|
---|
উজির আলী, নতুনগতি, চাঁচল: ০৫ এপ্রিল
করোনা ভাইরাস নয়, এবার লকডাউনের জেরে আত্মঘাত হলেন এক দিনমজুর।
রবিবার মালদহের চাঁচল ১ নং ব্লকের শিহিপুরের গ্রামের ঘটনা। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এদিন সকালে হাতিন্দা মন্দিরের পাশের আমবাগানে গামছা দিয়ে ঝলুন্ত দেহ নজরে আসে বাসিন্দাদের। পরে চাঁচল থানার পুলিশ এসে দেহটিকে উদ্ধার করে নিয়ে যায়।
তবে আত্মহত্যাকে ঘিরে এলাকায় দুর্ভিক্ষের চিত্র ফুটে উঠেছে রবিবার।
পুলিশ জানায়, ওই ব্যক্তি সেখ বুধুয়া(৫৪)
চাঁচল গ্রাম পঞ্চায়েতের শিহিপুরের বাসিন্দা।
পেশায় দিনমজুর ছিল।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, লকডাউন ঘোষনাতে ওই ব্যক্তির মাথায় আকাশ ভেঙে পড়েছিল। ঘরে রয়েছে অবিবাহিত দুই ছেলে নুরেজ আলী(১৮) তজিমুল হক (২০)ও এক কন্যা সাইনুর খাতুন (১৬)।
স্ত্রী নূরী বিবি জানান, শনিবার রাত থেকেই নিখোঁজ ছিল স্বামী,সকালে খবর আসে গৃহকর্তা দেহ ঝুছলে হাতিন্দার আমবাগানে। পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারীর মৃত্যুতে একরাশ উদ্বেগ উৎকন্ঠা বিরাজ করছে ওই সংসারে।
স্ত্রী ক্রন্দিত হয়ে বলেন, চাষের জমিও নেই, ভিটে মাটি শেষ সম্বল।
লেবারের কাজ করত। প্রতিদিনের রোজগারেই সংসার চলত পরিবারের পাঁচ সদস্যের। লোকডাউন ঘোষনাতে কর্মহীন হয়ে পড়ে গৃহকর্তা। ঘরে খাদ্য সামগ্রী মজুত ছিল না। রাতের বেলা স্বামী ঘুমোতেন না। কয়েকদিন উনুনও জ্বলেনি ওই পরিবারে বলে স্থানীয় সূত্রে খবর। করোনা প্রতিহতে করতে লোকডাউন ঘোষনা কাম্য। তবে এই ভয়াবহ দুর্ভিক্ষে এক ব্যক্তির আত্মহত্যায় চাঁচল এলাকায় অমানবিক চিত্র ধরা পড়ল এদিন। লকডাউনের জেরে দুস্থ ক্ষুধার্থদের খাদ্য সামগ্রী বিলি হচ্ছে বিভিন্ন এলাকায়। কিন্তু আমরা পায়নি বলে জানান স্ত্রী নূরী বিবি।
অনটন অভাবে বাবা আমাদের ছেড়ে চলে গেল অচেনা না ফেরার দেশে। করোনা ভাইরাস নয়, লকডাউনের ঘোষনায় কর্মহীনতায় বাবা ছেড়ে গেলেন আমাদের এসভ্যতায় স্বাক্ষী রইল বাবা জানান ছেলে নুরেজ আলী।
পুলিশ এদিন দেহটিকে উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মালদা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে পাঠিয়েছে।