দলের সিদ্ধান্ত অনুব্রত আসন ফাঁকা রেখেই বীরভূমে চলবে তৃণমূল!

নিজস্ব সংবাদদাতা : পঞ্চায়েত নির্বাচন দুয়ারে কড়া নাড়ছে। বছর ঘুরলেই ভোটের দামামা বাজতে শুরু করবে। কিন্তু তঁর আগে বীরভূমের বেতাজ বাদশা অনুব্রত মণ্ডলের গ্রেফতারিতে তৃণমূল পড়েছে বিপাকে। কেষ্ট নেই, কে চালাবে দল! সেই চিন্তা দূর করতে জরুরি বৈঠকে বসেছিল জেলা নেতৃত্ব, সেখানে সিদ্ধান্ত হল অনুব্রত ওরফে কেষ্টর আসন ফাঁকা রেখেই বীরভূমে চলবে তৃণমূল!দ্বাপরের কেষ্ট কুরুক্ষেত্র যুদ্ধে অর্জুনের সারথি হওয়ায় গান্ধারীর প্রশ্নের উত্তরে বলেছিলেন, ‘কৃষ্ণ যদি না থাকিত অর্জুনের রথে, কৃষ্ণ নাম চালাইত রথ’। আর একালের কেষ্টকে নিয়ে তৃণমূল বলল, বীরভূমে কেষ্ট না থাকলেও কেষ্টর নামই চালাবে দল। সেই মন্ত্রেই পঞ্চায়েত নির্বাচনের রূপরেখা তৈরি করে ফেলল তৃণমূল।বীরভূমে অনুব্রত মণ্ডলের আসন ফাঁকা রেখে চলার পরিকল্পনা করছে তৃণমূল। অর্থাৎ অনুব্রত মণ্ডল গরু পাচারকাণ্ডে সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হলেও তৃণমূল তাঁর জায়গায় নতুন কোনও জেলা সভাপতি বেছে নিচ্ছে না। তৃণমূল দফতরে সভাপতির চেয়ার ফাঁকা রেখেই বিশেষ বৈঠক করল তৃণমূল। সেই আসন ফাঁকা রেখেই দল পরিচালনার পরিকল্পনা নিল।বীরভূমে তৃণমূলের বৈঠকে জেলার ১০ বিধায়ক ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বর্ধমানের আউসগ্রাম, মঙ্গলকোট ও কেতুগ্রামের বিধায়করা। এই তিন কেন্দ্রের দায়িত্বেও ছিলেন অনুব্রত মণ্ডল। কেমন করে সংগঠন চলবে, কে কোন দায়িত্বে থাকবে, তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ডেপুটি স্পিকার আশ্সি বন্দ্যোপাধ্যায়, মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ, সাংসদ অসিত মাল, অভিজিৎ সিংহ, জেলা সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরী-সহ অন্যান্যরা।রবিবার অনুব্রত মণ্ডলের চেয়ার ফাঁকা রেখে প্রায় দু-ঘণ্টা বৈঠক চলে। এই বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, যেভাবে দল চলছিল, অনুব্রত মণ্ডল যে স্টাইলে দল পরিচালনা করছিলেন, তাঁকে মান্যতা দিয়ে সেই পথেই চলবে তৃণমূল। সংগঠনের কাজ চলবে একই পদ্ধতিতে। জেলায় যেখানে যেমন কাজ চলছিল, যাঁর উপরে যে দায়িত্ব দিয়েছিলেন অনুব্রত মণ্ডল, সেইমতো স্ব স্ব দায়িত্ব পালন করবেন সবাই।অনুব্রত মণ্ডলের অঙ্গুলিহেলনে এতদিন দবল চলেছে। তিনি কোনওদিন মন্ত্রী, সাংসদ বা বিধায়ক হতে চাননি। সংগঠনের দায়িত্বকেই সর্বাধিক মনে করেছেন। তিনিই কাণ্ডারি। বীরভূম তৃণমূলের তিনিই শেষ কথা। একজন জেলা সভাপতি হিসেবে তাঁর দাপট ছিল একেবারেই ভিন্ন রকম। এহেন অনুব্রত মণ্ডল গরুপাচার মামলায় সিবিআইয়ের হাতে ধরা পড়েছেন। তৃণমূল কোন পথে চলবে অনুব্রতকে ছাড়া, তা স্থির করাই ছিল এই বৈঠকের উদ্দেশ্য।