|
---|
নিজস্ব সংবাদদাতা :বিহারের সাংবাদিক খুনের মূল তিন অভিযুক্ত ধরা পড়ল চন্দননগর পুলিশের হাতে। রশন কুমার, প্রিয়াংশু কুমার ও সৌরভ কুমার তিন অভিযুক্ত নাম পরিবর্তন করে ছদ্মবেশে গা ঢাকা দিয়েছিল হুগলির চন্দননগরে। পুলিশ জানিয়েছে ধৃতরা সবাই বিহারের বেগুসরাইয়ের বাসিন্দা। ধৃতদের থেকে উদ্ধার রয়েছে ভুয়ো প্যান কার্ড, আধার কার্ড, ভোটার কার্ড সহ কিছু বেনামি সিম কার্ড ও নগদ ১০ হাজার টাকা।
গত মাসের ২০ তারিখে বেগুসরাইতে খুন হয়েছিলেন বিহারের তরুণ সাংবাদিক সুভাষ কুমার। তাকে খুনের অভিযোগ উঠেছিল চার দুষ্কৃতীর বিরুদ্ধে। তবে ঘটনার পর থেকেই ফেরার ছিল দুষ্কৃতীরা। পুলিশ সূত্রে খবর, সন্দেহভাজন তিন ব্যক্তিকে ঘোরাফেরা করতে দেখে স্থানীয় মানুষ খবর দেন চন্দননগর পুলিশকে। পুলিশ ওই তিনজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করতেই বেরিয়ে পড়ে মূল সত্য। চন্দননগরের ডিসি বিজিত রাজ বু বলেন, জুতোদের বিরুদ্ধে পুলিশকে ভুল তথ্য দেওয়ার অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে খুনের মূল কারণ ও আরেক দুষ্কৃতীর সন্ধান জানার চেষ্টা চালানো হচ্ছে। আপাতত ধৃতরা পুলিশ হেফাজতে রয়েছে। বিহার থেকে এক পুলিশ প্রতিনিধি দল এসেছে ইতিমধ্যেই। আদালতের হলফনামা পেলে ওই দুষ্কৃতীদের বিহারে নিয়ে যাওয়া হবে।পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে গত ২০ মে রাতে আত্মীয়দের সঙ্গে একটি বিয়ের অনুষ্ঠানবাড়ি থেকে ফিরছিলেন বছর ২৬ এর তরুণ সাংবাদিক সুভাষ কুমার। সেই সময় রাস্তায় মোটরবাইক আরোহী চার দুষ্কৃতী সুভাষকে লক্ষ্য করে গুলি চালিয়ে চম্পট দেয়। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় ওই তরুণ সাংবাদিকের। বালিও মাটি মাফিয়াদের বিরুদ্ধে বহু লেখালেখি করেছিলেন সুভাষ। তাই অল্প বয়সেই শহীদ হতে হয় ওই তরুণ সাংবাদিককে। এই ঘটনার পর থেকেই সারা দেশ জুড়ে সমস্ত সাংবাদিকরা সরব হন দোষীদের গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবিতে।
খুনের ঘটনার ঠিক ৪০ দিনের মাথায় ধরা পড়ল সাংবাদিক খুনের মূল তিন অভিযুক্ত। ঘটনার পর থেকেই ফেরার ছিল ওই তিনজন। দিল্লি, হরিয়ানা, উত্তরাখন্ড, উড়িষ্যা বিভিন্ন এলাকায় গা ঢাকা দিয়েছিল তারা। গত বৃহস্পতিবার বিকেলে তারা পৌঁছায় চন্দননগরে। চন্দননগরের একটি ইঁটভাটার পরিতক্ত ঘরে গা ঢাকা দেবে বলে ঠিক করেছিল তারা। স্থানীয় মানুষদের ওই অপরিচিত তিন ব্যক্তিকে দেখে সন্দেহ হলে তারা খবর দেয় পুলিশকে। পুলিশ এসে তাদের আটক করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য। প্রথম দেখায় পুলিশকে তারা জানায় তারা মধ্যপ্রদেশ থেকে এসেছে কলকাতায় ব্যবসার জন্য। সেই মতন তারা নিজেদের পরিচয় পত্র দেখায়। পরিচয় পত্র দেখে পুলিশের সন্দেহ হলে পুলিশ তাদের থানায় নিয়ে আসেন জেরা করার জন্য। পুলিশের লাগাতার জেরার মুখে অভিযুক্তরা স্বীকার করে সাংবাদিক খুনের ঘটনা। এপর চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেটের তরফে যোগাযোগ করা হয় বিহার পুলিশের সঙ্গে। সেখানে ছবি পাঠানোর সঙ্গে সঙ্গে বিষয়টি পরিষ্কার হয়। বিহার থেকে দুই পুলিশ অধিকর্তা পশ্চিমবঙ্গে এসেছেন ধৃতদের নিয়ে যাবার জন্য।