গত দু’বছর পর এবছর হেতমপুর রাজবাড়ির রথ বের হবে রাস্তায়

নিজস্ব সংবাদদাতা : রথযাত্রায় বীরভূমের মাটিতে যে সকল রথ দেখা যায় তার মধ্যে অন্যতম ঐতিহ্যবাহী একটি রথ হল হেতমপুর রাজবাড়ির রথ। এই রথ আনা হয় সুদূর ইংল্যান্ড থেকে। শতাব্দী প্রাচীন এই রথ তৈরি হয়েছে সম্পূর্ণ পিতল দিয়ে। রথটি তৈরি করে ইংল্যান্ডের নামকরা স্টুয়ার্ট কোম্পানি। এই রথ এক সময় ঘোড়ায় দিয়ে টানা হত। যদিও সে সব এখন অতীত। তবে ঐতিহ্যবাহী এই রথে এখনও রয়ে গিয়েছে স্টিয়ারিং, ব্রেক, সকার ইত্যাদি। হেতমপুর রাজবাড়ির মহারাজা রামরঞ্জন চক্রবর্তী ছিলেন গৌরাঙ্গ মন্দিরের প্রতিষ্ঠাতা। এই মন্দির থেকেই বের হতো রাজপরিবারের রথ।

    পাশাপাশি রথযাত্রাকে কেন্দ্র করে একসময় যাত্রা, নাটক, কবিগান ছাড়াও বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন হত। রথের দিন রাজবাড়ির দরজা সকলের জন্য খুলে দেওয়া হত। পরে হেতমপুর রাজপরিবারের আর্থিক অবস্থা খারাপ হওয়ার কারণে ২০০৭ সালে রাজপরিবারের গৌরাঙ্গ মন্দির গৌরাঙ্গ মঠের হাতে তুলে দেন রাজপরিবারের সদস্য মাধবী রঞ্জন চক্রবর্তী। তারপর থেকেই গৌরাঙ্গ মঠ গৌরাঙ্গ মন্দির ও রথ পরিচালনা করে আসছে। যদিও এই ঐতিহ্যবাহী শতাব্দী প্রাচীন রথ দেখভালের দায়িত্ব রয়েছে হেতমপুর রাজ পরিবারের উপর।গত দু’বছর করোনার কারণে রথের চাকা রাস্তায় গড়ায়নি। সরকারি বিধিনিষেধ থাকায় রীতি মেনে শুধুমাত্র তাদের নিজেদের থাকা স্যান্ট্রো গাড়ি করে মন্দির প্রাঙ্গণ পরিক্রমা করেছিল। কিন্তু এবছর সংক্রমণ কমতেই রথ বের হবে রাস্তায়। বুধবার শতাব্দীপ্রাচীন সেই পিতলের রথ রাজবড়ি থেকে নিয়ে আসা হয় গৌরাঙ্গ মন্দির প্রাঙ্গণে। চলছে মোছামুছি ও রং করার কাজ। শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি চলছে জোর কদমে। গ্রাম্যমেলা বসার জন্য মন্দির প্রাঙ্গণে ব্যবস্থা করেছে গৌরাঙ্গ মঠ কর্তৃপক্ষ। গৌরাঙ্গ মঠের অধ্যক্ষ ভক্তি বারিদি ত্রিদন্ডী মহারাজ জানান, গত দু’বছর ধরে করোনা সংক্রমণ থাকার কারণে সব রকম অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে লাগাম টানা হয়েছিল প্রশাসনিক নির্দেশ মেনে। তবে এই বছর আগের মতোই রথ যাত্রার আয়োজন হবে মঠ প্রাঙ্গণে।