কুলতলী দেউলবাড়ী এলাকা থেকে ধরা পাঁচ বছরে বাঘিনীকে সুন্দরবনে ছেড়ে দিল বনদপ্তর

বাবলু হাসান লস্কর, দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা : দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার রায়দিঘি রেঞ্জের দুইটি এলাকায় কুলতলি বিট অফিস ও রায়দিঘির RD দমকল এলাকায় বাঘের দেখা মিললে ও অবশেষে বনদপ্তরের কর্মীরা কুলতলীর দক্ষিণ দূর্গাপুর এলাকা থেকে খাঁচাবন্দি করলেন পূর্ণবয়স্ক বাঘিনীকে। দীর্ঘ সময় ধরে বাঘে মানুষে লুকোচুরিতে দিনের-পর-দিন ব্যতিব্যস্ত বনদপ্তর এর কর্মীরা। বারে বারে লোকালয়ে বাঘ আসায় বনদপ্তর কর্মীদের প্রতিনিয়ত বাড়ছে দায়িত্ব ও কর্তব্য। প্রতিটি এলাকায় প্রতিনিয়ত বনদপ্তর এর কর্মীরা ফেন্সিং নেটের তদারকির সাথে সাথে বৃক্ষরোপণ ও চলছে। তার পরেও প্রতিনিয়ত ছুটতে ছুটতে নাজেহাল বনদপ্তরের কর্মীরা এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্তে। কুলতলির দক্ষিণ দূর্গাপুরের বাঘ খাঁচা বন্দি করতে সক্ষম হলেন বনদপ্তর এর কর্মীরা। রায়দিঘির RD দমকলে বাঘের দেখা মিললেও এখনো খাঁচাবন্দি হলোনা। কুলতলীর গুড়গুড়িয়া ও দক্ষিণ দুর্গাপুর এলাকায় বাঘের পায়ের ছাপ দেখতে পায় স্থানীয় বাসিন্দারা। সাথে সাথে তারা খবর দেয় বনদপ্তরকে আর সঙ্গে সঙ্গে বনদপ্তর এর কর্মীরা নেমে পড়েন বাঘ খুঁজতে। সেখান থেকে খাঁচাবন্দি হল রয়েল বেঙ্গল টাইগার।

    গতকাল রায়দিঘি বিধানসভার আরডি ডোমকল এলাকায় বাঘ দেখতে পায় স্থানীয় এলাকার বাসিন্দারা সাথে সাথে খবর দেন রায়দিঘি রেঞ্জ অফিস- রায়দিঘিতে। রেঞ্জ অফিসের আধিকারিকরা রাত জেগে এলাকা ঘিরে খাঁচা পাতলেও সুচতুর বাঘ খাঁচায় বন্দি হল না। বাঘের সন্ধানে কোন খবর না মেলায় আজ কুলতলির মধ্য গুড়গুড়িয়া হালদার ঘেরীর অনতিদূরে বাঘের পায়ের ছাপ স্থানীয় বাসিন্দারা দেখতে পান প্রতিদিনের মতো এলাকার মানুষরা নদী সংলগ্ন এলাকায় যাতায়াতের সময় বাঘের পায়ের ছাপ দেখতে পেয়ে বনদপ্তর এ খবর দেয়। সাথে সাথে কুলতলী থানা ও মইপিট কোস্টাল থানায় খবর যায়। একাধিক সিভিক ভলেন্টিয়ার সহ বিশাল পুলিশ বাহিনী। বনকর্মীদের সাথে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের কর্মীরা ও মৎস্যজীবীরা নেমে পড়েন বাঘ খোঁজা থেকে খাঁচা বন্দি করা পর্যন্ত। প্রথমে পায়ের ছাপ দেখেই চিহ্নিত করা সে ছবিটি বাঘের কিনা অন্য কোন জানোয়ারের তা সুনিশ্চিত করা। পায়ের ছাপ তুলে তা পরীক্ষা করে দেখেন প্রকৃত বাঘের পায়ের ছাপ কিনা। কুলতলির দেউলবাড়ী অঞ্চলের দক্ষিণ দুর্গাপুর এলাকায় খাঁচায় ধরা পাঁচ বছরের বাঘিনীটিকে সুন্দরবনের চামটা পাঁচ নাম্বার জঙ্গলের কাছে ছেড়ে দেয় বনদপ্তর এর কর্মীরা। বারে বারে লোকালয়ে বাঘ আসায় আতঙ্ক সৃষ্টি হলেও বনদপ্তর এর কর্মীদের যুদ্ধকালীন তৎপরতায় ও নৌ পূর্ণতায় প্রতিটি ক্ষেত্রে সফল হয়েছেন। জলে কুমির ডাঙ্গায় বাঘ এর প্রতিটি মুহূর্তে বিপদের আশঙ্কা কে জলাঞ্জলি দিয়ে অসাধারণ দক্ষতার সাথে সুকৌশলে কার্যসিদ্ধি করে নজির সৃষ্টি করেছেন। সর্বোপরি মিলন কান্তি মণ্ডলের নির্দেশে এডিএফও অনুরাগ চৌধুরী রায়দিঘি রেঞ্জার স্বপন মন্ডল ও তার টিমের সাথে ওয়ার্ল্ড লাইফ কনজারভেশন এর সদস্যরা সর্বদা মানুষের পাশে। আরো সমস্ত আধিকারিকদের কর্মদক্ষতা তারিফ করার মতো।