|
---|
সে দিন বিকেলে ফোনটা পেয়ে অবাকই হয়েছিলেন মেদিনীপুরের এক তৃণমূলকর্মী। ঘাবড়েও গিয়েছিলেন। ফোনের ওপারে যে দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়! গোড়াতেই তিনি বলেন, ‘‘আমি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলছি…।’’অভিষেকের ফোন যাঁর কাছে এসেছিল, সেই দীপঙ্কর ষণ্ণিগ্রাহী মেদিনীপুর শহরের ১০ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল সভাপতি। তিনি মেদিনীপুর কলেজিয়েট স্কুলের (বালক) শিক্ষকও। দলের এক সূত্রে খবর, দিন কয়েক আগে দীপঙ্করকে ফোন করে অভিষেক মেদিনীপুরে দলের সাংগঠনিক পরিস্থিতির খোঁজ নিয়েছেন। দীপঙ্কর বলছেন, ‘‘অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় যা যা জানতে চেয়েছিলেন, সবই জানিয়েছি।’’ তাঁর কথায়, ‘‘আমি যে অস্বস্তি বোধ করছিলাম, তা অভিষেক বুঝতে পারেন। নিজে থেকেই বললেন, নির্দ্বিধায় কথা বলবেন।’’মেদিনীপুরে ২৫টি ওয়ার্ড। অভিষেক কেন দীপঙ্করকেই ফোন করলেন, তা নিয়ে দলে জল্পনা রয়েছে। তবে দীপঙ্কর যে ওয়ার্ডের তৃণমূল সভাপতি, সেই ১০ নম্বরে এ বার পুরভোটে জিতেছে সিপিএম। তৃণমূলের প্রার্থী নিয়ে অসন্তোষ ছিল। দীপঙ্করেরা প্রার্থী চেয়েছিলেন সঙ্গীতা পালকে। শুরুতে ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তালিকায় সঙ্গীতার নামই ছিল। পরে রাজ্য নেতৃত্বের সই করে পাঠানো তালিকায় নাম আসে মলি মহাপাত্রের। মলি এলাকার প্রাক্তন কাউন্সিলরের স্ত্রী। দলীয় নেতৃত্বের কাছে দীপঙ্করের দাবি, ভোটের সময়ে তাঁকে থানায় ডেকে পুলিশ প্রচারে নামতে বলেছিল। পাল্টা দীপঙ্করও পুলিশকে শুনিয়েছিলেন, তিনি স্কুলের শিক্ষক। শহরে তাঁর সম্মান আছে। এ ভাবে থানায় ডাকার দরকার ছিল না।এ সব নিয়ে অভিষেকের সঙ্গে কথা হয়েছে কি না, খোলসা করেননি দীপঙ্কর। তিনি বলেন, ‘‘আমরা দলের অনুগত কর্মী। দলের বিষয়ে কিছু বলার থাকলে দলের মধ্যেই বলি। বাইরে নয়।’’ দলের অন্দরের খবর, মেদিনীপুরে তৃণমূলের বিভাজন রেখা স্পষ্ট। এক দিকে বিধায়ক জুন মালিয়া, পুরপ্রধান সৌমেন খানের অনুগামীরা, অন্য দিকে জেলা সভাপতি সুজয় হাজরা, শহর সভাপতি বিশ্বনাথ পান্ডবরা। দীপঙ্কর অবশ্য দুই গোষ্ঠীরই কাছের লোক। রাজনৈতিক মহলের মতে, এলাকা ভিত্তিক দলের হাল বুঝতেই কর্মীদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলছেন অভিষেক।