এক যুগ পর ফের কুমির গণনা শুরু হল সুন্দরবনে

হাসান লস্কর, সুন্দরবনঃ বারো বছর পর আবার কুমির গণনা শুরু হয়েছে সুন্দরবনে। ভারতীয় সুন্দরবনে মোট কতগুলি কুমির রয়েছে সেই সংখ্যা নির্ধারণে এবার উদ্যোগ নিয়েছে সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্প। ২০১২ সালের পর আরও একবার সুন্দরবনে কুমির গননার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বিগত এক বছরে বাঘ, বনবিড়াল, মেছো বিড়ালের সংখ্যা নির্ধারণ করেছে বন দফতর। এবার সুন্দরবোনের নোনা জলে ঠিক কতগুলি কুমির রয়েছে সেই সংখ্যা জানার চেষ্টা করতে উদ্যোগ গ্রহণ করেছে বনদপ্তর। তিনদিন ধরে সুন্দরবনের বিভিন্ন প্রান্তে ঘুরে ঘুরে বনকর্মীও কুমির বিশেষজ্ঞরা এই সংখ্যা নির্ধারণ করার কাজ ইতিমধ্যেই শুরু করে দিয়েছেন।

    আগেরবার সুন্দরবনের বিভিন্ন প্রান্তে মোট ৩১ টি দল তিনদিন ব্যাপী ঘুরে ঘুরে কুমির গননার কাজ করেছিল। তবে এবার মোট ২২ টি দল এই কাজ ইতিমধ্যেই শুরু করেছে। ইতিমধ্যেই একদিন সুন্দরবনের গহন অরন্যে কুমিরের সংখ্যা নির্ধারণ করতে প্রায় শতাধিক বনকর্মী ও কুমির বিশেষজ্ঞরা তথ্য সংগ্রহ করছেন। বৃহস্পতি ও শুক্রবার আবহাওয়া খারাপ থাকার কারণে এই দুইদিন স্থগিত রাখা হয়েছে গননার কাজ। আবহাওয়ার উন্নতি হলে এই কাজ আবার করা হবে বলে জানিয়েছে বন দফতর।

    বন দফতর সূত্রের খবর গত কুমির সুমারিতে ভারতীয় সুন্দরবনে ১৪১ টি কুমিরের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গিয়েছিল। তবে একেবারে ছোট কুমিরদের গণনা থেকে বাদ রাখা হয়েছিল। বিগত কয়েক বছরে ভগবৎপুর কুমির প্রকল্প থেকে অনেক কুমিরকে সুন্দরবনের নদী, খাঁড়িতে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। ফলে এবার যে কুমিরের সংখ্যাও সুন্দরবনে বাড়তে চলেছে তার প্রাথমিক অনুমান মিলেছে। একদিনের গননায় প্রচুর কুমিরের দর্শন মিলেছে বলেই জানিয়েছে বন দফতর।

    মূলত খালি চোখে দেখেই কুমিরের গণনা করা হচ্ছে। পাশাপাশি কোথাও কুমিরের উপস্থিতি বিশেষজ্ঞরা অনুভব করলে সেই সংখ্যাও তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে। এছাড়াও যে এলাকায় কুমিরের দেখা মিলছে সেই এলাকার অক্ষাংশ, দ্রাঘিমাংশ এবং জলের তাপমাত্রা, লবনতার পরিমাণ সবই রেকর্ড করা হবে। সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্পের ফিল্ড ডিরেক্টর জোন্স জাস্টিন বলেন, “ সুন্দরবনের ৪২০০ কিমি এলাকা জুড়েই এই গননার কাজ শুরু হয়েছে। আবহাওয়া খারাপ হওয়ায় আপাতত মাঝপথেই গননার কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে। আবহাওয়ার উন্নতি হলে ফের এই কাজ শুরু হবে।” আর এমনই সুন্দর উদ্যোগ গ্রহণ করায় সুন্দরবন প্রেমীরা সাধুবাদ জানাচ্ছেন।