|
---|
নতুন গতি প্রতিবেদক : একদিকে করোনা মহামারীর জন্য চলছে লকডাউন, অন্যদিকে “ইয়াস” ঝড়ের দাপটে লন্ডভন্ড সুন্দরবনের বিস্তীর্ণ এলাকা। এমনই একটি দ্বীপ, দঃ ২৪ পরগনার, গোসাবা ব্লকের বড় মোল্লাখালি তে এদিন ত্রান ও স্টাডি কিট বিতরণ করে “ইউনাইটেড পাওয়ার ফর রুরাল এম্পাওয়ার্মেন্ট” (পিওর) নামক একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন।
এখন ও কোথাও হাঁটুজল, কোথাও কোমর জল, কোথাও রাস্তাজুড়ে অতিরিক্ত কাদা। সবকিছু উপেক্ষা করে প্রতিটি গ্রামবাসীর বাড়ি পৌঁছে যায় পিউর এর সদস্যরা। শোনা হয় তাদের দুঃখ দুর্দশার কথা। প্রায় 300 টি পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয় চাল, আলু,পেঁয়াজ,সোয়াবিন, ORS, বিস্কুট, টোস্ট প্রভৃতি খাদ্যদ্রব্য এবং জরুরী প্রয়োজনীয় স্যনিটারি ন্যাপকিন, মশারি প্রভৃতি সহ বিশেষ এডুকেশন কিট।
ইতিপূর্বে ‘ইয়াশʼ ঝড়ের পরে পরেই ৩০/০৫/ ২০২১ তারিখে এই সংগঠনের মাধ্যমে ত্রাণ দেওয়া হয়েছিল দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার কুলপি ব্লকের রাঙাফলা ও ট্যাংরাচর গ্রামে, সেবার ৫০০ পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছিল শুকনো খাদ্যদ্রব্য ও পানীয় জল। এছাড়া গত বছর লকডাউন ও আমফানের সময় থেকেই রাজ্যের মানুষের পাশে আছে পিউর। কমিউনিটি কিচেন, রমজান কিট, ঈদ কিট বিতরন, ত্রিপল বিতরণ কৃতি ছাত্র-ছাত্রীদের সংবর্ধনা সভার আয়োজন, করোনা রুগিদের সহায়তা প্রভৃতি সহ একাধিক সেবামূলক কাজ করার পাশাপাশি স্কুল বন্ধের কথা মাথায় রেখে গরীব মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য চলছে অনলাইন ক্লাস। এই কর্মকাণ্ড যারা সামলাচ্ছেন তারা এই রাজ্যেরই অধ্যাপক, আধিকারিক,ছাত্র, ডাক্তার, উকিল , ইঞ্জিনিয়ার সহ অন্যান্য পেশার লোক যারা নিজ নিজ পেশার দায়িত্ব সামলে ও সমাজের কথা ভাবছেন কাজ করছেন।এদিনের ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ সম্পন্ন করতে এই সংগঠনের মহিলা সদস্যাদের মধ্যে সাহারিয়া, পূর্ণিমা, দীপান্বিতা নিজ বন্ধু-বান্ধবীদের থেকে অর্থ সংগ্রহের মাধ্যমে বিশেষ সহযোগিতা করেছে , এছাড়া দুটি সামাজিক সংগঠন বেঙ্গলি অ্যাকাডেমিয়া ফর সোশ্যাল এমপাওয়ারমেন্ট (BASE), ন্যাশনাল হিউম্যান ওয়েলফেয়ার অর্গানাইজেশন (NHWO) ও শাকিল আহমেদের নেতৃত্বে ‘শিশু বিকাশ একাডেমীরʼ কয়েকজন ছাত্রের আর্থিক সহযোগিতা । বেস থেকে শতাধিক বিশেষ স্টাডি কিট ও NHWO থেকে পাওয়া বেশ কিছু শুকনো খাবার সামগ্রী, ব্লিচিং পাউডার, ফিনাইল এদিনের প্রোগ্রামে বিতরন করা হয়। বেসের পক্ষে ই সি মেম্বার মোঃ ইনামুর রহমান এবং NHWO এর পক্ষে জেলার মূখ্য সম্পাদক সামসুর রহমান এদিনের প্রোগ্রামে উপস্থিত ছিলেন। তাঁরা বলেন ” অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান,শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কর্মসংস্থান এমন মৌলিক চাহিদাগুলো পূরণ করা কোন একটি সংগঠনের পক্ষে সম্ভব নয় তাই সমস্ত সামাজিক সংগঠন গুলির উচিত রেষারেষি ভুলে একই সাথে কাজ করা। আজ যে দৃষ্টান্ত স্থাপিত হলো তা ভবিষ্যতে অন্য সংগঠনগুলি অনুসরণ করলে, তবেই সার্বিক উন্নয়ন সম্ভব।” এদিনের প্রোগ্রামে উপস্থিত ছিলেন পিউর এর সেক্রেটারি, ভাইস সেক্রেটারি ভাইস প্রেসিডেন্ট সহ প্রায় সমস্ত মেম্বার । ২৪ জনের টিম উক্ত দ্বীপের পাঁচটি পাড়ার প্রতিটি বাড়িবাড়ি গিয়ে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে পিউর তরফে জানানো হয়, যে- “অভাবগ্রস্থ মানুষকে লাইনে দাঁড় করানো সকলের পক্ষে সমীচীন মনে হয় না , এক্ষেত্রে কষ্ট ও সম্মানহানি দুটোই হয়, তাছাড়া লাইনে একই পরিবারের একাধিক লোক দাঁড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা থাকে, তাই প্রকৃত অভাবী পরিবারের হাতে খাবার পৌঁছাতে বাড়ি বাড়ি পৌঁছে গেছে আমাদের সদস্যরা। যাতে তারা নির্দ্বিধায় গ্রহণ করতে পারে, কোনরূপ লোকলজ্জার ভয় ছাড়াই।”