জন্য আরো বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে সরকারি সাহায্য মিললে এই শিল্প থেকে যেমন এলাকার বেকার সমস্যা মেটার পাশাপাশি এই শিল্পকে জেলায় বাচিয়ে রাখা সম্ভব হবে।। প্রসঙ্গত, গ্রাম বাংলার মাটির তৈরি সামগ্রী নিয়ে কবিতা লিখেছিলেন বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরও। কবির ‘হাট কবিতায় তার উদাহরণ মেলে। কিন্তু যন্ত্রনির্ভর আধুনিক সভ্যতায় সাধারণ মানুষ মাটির জিনিস ব্যবহারের কথা ভুলে গিয়েছেন। কুঁজোয় জল রেখে পান করার ব্যাপারেও সাধারণ মানুষ অভ্যাস হারিয়েছেন। একটা সময় ছিল যখন দক্ষিন দিনাজপুর জেলার প্রতিটি মহল্লা ও পাড়াতে প্রতিটি ঘরে কুটির শিল্পের অন্যতম নির্দশন ছিল মাটির কুঁজো ও জালা। আগেকার মানুষের কাছে সেটাই ছিল ‘মিনি ফ্রিজ। কিন্তু এখন ঘরে ঘরে ফ্রিজ চলে আসায় এইসব মাটির তৈরি সরঞ্জামের ব্যবহার কমেছে।আধুনিক যন্ত্র নির্ভর সভ্যতায় এখন অনেকেই কৃত্রিম প্রক্রিয়ায় জল ঠান্ডা করে খায়। কিন্তু সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক উপায়ে জল ঠান্ডা রাখার একমাত্র উপায় মাটির জালা, কুঁজো। এখানে জল স্বাভাবিক তাপমাত্রার তুলনায় দুই-তিন ডিগ্রি কম থাকে। সেই জল পানে আলাদা তৃপ্তি থাকে।মুলত এলাকার নদী ও পুকুর থেকে তুলে আনা দোআঁশ ও এঁটেল মাটি দিয়েই মূলত এগুলি তৈরি করা হয়। কিছু সাদা বালিও ব্যবহৃত হয়। বর্তমানে প্রায় দুই ফুট উচ্চতা বিশিষ্ট একটি জালার পাইকারি দর ২৫ থেকে ৩০ ও ৫০ টাকা পর্যন্ত। আবার ভিন রাজ্যে এর মুল্য অনেক বেশি পাওয়া যায়।