|
---|
মহম্মদ নাজিম আক্তার,মালদা,১০ নভেম্বর: ডিজিটাল যুগে ফেসবুকে পরিচয় , সেখান থেকে প্রেম এবং তারপর বিয়ে। কিন্তু বিয়ের পর বৌকে বাড়িতে গ্রহন করতে নারাজ স্বামী সহ শ্বশুর বাড়ির সদস্যরা। দীর্ঘদিন ধরে আবেদন,অনুরোধ করেও হয়নি ঠাঁই। অবশেষে ন্যায্য অধিকারের দাবিতে ধর্নায় বসলো ওই নববধূ, এমন চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে মালদা জেলার হরিশ্চন্দ্রপুর ২ নং ব্লকের দৌলতপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের হরিশ্চন্দ্রপুর ভালুকাগামী রাজ্য সড়কে। ধর্নার ফলে অবরুদ্ধ হয় রাজ্য সড়ক, গৃহবধূর ন্যায্য অধিকারের দাবিতে সোচ্চার এলাকাবাসীও।এদিকে অভিযুক্ত স্বামী সহ শ্বশুরবাড়ির সদস্যরা পলাতক বলে পুলিশ জানিয়েছে।
উল্লেখ্য, আড়াই বছর আগে হরিশ্চন্দ্রপুরের দৌলতপুরের বাসিন্দা আদিল মিয়ার ছেলে নাসিরুদ্দিনের সাথে বিয়ে হয় কালিয়াচক নিবাসী সাবিনা খাতুনের। ফেসবুক থেকে পরিচয় হয়ে প্রেম।তারপর বিয়ে, বিয়ের আগে নাসিরুদ্দিন সাবিনাকে কথা দেয় তার যেহেতু বাবা,মা নেই। বিয়ের পর স্বামী হিসেবে সাবিনার প্রতি সব দায়িত্ব পালন করবে।দুজনের সম্মতিতেই হয় বিয়ে কিন্তু বিয়ের পর হঠাৎ করে মনোভাব পাল্টে যায়। সাবিনাকে ঘরে তুলতে অস্বীকার করে তার শ্বশুর-শ্বাশুড়ি, স্বামী নাসিরুদ্দিনও ভোল পাল্টে দেয়, ৫ লক্ষ টাকা পনের দাবি করে, কিন্তু বাবা,মা অনাথ শামীমার পক্ষে এতো টাকা দেওয়া অসম্ভব ছিল না, তাও প্রতিবেশীদের সহায়তায় ৫০ হাজার টাকা পন দেয় কিন্তু তারপরেও তার স্বামী এবং শ্বশুরবাড়ির লোকেরা তাকে বাড়িতে ঠাই দিতে অস্বীকার করে, গতকাল এলে সাবিনাকে তার শ্বাশুড়ি মারধর করে বের করে দেয় বলে অভিযোগ, অবশেষে আজ বাধ্য হয়ে নিরুপায় সাবিনা নিজের ন্যায্য অধিকারের দাবিতে হরিশ্চন্দ্রপুর ভালুকগামী রাজ্য সড়কে ধর্নায় বসে।
সাবিনা জানান, ” বিয়ের পূর্বে অন্য কথা বলতো কিন্তু বিয়ের পরেই হঠাৎ করে সব পাল্টে যায়, টাকার জন্য চাপ দিতে থাকে, কিন্তু আমার বাবা,মা,ভাই কেউ নেই, আমার পক্ষে এতটা টাকা দেওয়া অসম্ভব, কাল আমি শ্বশুরবাড়িতে এলে মেরে বের করে দেয় শ্বাশুড়ি, আজ বাধ্য হয়ে ন্যায্য অধিকারের দাবিতে ধর্নায় বসলাম, আমি আমার অধিকার না পেলে এখানেই আত্মহত্যা করবো, ” কথাগুলি বলতে বলতে কেঁদে ফেলে অসহায় সাবিনা।
তার অধিকারের পক্ষে সওয়াল করে এলাকাবাসীরাও হামিদুর রহমান নামে এক এলাকাবাসী বলেন, ” ছেলে নিজের পছন্দে বিয়ে করেছিল বাবারও সম্মতি ছিল কিন্তু পরে পনের দাবি করে বৌকে ঘরে তুলতে অস্বীকার করে,মেয়েটার প্রতিবেশীরা পনস্বরূপ ওদের হাতে ৫০ হাজার টাকাও দিয়েছে কিন্তু তাও ওরা ঘরে তুলেনি, আমরা গ্রামবাসীরা চায় ও ন্যায্য বিচার পাক কিন্তু ওর শ্বশুরবাড়ির লোক গ্রামবাসীদের বিচার মানতে চাননা।
এদিকে ধর্ণার ফলে রাস্তায় জ্যাম হয়ে যায়, আটকে যায় গাড়ি-ঘোড়া, জ্যামে আটকে থাকা গাড়ির চালক বলেন, ” তুলশীহাটা যাচ্ছিলাম দৌলতপুর এসে জ্যামে আটকে আছি ৪০ মিনিট ধরে, শুনলাম একজন শ্বশুরবাড়িতে ন্যায্য অধিকারের দাবিতে ধর্নায় বসেছে, এখনো কোনো পুলিশ আসে নি। ”
এদিকে ঘটনার ফলে যথেষ্ট চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পরে এলাকায় প্রশ্ন উঠেছে নারী অধিকার এবং সুরক্ষা নিয়েও, যেভাবে প্রেম করে বিবাহের পরেও পনের দাবিতে একজন অনাথ মেয়ে বাড়িতে ঢুকতে দিচ্ছে না তার স্বামী এবং শ্বশুরবাড়ির লোকেরা তার নিন্দার সোচ্চার হয়েছেন সকলেই, অভিযুক্তদের সাথে যোগাযোগ করতে গেলে দেখা যায় তাদের বাড়িতে তালা, কোনোরকম পরিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।