|
---|
মাদ্রাসা শিক্ষা এক ঐতিহ্যশালী শিক্ষা। ভারতের প্রথম রাষ্ট্রপতি স্যার রাজেন্দ্র প্রসাদ ছিলেন মাদ্রাসার ছাত্র। স্বাধীনতা সংগ্রামের অন্যতম অগ্রনায়ক মৌলানা আবুল কালাম আজাদ এই মাদ্রাসা শিক্ষাকে অবলম্বন করে হয়ে ওঠেন স্বাধীন ভারতের প্রথম শিক্ষা মন্ত্রী। ভারত বর্ষ তথা বিশ্বের বিরল পন্ডিত ও বীর সেনানীদের জন্ম হয়েছে মাদ্রাসা শিক্ষার মাধ্যমেই।
স্বাধীনতা সংগ্রামে ওলামাদের ভূমিকা ও অবদান ছিল অপরিসীম।উমাইয়া ও আব্বাসী যুগে বিশেষত হারুনুর রশীদ ও মামুনের যুগে এই শিক্ষা চরম উৎকর্ষতা লাভ করে।কোরআন হাদিসের সাথে সাথে ইতিহাস, বিজ্ঞান, ভূগোল, সাহিত্য, চিকিৎসাশাস্ত্র, রসায়ন, বীজগণিত, ভাস্কর্য প্রভৃতি সকল বিষয়েই এই শিক্ষা বিশ্বসভ্যতায় উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছে।কিন্তু বিগত বাম সরকারের চরম অবহেলা ও ঔদাসীন্যে এই শিক্ষা গভীর সংকটের মুখোমুখি হয়।কখনো কখনো এই সরকার এই শিক্ষাব্যবস্থাকে তুলে দেওয়ারও চেষ্টা চালায়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা করতে ব্যর্থ হয়।
২০১১ সালে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে মা-মাটি-মানুষের সরকার প্রতিষ্ঠার পর থেকে মুখ্যমন্ত্রীর সদিচ্ছায় বাংলার সামগ্রিক উন্নয়নের সাথে সাথে শিক্ষা শিল্প স্বাস্থ্য ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে বিরাট এক পরিবর্তন সাধিত হয়। প্রচুর নতুন নতুন কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়। কবি শিল্পী সাহিত্যিক অভিনেতাদের মর্যাদা দেয়া হয়। স্বাস্থ্য পরিষেবা কে ঢেলে সাজানো হয়। এই সার্বিক উন্নয়নের অঙ্গ হিসেবে মাদ্রাসা শিক্ষা ও সংখ্যালঘু উন্নয়ন এর ক্ষেত্রেও বিপুল পদক্ষেপ গৃহীত হয়।
মাদ্রাসাগুলিতে কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে হোস্টেল নির্মাণ ,স্মার্ট ক্লাস রুম, কম্পিউটার ল্যাব, সাইন্সল্যাব, প্রজেক্টর, সাইবার গ্রাম প্রজেক্ট, পরিস্রুত পানীয় জল, সোলার সিস্টেম, কমনরুম, উন্নত লাইব্রেরী, উন্নত শৌচালয়, অতিরিক্ত শ্রেণিকক্ষ নির্মাণ থেকে প্রতিটি ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য উন্নতি সাধিত হয়েছে। বিভিন্ন ইনসেনটিভ, কন্যাশ্রী, শিক্ষাশ্রী, সবুজসাথী, স্বাস্থ্যসাথী, ঐক্যশ্রী ,বিভিন্ন স্কলারশিপ থেকে বই, খাতা, ছাতা ,জুতো, ব্যাগ, পোশাক, ওষুধ প্রভৃতি প্রদানের কথা উল্লেখ এর অপেক্ষা রাখেনা। বাম সরকারের শেষের দিকে মাদ্রাসা ও সংখ্যালঘু উন্নয়ন বাজেট ছিল যেখানে ৪০০ কোটি টাকা এই সরকারের আমলে তা হয়েছে চার হাজার কোটি টাকার উপরে। একথা বলার অপেক্ষা রাখে না সরকারের সদিচ্ছায় অবহেলিত মাদ্রাসা শিক্ষা আজ সাধারণ শিক্ষার সঙ্গে সমান তালে এগিয়ে চলেছে পঠন-পাঠনের ক্ষেত্রে প্রভূত উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। তাই মুর্শিদাবাদ জেলার মত প্রত্যন্ত গ্রামের মাদ্রাসার ছাত্র-ছাত্রীরাও এবার নজর কাড়া ফলাফল করেছে।
আরেকটি বিষয় এনআরসি নিয়ে পার্শ্ববর্তী রাজ্য আসামে প্রচুর অনিয়ম ও অন্যায় হয়েছে। আমি ববিদা ও অন্যান্য নেতৃত্বের সঙ্গে এনআরসি আন্দোলনে আসামে ছিলাম। আপনারা দেখেছেন এনআরসির মাধ্যমে প্রচুর বাঙালিকে ‘নিজভূমে পরবাসী’ বানানো হয়েছে। আপনার আমার নেত্রী, আপনার আমার ভরসা, দিদি মমতা ব্যানার্জি এনআরসি না করার জন্য প্রতিবাদ আন্দোলন গড়ে তুলেছেন। আমরা পশ্চিমবঙ্গে কোনমতেই তা হতে দেবো না।তবে ইতিমধ্যে আমরা আমাদের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র গুলির ভুল ও অসামঞ্জস্যতা গুলি ঠিক করে নেব। নিজেদের প্রয়োজনে ইতিমধ্যে মাদ্রাসা এমএসকে, এসএসকে গুলির বিষয়ে সরকার ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আগামী দিনে পে-কমিশন হচ্ছে। দিদি বলেছেন- আপনারা দেখেছেন। সবাই ভাল থাকুন, সুস্থ থাকুন। মা মাটি মানুষ জিন্দাবাদ। তৃণমূল কংগ্রেস জিন্দাবাদ। পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল মাদ্রাসা টিচার্স এসোসিয়েশন জিন্দাবাদ। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জিন্দাবাদ। ববি হাকিম জিন্দাবাদ।