|
---|
নতুন গতি ওয়েব ডেস্কঃ গ্রামীন ভারতে করোনা সংক্রমণের সূচক ভাবাচ্ছে চিকিৎসা মহলকে। যদিও শহরে করোনা সংক্রমণের সূচক কোথাও কোথাও নামতে শুরু করেছে। শহর থেকে গ্রামাঞ্চলে সংক্রমণ ছড়ানো রোখাই এখন সব চেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ বলে মনে করছে কেন্দ্র। তাই গ্রামীণ ভারতে যে করেই হোক সংক্রমণ আটকাতে বাড়ি-বাড়ি ঘুরে পরীক্ষার উপরে জোর দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আজ বিভিন্ন মন্ত্রকের শীর্ষ কর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে এই নির্দেশের পাশাপাশি জেলা ও ব্লক স্তরে আরও বেশি করে কন্টেনমেন্ট জ়োন গঠন ও টিকাকরণের উপরে জোর দেন প্রধানমন্ত্রী। গত এক মাসের পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে দেখা গিয়েছে, সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ ক্রমশ পরিধি বিস্তার করে গ্রামীণ ভারতে প্রভাব ফেলতে শুরু করেছে। তার সঙ্গে বিভিন্ন রাজ্যে লকডাউনের ঘোষণায় ফের পরিযায়ী শ্রমিকদের গ্রামে ফেরা বেড়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এর ফলে নতুন করে গ্রামীণ ভারতে সংক্রমণ বাড়ছে। ভারতের ৮০ শতাংশ মানুষ গ্রামে বাস করেন। বর্তমানে যা পরিস্থিতি, তাতে গ্রামে এক বার সংক্রমণ পুরোপুরি ছড়িয়ে পড়লে স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর অভাবে ঘরে ঘরে মানুষ মারা যাবে। এই অবস্থা রুখতেই দিন কয়েক আগে ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চের প্রধান বলরাম ভার্গব পরামর্শ দিয়েছিলেন যে— সংক্রমণের হার পাঁচ শতাংশের বেশি, এমন শহর ও গ্রামীণ এলাকায় লকডাউন দরকার। বিশেষজ্ঞদের মতে, দিল্লিতে টানা তিন সপ্তাহের লকডাউনে যেমন সংক্রমণের সূচককে নীচে নামানো গিয়েছে, সে ভাবে গ্রামীণ ভারতেও কড়া হাতে লকডাউন করে সংক্রমণ রুখতে হবে। তা না-হলে পরিকাঠামোর অভাবে গ্রামাঞ্চলে মৃত্যুমিছিল রোখা অসম্ভব হয়ে দাঁড়াবে।
গ্রামীণ ভারতে লকডাউন করার প্রশ্নে অন্যতম সমস্যা হল অর্থনীতি। প্রথম ধাক্কার চেয়ে করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ধাক্কা অনেক বেশি মারাত্মক হলেও কেবল অর্থনীতির কথা ভেবে এ যাবৎ সরাসরি লকডাউন করার ব্যাপারে সওয়াল করতে দেখা যায়নি মোদীকে। আইসিএমআরের ডিজি সাম্প্রতিক সময়ে প্রথম সরকারি ব্যক্তি, যাঁকে সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ্যে লকডাউনের পক্ষে মুখ খুলতে দেখা গিয়েছে। সূত্রের মতে, গত এপ্রিল মাসে যে জাতীয় টাস্ক ফোর্স বৈঠকে বসেছিল, তারাও দেশের বিস্তীর্ণ অংশে লকডাউনের সুপারিশ করে। কিন্তু প্রথম লকডাউনের ফলে অর্থনীতির সূচক যে ভাবে মুখ থুবড়ে পড়েছিল, তা থেকে শিক্ষা নিয়ে নতুন করে লকডাউনের কথা সরাসরি ঘোষণার পথে হাঁটতে রাজি নয় মোদী সরকার। কেন্দ্রের ব্যাখ্যা, অর্থনীতির অবস্থা গত বছরের তুলনায় ভাল অবস্থায় রয়েছে। বিশেষ করে শিল্প ক্ষেত্রে উৎপাদনের তুলনায় কৃষি ক্ষেত্রে বৃদ্ধি মন্দের ভাল। তাই ফের লকডাউন হলে অর্থনীতিতে যে নতুন করে নেতিবাচক ধাক্কা এসে পড়বে, তা থেকে ঘুরে দাঁড়ানো কার্যত অসম্ভব হয়ে পড়বে। তাই লকডাউনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা রাজ্যগুলির হাতেই ছেড়ে রাখা হচ্ছে।