শ্রীকৃষ্ণ মন্দিরে নামাজ আদায় দুই ব্যক্তির,চরম ভেদাভেদের বাতাবরণেও মিলনের সুর

নিজস্ব প্রতিবেদন: হজরত মহম্মদ বলেছিলেন, গোটা বিশ্ব একটা পরিবার। ধর্ম মানুষের সঙ্গে মানুষের যোগসুত্র স্থাপন করে। ধর্মের জন্য মানুষের আলাদা হওয়া সাজে না। কিন্তু এখন সে কথা আর কজন মেনে চলেন! তবে আমরা মাঝেমধ্যেই বলে থাকি, পৃথিবীতে এখনো ভালো মানুষ রয়েছেন। না হলে হয়তো পৃথিবী ঘুরত না। কথাটা একেবারেই ঠিক। ভাল মানুষরা রয়েছেন। এই যেমন ফয়সাল খান এবং মহম্মদ চাঁদ মুসলিম ধর্মাবলম্বী হওয়া সত্বেও হিন্দু ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। ভাগবত গীতা, বেদ, উপনিষদ, হিন্দুদের প্রতিটি ধর্মগ্রন্থই তারা পড়ে ফেলেছেন। এমনকী সনাতন হিন্দু ধর্ম সম্পর্কে তাঁদের জ্ঞান কোনও অংশে কম নয়। এমন দুজন ব্যক্তি যদি কৃষ্ণদর্শনের জন্য আসেন তাহলে সম্প্রীতির বার্তা ছড়ায় বটে!

    মথুরার নন্দগাঁও এর বিখ্যাত নন্দবাবা মন্দিরে এই দুই মুসলিম ধর্মাবলম্বী ব্যক্তি নামাজ আদায় করলেন। তাঁদের এমন উদ্যোগ সম্প্রীতির বার্তা বয়ে আনল। বিশেষ করে এই অস্থির সময়ে, যখন কিনা দেশে প্রায়ই হিন্দু-মুসলমান হানাহানির খবর শোনা যায়। রামচরিত মানস-এর পংক্তির উল্লেখ করে ফয়সাল খান বললেন, এই দুনিয়ায় ভালবাসা সব থেকে বড় ধর্ম। শ্রীকৃষ্ণ ভালবাসা বিলিয়েছেন। তাঁর বিলিয়ে দেওয়া প্রেমে সবার অধিকার রয়েছে। কোন ধর্মই মানুষের সঙ্গে মানুষের বিভেদ শেখায় না। ফয়সাল খান ও মহম্মদ চাঁদ দিল্লির অধিবাসী। দুজনেই সাইকেল নিয়ে বেরিয়েছেন তীর্থযাত্রায়। তাঁদের এই যাত্রায় বেশিরভাগ রয়েছে হিন্দু মন্দির দর্শন এর পরিকল্পনা।এদিন যেমন তাঁরা চলে এলেন নন্দবাবা মন্দিরে। সেই মন্দিরের সেবায়েত কৃষ্ণ মুরারী গোস্বামী তাঁদের প্রসাদ খেতে দিলেন। ফয়সাল খান ও মহম্মদ মহাআনন্দে প্রসাদ খেলেন। শ্রীকৃষ্ণ দর্শন করলেন। তারপর মন্দির চত্বরেই পয়গম্বর আল্লাহর উপাসনা করলেন।

    এই দুই মুসলিম ধর্মাবলম্বী মানুষের এমন উদ্যোগ মুগ্ধ করেছে মন্দিরের সেবায়েতদের। ফয়সাল খান জানিয়েছেন, ব্রজধামে এসে অনেকেই নিজের মনস্কামনা জানান। তাঁরা মানুষের মধ্যে ভালবাসার প্রচারে বেরিয়েছেন। বয়স তাঁদের বেশি নয়। তাই অনেকেই বলেছিলেন তীর্থযাত্রার সময় এটা নয়। কিন্তু ফয়সাল ও মহম্মদ চাঁদ পাল্টা বলেছিলেন, এটাই তীর্থযাত্রার আসল সময়। সারা দুনিয়ায় সদ্ভাবনা প্রচার করার এটাই আদর্শ সময়।