অকাল মৃত্যু টিটো’র, শোকের ছায়া মেদিনীপুরে

নিজস্ব প্রতিবেদক, মেদিনীপুর: ঐতিহাসিক মেদিনীপুর শহরের সংস্কৃতির জগতে আবার এক নক্ষত্র পতন। না শুধু পতন নয়, অকাল পতন। মেদিনীপুর শহর জুড়ে শোকের ছায়া। শোকের ছায়া সোশ্যাল মিডিয়ায়। টিটো’র অকাল মৃত্যু মেনে নিতে পারছে না মেদিনীপুরিয়ানরা।

    শনিবার গভীর রাতে অকাল প্রয়াণ হল মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে জেলা শহরের খ্যাতনামা শিল্পী সম্ভ্রম চক্রবর্তী ওরফে টিটো,র(৪২)। শনিবার গভীর রাতে অসুস্থ হলে সম্ভ্রমের পরিজনরা প্রথমে তাকে মেদিনীপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে, পরে অবস্থার অবনতি হলে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে হাসপাতালে ভর্তি করে। রাত ১টা ৫০ মিনিটে সম্ভ্রমের মৃত্যু হয়। ১৯৭৯ এর ২২ ফেব্রুয়ারী মেদিনীপুর শহরের বক্সীবাজারে সম্ভ্রম চক্রবর্তীর জন্ম। গোটা শহরে টিটো নামেই সুপরিচিত। মানুষের বিপদে আপদে টিটোর ঝাঁপিয়ে পড়া শহরে বেনজির। সদা হাস্য, প্রাণচঞ্চল টিটোর বাবা মেদিনীপুর শহরের উজ্জ্বলতম সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব প্রণব চক্রবর্তী, মা অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষিকা রেবা চক্রবর্তী। দিদি শতাব্দী চক্রবর্তী গোস্বামী শহরের আরও এক উজ্জ্বল সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব।

    গান পাগল সম্ভ্রম গান নিয়ে দিন কাটাত। দেড়শো বছরের প্রাচীন মেদিনীপুর কলেজের বিশিষ্ট প্রাক্তনী সম্ভ্রম চক্রবর্তী অভিনয়ে ও ছিল ব্যতিক্রমী নাট্যশিল্পী। গানের দরাজ গলা, নাটকে প্রাণ ছোঁয়া অভিনয়। সংস্কৃতি জগতে অবাধ বিচরণ ছিল সম্ভ্রমের।কিছু দিন আগে নীলোৎপল চ্যাটার্জীর “লক ডাউন” সিনেমা টি তে দাপিয়া অভিনয় করে মানুষের মন জয় করে নেয় সম্ভ্রম, মানুষের বিপদে আপদে ও সম্ভ্রমই ত্রাতা। শনিবারেও রাতে এক মুমুর্ষ রোগীকে অক্সিজেন সিলিন্ডার পৌঁছে দেয় সম্ভ্রম। তারপর আচমকা অসুস্থ হয়ে পড়ে সম্ভ্রম।

    রাত ১টা ৫০ মিনিটে সকলকে কাঁদিয়ে বিদায় নেয় সম্ভ্রম। বাড়িতে বৃদ্ধ বাবা, বৃদ্ধা মা, এক কন্যা ও স্ত্রী। সম্ভ্রমের মৃত্যু সংবাদ ছড়িয়ে পড়তেই বক্সীবাজারে তার বাড়ির সামনে মানুষের ভিড় উপচে পড়ে। পরিবারের সদস্যদের সিদ্ধান্ত মতো রবিবার সকালে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের এনাটমি বিভাগে সম্ভ্রমের মৃতদেহ দান করা হয়। সম্ভ্রমকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে তার মৃতদেহ বক্সীবাজারের শিশু উদ্যানে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে এলাকার মানুষ তাকে শেষ শ্রদ্ধা জানান। শেষ যাত্রায় সাথে ছিল অগণিত বন্ধু, পরিজন, ও তাকে ভালোবাসার মানুষেরা,সম্ভ্রম বিদায়ে মেদিনীপুরের সংস্কৃতি জগতে নেমে এসেছে বিষাদের ঘন ছায়া।