বাল্যবিবাহ বন্ধ ও শিশুদের বিকাশের জন্য ইন্ডিয়া বুক অব রেকর্ডে সম্মান পেলেন কালিয়াচকের যুবরাজ ত্রিবেদী

গোলাপগঞ্জ, নতুন গতি  :  ২০১২ সাল থেকে ১৫০টি’রও বেশি বাল্যবিবাহ বন্ধ ও শিশুদের বিকাশের জন্য ইন্ডিয়া বুক অব রেকর্ডে সম্মান পেলেন কালিয়াচকের এক শিক্ষাকর্মী যুবরাজ ত্রিবেদী ।  যদিও ওই সংস্থার পক্ষ থেকে তাকে সরাসরি দিল্লিতে না ডেকে বাড়িতেই কুরিয়ারের মাধ্যমে এই পুরষ্কার পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে।  পাশাপাশি ফোন করে ওই শিক্ষককে এই সম্মান জানানোর বিষয়ে সংস্থার পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।  করোনা সংক্রমনের জন্যেই এই ব্যবস্থা বলেই জানিয়েছেন ইন্ডিয়া বুক অব রেকর্ডে সম্মানে সম্মানিত হওয়া ওই শিক্ষক যুবরাজ ত্রিবেদী।  আর এই পুরস্কার পেয়ে রীতিমতো উচ্ছ্বাসিত হয়ে পড়েছেন ওই শিক্ষাকর্মী ও তার পরিবারের লোকেরা।  এদিন এলাকার প্রবীণ ব্যক্তিরা ওই শিক্ষাকর্মীর বাড়িতে এসে তাকে কুর্নিশ জানিয়েছেন।

    উল্লেখ্য,  কালিয়াচক ৩ ব্লকের চরিঅনন্তপুর এলাকার বাসিন্দা যুবরাজ ত্রিবেদী। পেশায় তিনি জৈনপুর হাই স্কুলের শিক্ষাকর্মী । পরিবারে স্ত্রী রাধা ত্রিবেদী,  ছয় মাসের এক পুত্র সন্তান সহ বৃদ্ধ বাবা-মা রয়েছেন।  কলেজে পড়ার সময় থেকে বিভিন্ন পথ নাটিকার মাধ্যমে বাল্যবিবাহ রোধ করার কাজ শুরু করেন যুবরাজবাবু।  ২০১২ সাল থেকে পুরোপুরি ময়দানে নেমে একাই বিভিন্ন বন্ধু-বান্ধবদের সহযোগিতা নিয়ে মালদায় বাল্যবিবাহ রোধে নেমে পড়েন তিনি।  যার কারণে অনেক সময় যুবরাজবাবুকে প্রতিহিংসার মুখে পড়তে হয়েছে। পঞ্চম থেকে নবম শ্রেণীর বিভিন্ন বয়সী ছাত্রীদের বাল্যবিবাহ রোধ করে এর আগেও রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে পুরস্কৃত হয়েছিলেন ওই শিক্ষাকর্মী ।  এরপরই তিনি ইন্ডিয়া বুক অব রেকর্ডে সম্মান পেয়েছেন।

    শিক্ষাকর্মী যুবরাজ ত্রিবেদী বলেন, শুধু বাল্যবিবাহ রোধ নয়, করোনা পরিস্থিতি অসহায় মানুষদের এই লকডাউনে দুয়ারে দুয়ারে রেশন পৌঁছে দেওয়া,  হাসপাতালে রুগী পরিজনদের লকডাউন পরিস্থিতিতে প্রতিদিন খাওয়ানো,  রক্তদান শিবির, গাছ রোপণ, ভাঙ্গন এলাকার দুঃস্থ পরিবারগুলিকে নানান ভাবে সহযোগিতা করা, গরিব পরিবারের অনেক মেয়েদের নিজের গাঁটের টাকা খরচ করে বিয়ের ব্যবস্থা করে দেওয়ার কাজ আমি করেছি।  ২০১২ সাল থেকে এখনো পর্যন্ত ১৫০টি’র টিরও বেশি মালদায় বাল্যবিবাহ রোধ করেছি।  এজন্য আমাকে অনেক রকম ভাবে প্রাণনাশের হুমকি পেতে হয়েছে। কিন্তু সব ভয়কে উপেক্ষা করে আমি এই সামাজিক কাজ করে চলেছি।  রাজ্য সরকার যেখানে বাল্যবিবাহ রোধে সবরকম প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিয়ে প্রচার চালাচ্ছে।  সেই পরিস্থিতিতে আমি গ্রামীণ এলাকার অল্প বয়সী ছাত্রীদের বাড়ি গিয়ে তাদের অভিভাবকের বাল্যবিবাহ রোধের ক্ষেত্রে বোঝানোর কাজ করে চলেছি।  দুর্গা পুজোর আগে অনলাইনের মাধ্যমে আমার এই সামাজিক কাজের নথি তুলে ধরে আবেদন জানিয়েছিলাম।  এরপরই আমাকে ইন্ডিয়া বুক অব রেকর্ড সম্মানের ক্ষেত্রে বেছে নেওয়া হয়েছে।