কুৎসা অপপ্রচার ও অপবাদকে পাথেয় করে মানব সেবায় ব্রতী হলেন বালি দ্বীপের গৃহবধূ

বাবলু হাসান লস্কর, দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা : গাঙ্গেয় সুন্দরবনের গোসাবার বালি দ্বীপের গৃহবধূ মানবিকতার নজির গড়ল। বেশ কয়েক বছর যাবত কলেজ পড়ুয়া তার মনের মানুষের সমাজসেবার কাজ দেখতে দেখতে নিজেকে সেই পথে চালিত করার লক্ষ্য নিয়েই বিভিন্ন প্রতিকূলতাকে উপেক্ষা করে অসহায় মানুষের সেবায় ব্রতী হতে এমনিই উদ্যোগ গ্রহণ করলেন। বিগত দিন গুলিতে স্বামীর নানান ধরনের কাজে সাহস যুগিয়ে আসছিলেন। অভাবের সংসার থাকলেও মনের মাঝে তা কোন ভাবেই সাড়াজাগেনি। সর্বদা স্বামী কে সহযোগিতা করে আসছিলেন নবনীতা। কিন্তু সংসার ও পড়াশোনা সামলে সামাজিক কাজে নিজের প্রত্যক্ষ্য যোগদান সেভাবে সম্ভব হচ্ছিল না। নিজের মনে দীর্ঘ দিনের ইচ্ছে ছিল তিনি ক্যান্সার আক্রান্ত মানুষদের জন্য নিজের মাথার সখের চুল দান করবেন। কারন কেমো থেরাপির পর ক্যান্সার পেসেণ্টদের মাথার চুল সম্পূর্ণ উঠে যায় এবং তারা আর পাঁচটা সাধারণ মানুষের মতো অবস্থায় থাকেন না। বিষয়টি স্বামী সৌমিত্র মণ্ডল কে জানান নবনীতা। তারপর সৌমিত্র “হেয়ার ডোনেশন পশ্চিমবঙ্গ শাখা” র সাথে যোগাযোগ করেন ও তাদের কথামতো আজ ২৫.০৪.২০২২ সোমবার হেয়ার ডোনেশন এর দিন স্থির হয় এবং সেই মতো হেয়ার ডোনেশন পশ্চিমবঙ্গ শাখার পক্ষে বিশ্বজিৎ জানা মহাশয় আজ সমূহ পক্রিয়াটি সম্পন্ন করেন । নবনীতার কথায় অন্যের শারীরিক যন্ত্রণা লাঘব করার ক্ষমতা আমাদের মতো সাধারণ মানুষের নেই । কিন্তু আমরা চেষ্টা করলে পারি তাদের মানসিক যন্ত্রণা একটু হলেও কম করতে । সেখানে দাঁড়িয়ে আমার এই ক্ষুদ্র খুব প্রয়াস। এর ফলে আমার হয়তো কিছু দিন দেখতে খারাপ লাগবে কিন্তু তাদের যন্ত্রনায় এটুকু সাথী হতে পেরে সত্যিই ভালো লাগছে। সবশেষে সাধারনের উদ্যেশ্যে তার আহ্বান আপনারাও চাইলে ক্যান্সারে আক্রান্ত মানুষদের জন্য “হেয়ার ডোনেট” করতে এগিয়ে আসতে পারেন । সমাজের জন্য এই ভালো কাজে সুযোগ করে দেওয়ার জন্য নবনীতা সৌমিত্র কে ধন্যবাদও জানিয়েছেন । আর নিজের সৌন্দর্যের যে চুল কেটে ফেলায় গ্রাম বাংলার মানুষদের কাছে তাকে অনেক অপবাদ শুনতে হলেও মনের অদম্য জেদ তাকে দমাতে পারেনি।