প্রতিবন্ধকতা নিয়ে ২০২২ ডাফ অলিম্পিকে ভারতকে টেবিল টেনিসে প্রতিনিধিত্ব করছেন অভিকশা

নিজস্ব সংবাদদাতা : পৃথিবীতে নিজস্ব জীবনে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার জন্য প্রত্যেক মানুষ আপামোর লড়াই করে চলেছে। এই লড়াই একজন স্বাভাবিক মানুষের জন্য কতটা কঠিন তা আমরা জানি। তাহলে একবার ভেবে দেখুন বিশেষভাবে সক্ষম যে মানুষ জন রয়েছেন তাদের কাছে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার লড়াইটা ঠিক কতটা কঠিন হতে পারে! আজ এমনই এক কঠিন লড়াইয়ের সাক্ষী হয়ে রইল। জন্ম থেকেই শ্রবণ প্রতিবন্ধকতা নিয়ে বড় হয়ে উঠেছে হুগলি উত্তরপাড়া মেয়ে অভিকশা ব্যানার্জী। শুনতে না পাবার জন্য কথাও বলতে পারেনা সে। তাতে কি হয়েছে, প্রতিবন্ধকতা কি কোন মানুষকে এগিয়ে যাওয়া থেকে আটকাতে পেরেছে? কখনোই না। ২০২২ ডাফ অলিম্পিকে ভারতকে টেবিল টেনিসে প্রতিনিধিত্ব করছেন অভিকশা। ব্রাজিলের সাও পাওলোতে অনুষ্ঠিত হবে ২০২২ ডাফ অলিম্পিক। সেখানে ভারতের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করছেন হুগলির উত্তরপাড়ার ছোট্ট মেয়েটি।খেলাধুলার পাশাপাশি পড়াশোনা ও শিল্পকলাতেও বিশেষ আগ্রহী অভিকশা।

    অভিকশার মা বলেন, জন্ম থেকেই শ্রবণ প্রতিবন্ধী অভিকশা। মেয়েকে নিজের পায়ে দাঁড় করানোর জন্য প্রথমে উত্তরপাড়ারই একটি জিমনস্টিক কেন্দ্রে ভর্তি করা হয় তাকে। জিমনস্টিক এর সমস্ত আদব-কায়দা খুব সহজেই রপ্ত করে ফেললেও শ্রবণ প্রতিবন্ধকতার জন্য বারবার হেনস্থা হতে হয়েছিল তাকে। তারপর থেকে জিমনস্টিক ছেড়ে টেবিল টেনিসে আশা। উত্তরপাড়ার মহুয়া ক্লাবের অশোক ভট্টাচার্যর কাছে টেবিল টেনিসে প্রথম হাতেখড়ি। ওয়েস্টবেঙ্গল স্পোর্টস অ্যাসোসিয়েশন ফর ডাফ প্রথমে অভিকশাকে সব জুনিয়ার খেলতে পাঠায়। সেখানে প্রতিটি বিভাগে গোল্ড মেডেল পায় সে। এর পরবর্তীতে রাঁচিতে ও পরে চেন্নাইতে সিনিয়র সাব জুনিয়রে খুব অল্প বয়সে খেলার জন্য চান্স পেয়ে সেখানেও অসম্ভব ভালো ফল করে সুনাম অর্জন করে অভিকশা। ২০১৯ সে চেন্নাইয়ের সিনিয়র খেলায় তৃতীয় স্থান অর্জন করে। ২০১৯ সে এশিয়ান গেমস এ চান্স পায় । কিন্তু করোনা মহামারীর জন্য সেই খেলা বাতিল হয়ে যায়।

    অভিকশার বাবা বলেন, ডাফ অলিম্পিকের জন্য বাংলা থেকে দিল্লিতে নাম পাঠানো হয়। সেখানে ৬টি রাজ্য থেকে ১৪ জন প্রতিযোগী পৌঁছায়। অভিকশা সমস্ত রাজ্যের খেলোয়াড়দের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে প্রথম আট এ উঠে আসে। সেখান থেকে সবাইকে পিছনে ফেলে তৃতীয় স্থান অর্জন করে ব্রাজিল যাওয়ার ছাড়পত্র পায়।অভিকশা উত্তরপাড়ার উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়র দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী। এপ্রিল মাসে তার উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা রয়েছে। এমন সময় জীবনের দুটি কঠিন লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত সে।