ভাবাদিঘির আন্দোলনের জেরে আটকে ছিল কাজ দীর্ঘ সাত বছর পর শুরু হচ্ছে

নিজস্ব সংবাদদাতা :দীর্ঘ সাত বছর পর শুরু হচ্ছে তারকেশ্বর-বিষ্ণুপুর রেল পথের কাজ। ৫২ বিঘা জলাশয়, ভাবাদিঘির আন্দোলনের জেরে আটকে ছিল কাজ। হাওড়া থেকে বিষ্ণুপুর রেল প্রকল্প অর্ধ সমাপ্ত হয়ে পড়েছিল এতদিন। নতুন করে দরপত্র ডেকে, কাজের অর্ডার দেওয়া হয়েছে। রাজ্য সরকার সমস্ত সহযোগিতা করছে বলে জানাচ্ছে রেল। দিঘির পরিবেশগত ক্ষতি না করেই কাজ শুরু হবে বলে জানাচ্ছে রেল।
সূত্রের খবর, দিঘির পাড় ঘেঁষে যাবে রেল লাইন। জমিদাতাদের জন্য রাজ্যকে অর্থ দিয়েছে রেল। ১১৪ কিমি রেলপথের সূচনা করেছিলেন তৎকালীন রেলমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী হিসাবেও জটিলতা কাটাতে উদ্যোগ নিয়েছিলেন তিনি। ভাবাদিঘির অশান্তির জন্য কাজ বন্ধ হয়। চলে যায় নির্মাণকারী সংস্থা। নতুন করে সেই কাজ চালু করতে চলেছে রেল।বিষ্ণুপুর এবং তারকেশ্বরের দিক থেকে রেলপথ পাতার কাজ দ্রুতগতিতে চলতে থাকে। দ্বারকেশ্বর নদের উপরে রেল চলাচলের উপযুক্ত বড় সেতু নির্মাণের কাজও শেষ হয়ে যায় নির্দিষ্ট সময়ে। কিন্তু জটিলতা হয় গোঘাটের ভাবাদিঘি এলাকায় রেল লাইনের কাজ করতে গিয়ে।লাইন পাততে পুরোটা না হলেও ৫২ বিঘার ওই জলাশয়ের একাংশ বুজিয়ে ফেলার কথা ভেবেছিল রেল। কিন্তু স্থানীয় বাসিন্দাদের একটা বড় অংশ দাবি তোলেন, এলাকার প্রাচীন ওই দিঘিটি কোনও ভাবে বোজানো যাবে না। সেটিকে অক্ষত রেখেই লাইন পাততে হবে। ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের নথিতেও ওই দাগ-খতিয়ান নম্বরের জমি জলাশয় বলেই উল্লিখিত রয়েছে। দিঘির নামেই গ্রামের নাম। স্থানীয় ওই বাসিন্দাদের যুক্তি, ওই দিঘিটি গ্রামের ১৭৫টি পরিবারের প্রায় ৭০০ মানুষ প্রতিদিন ব্যবহার করেন। বেশ কিছু পরিবারের রুটি-রুজি হচ্ছে ওই দিঘিতে করা মাছ চাষ। রেল প্রকল্পে দিঘি ক্ষতিগ্রস্ত হলে টান পড়বে তাঁদের সংসারে। তাই তাঁরা রেল যোগাযোগের যাবতীয় সুবিধার কথা মাথায় রেখেও দিঘিটি বাঁচাতে চান।এই দাবি নিয়ে মামলাও হয়েছে। কিন্তু রেলের প্রকল্পে ওই লাইন পাতার মানচিত্র যে ভাবে হয়েছে, তা গ্রামবাসীদের দাবির পরিপন্থী। ওই দিঘির জন্যই হাওড়া থেকে বিষ্ণুপুর পর্যন্ত ১১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ রেললাইন পাতার কাজ কামারপুকুরের কাছে গোঘাটের ভাবাদিঘি গ্রাম এলাকায় পৌঁছে থমকে গিয়েছে। বাকি কাজ অবশ্য প্রায় পুরোটাই হয়ে গিয়েছে। পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক একলব্য চক্রবর্তী জানিয়েছেন, “আমরা পুরো কাজের ওর্য়াক অর্ডার করে দিয়েছি। রাজ্য সরকার আমাদের সহযোগিতা করতে প্রস্তুত বলে জানিয়েছে। আমরা পরিবেশ রক্ষা করেই এই কাজ করব।”