মুর্শিদাবাদের বহরমপুরে ‘ওয়াকাফ সম্পত্তি’র উপর অবৈধ নির্মাণ বন্ধ করার দাবি অল ইন্ডিয়া ইমামস কাউন্সিলের

 

    নতুন গতি, ওয়েব ডেস্ক: পশ্চিমবঙ্গ সহ বিভিন্ন রাজ্যে ওয়াকফ সম্পত্তি জবরদখল ও অবৈধ নির্মাণের কথা প্রায় শোনা যায় । কিছুদিন আগে জলপাইগুড়ি জেলায় ওয়াকফ সম্পত্তিতে বিজেপির পার্টি অফিস নির্মাণ ঘিরে জোর সমালোচনা শুরু হয় ।এবার ওয়াকফ সম্পত্তির উপর অবৈধ নির্মাণের অভিযোগ উঠলো মুর্শিদাবাদের জেলা সদর বহরমপুরে কারবালা কবরস্থানের উপর। অবিলম্বে এই অবৈধ নির্মাণ কাজ বন্ধের দাবি জানিয়েছে অল ইন্ডিয়া ইমামস কাউন্সিল।

    অল ইন্ডিয়া ইমামস কাউন্সিল মুর্শিদাবাদ জেলা কমিটি এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বহরমপুরে ওয়াকাফ সম্পত্তি ‘কারবালা কবরস্থান’ যার ই সি নম্বর ১২৩৭৭ জবর দখল করে অবৈধ নির্মাণের তীব্র নিন্দা জানান অল ইন্ডিয়া ইমামস কাউন্সিলের জেলা সভাপতি জনাব মাওলানা মুহাম্মাদ মাসুদ সাহেব।

    তিনি বলেন ওয়াকাফ সম্পত্তি জবরদখল, বিক্রয় এবং অবৈধ নির্মাণ সম্পূর্ণ বেআইনী। তিনি আরো বলেন বহরমপুরে জেলা পরিষদের পাশে কারবালা ওয়াকফ সম্পত্তির জমি জবর দখল করে বেআইনি দোকান ঘর তৈরি করছে ঐ সম্পত্তির কমিটির একাংশ। মোট ১৩ খানা দোকান ঘর নির্মাণ করা হচ্ছে। ছাদ পর্যন্ত হয়ে গেছে। বিষয়টি রাজ্য ওয়াকফ বোর্ডের নজরে আসায় ওয়াকফ বোর্ডে গত ২০ জুলাই ২০২০ তারিখ এক নোটিশ পাঠিয়ে জেলা শাসক এবং জেলা পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দিয়েছেন এই বেআইনি নির্মাণ কাজ বন্ধ করার জন্য। অল ইন্ডিয়া ইমামস কাউন্সিল ওয়াকফ বোর্ডের এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়ে দাবি জানাই এই বেআইনি নির্মাণ ভেঙে ফেলতে হবে এবং যে প্রাচীর ভেঙে বেআইনি দোকান ঘর নির্মাণ করা হয়েছে সেই প্রাচীর নির্মাণ করে দিতে হবে।

    জেলা সভাপতি একথাও বলেন ওয়াকাফ সম্পত্তিগুলির হেফাজত ও সংরক্ষণ করার দায়িত্ব রাজ্য সরকার ,ওয়াকাফ বোর্ড এবং জনসাধারণের । কোন সাহসে এই নির্মাণ হচ্ছে? কার মদদে এই দখলদারি?এইভাবে চলতে দিলে হয়ত আগামীতে ওয়াকাফ সম্পত্তির অস্তিত্বই থাকবে না।
    আরও জানান “রক্ষক যদি ভক্ষক হয় কে করিবে রক্ষা?”
    তিনি রাজ্য সরকার ও প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন—মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের অবিলম্বে হস্তক্ষেপ চাই।

    এই ওয়াকফ সম্পত্তির মোট পরিমাণ ছিল ১৮২ বিঘা। কংগ্রেস ও সিপিআইএম আমলে অনেক জায়গা জবর দখল হয়েছে। সিপিআইএম আমলের সভাধিপতি সচ্চিদানন্দ কান্ডারীর নেতৃত্বে জমি জবর দখল করে ১২৮ খানা দোকান ঘর নির্মাণ করা হয়। ঐ সময় অনেক আন্দোলনের ফলে ওয়াকফ বোর্ডে, জেলা প্রশাসন এবং জনপ্রতিনিধি মিলিত ভাবে আলোচনা সভার শেষে সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত হয় যতটা জায়গা জবর দখল হয়েছে সেটা বাদ দিয়ে অবশিষ্ট জায়গা প্রাচীর দিয়ে ঘেরা হবে। সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রাচীর দিয়ে ঘেরাও হয়।

    অল ইন্ডিয়া ইমামস কাউন্সিলের মুর্শিদাবাদ জেলা সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মুহাম্মাদ শহীদুল্লাহ সাহেব বলেন “আমরা জেলা প্রশাসন এবং ওয়াকফ বোর্ডের কাছে দাবি জানাচ্ছি এই বেআইনি নির্মাণ বন্ধ করে ভেঙে দিতে হবে। নির্দিষ্ট জায়গায় প্রাচীর তৈরি করে দিতে হবে। আমরা আরো দাবি জানাচ্ছি কারবালা ওয়াকফ সম্পত্তির বর্তমান কমিটি ভেঙে সৎ ও দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের নিয়ে নতুন কমিটি গঠন করতে হবে। যারা এই বেআইনি কাজ করেছে তাদের আইন অনুযায়ী উপযুক্ত শাস্তি দিতে হবে।

    এই অবৈধ নির্মাণ বন্ধের দাবি জানিয়েছেন SDPI এর রাজ্য সভাপতি তায়েদুল ইসলাম। তিনি অবিলম্বে এই নির্মাণ কাজ বন্ধ করা ও এই অবৈধ নির্মাণ কাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের শাস্তির দাবি জানান।