শহীদ বসন্ত বিশ্বাস স্মারক শ্রদ্ধাঞ্জলি

 

    শহীদ বসন্ত বিশ্বাস স্মারক সমিতি ‘র উদ্যোগে কোলকাতার কৃষ্ণপদ ঘোষ মেমোরিয়াল ট্রাস্ট হলে শহীদ বসন্ত বিশ্বাসের ১০৫ তম আত্মোৎসর্গ দিবস উপলক্ষ্যে বিংশ শতাব্দীর ২য় দশকের স্বাধীনতা সংগ্রামী শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন ও আলোচনা সভা আয়োজিত হয়। শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপন ও আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন প্রবীণ স্বাধীনতা সংগ্রামী শ্রী পূর্ণেন্দু প্রসাদ ভট্টাচার্য্য ,প্রাক্তন অধ্যাপক শ্রী শান্তিনাথ ঘোষ ,সাংবাদিক ও We are The Common People (WTCP) এর উপদেষ্টা শ্রী অপূর্ব দাস ,ডক্টর শিশুতোষ সামন্ত প্রমুখ।We are The Common People (WTCP)এর তরফ থেকে শ্রদ্ধাজ্ঞাপনে অংশগ্রহণ করেন সংগঠনের সম্পাদক শ্রী শুভজিৎ দত্তগুপ্ত ও সংগঠনের সদস্যা শ্রী ছন্দা দত্তগুপ্ত।
    ​ভারতবর্ষের স্বাধীনতা সংগ্রামে ৪১ জন বঙ্গসন্তানের ফাঁসি হয়েছিল শহীদ বসন্ত বিশ্বাস ছিল তাঁদের মধ্যে অন্যতম। বাংলা থেকে বহুদূরে পঞ্জাবের অম্বালা জেলে ২০বছর ৩মাস ৬দিনের মাথায় আত্মীয়, বন্ধু বান্ধবহীন দেশে কৃষক পরিবারের এই বিপ্লবী সন্তান বসন্ত কুমার বিশ্বাসের ফাঁসি হয় ১১ই মে ১৯১৫।যখন ১৬ বছর বয়স বসন্ত বিশ্বাস বিপ্লবের পথে পা বাড়ায় , যখন ধরা পড়েন তখন বয়স ১৯ বছর ২১ দিন। ১৭মে ১৯১৩ লাহোর বোমা বিস্ফোরণ কাণ্ডে অভিযুক্ত হন দিল্লির চাঁদনীচকে ও লাহোর গার্ডেনে যে দুটি শক্তিশালী বোমা ব্যবহার হয়েছিল সে দুটি বোমা বানিয়েছিল বাংলা চন্দননগরে বিপ্লবী গ্রুপের মণীন্দ্রনাথ নায়ক। বোমা দুটি কলকাতাতে আনেন নলিনী দত্ত॥ সেই দুটি বোমা চেক করে দেন বর্তমানে সুরেন্দ্রনাথ কলেজের অধ্যাপক সুরেশচন্দ্র এবং দিল্লিতে পৌঁছে দেন চন্দননগরের জ্যোতিষচন্দ্র সিংহ। পুলিশের শত অত্যাচার সহ্য করেও বসন্ত ছিল নির্বিকার ধরা পাড়ার পরও নিজের মুখে কোন দিন কিছু স্বীকার করেনি। দিল্লির দয়ার আদালতে বসন্ত সমেত ১১ জনের বিরুদ্ধে খুনের ষড়যন্ত্রের অভিযোগ আনা হয় বসন্ত সহ ৪ জনের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয় বাকিদের যাবজ্জীবন কারদণ্ড হয়।
    ১৯১৫ সালের ১১ই মে অম্বালা জেলে বসন্ত বিশ্বাস সহ চারজনের ফাঁসির আদেশ কার্যকর হয় । অমর শহীদ বসন্ত বিশ্বাস আজ মরেও অমর আজ ১১ই মে ২০১৯ বসন্ত বিশ্বাসের ১০৫ তম আত্মবলিদান দিবস। বসন্ত বিশ্বাসের জন্মভিটা পোড়াগাছায় নাদিয়া জেলায় নাকাশিপাড়ায় । আজও ভগ্নঅবস্থায় রয়েছে বসন্ত বিশ্বাসের বসতবাড়ি। আলোচনায় বক্তারা স্বাধীনতা সংগ্রামে বসন্ত বিশ্বাসের অবদানের কথা তুলে ধরে তার বিষয়ে সরকারী অবহেলার দিকটির কথাও তুলে ধরেন। বসন্ত বিশ্বাসের বসতবাড়ির রামের ঢোকার মুখে রয়েছে তাঁর একটি অবক্ষমূর্তি । বসন্ত বিশ্বাসের স্কুলের সামনে শহীদ বসন্তের স্মরণে একটি স্মৃতিস্তম্ভ রয়েছে যার উদ্বোধন করেছিলেন বিপ্লবী ডক্টর ভূপেন্দ্রনাথ দত্ত। কৃষ্ণনগরের রবীন্দ্রভবনের সামনে একটি শহীদ স্তম্ভ আছে বসন্তের নামে। কিন্তু বসন্তের স্মৃতিতে সরকারি ভাবে কোন অনুষ্ঠান হয় না স্বাধীনতার ৭২ বছর পরেও ।তাঁর স্মরণে দিল্লীতে ‘ বসন্ত বিশ্বাস রাজকীয় সর্বদয় বিদ্যালয় ‘ নামে স্কুল স্থাপন করা হয়েছিল তার নাম ও পরিবর্তন করা হয়েছে। সরকারী উদ্যোগ না থাকলেও সামাজিক সংগঠন গুলির মাধ্যমে আরো বেশী করে স্বাধীনতা সংগ্রামের চেতনা কে জাগরিত করাবার উদ্যোগের কথা তুলে ধরেন বক্তারা। দাবী ওঠে পাঠ্য তালিকার প্রকৃত ইতিহাসের সংযোজনের।