পাওনা টাকা চাওয়াকে কেন্দ্র করে তৃণমূল কর্মীকে মারধরের অভিযোগ কংগ্রেসের বিরুদ্ধে, তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব বলে পাল্টা কটাক্ষ কংগ্রেসের

নতুন গতি ওয়েব ডেস্ক: ভোটের আগে ফের রাজনৈতিক তরজা শুরু হল মালদার হরিশ্চন্দ্রপুর এ। পাওনা টাকা চাওয়াকে নিয়ে কেন্দ্র করে বিবাদ শুরু হলেও তাতে লেগে গেল রাজনৈতিক রং। তৃণমূল কর্মীকে মারধর এবং ছিনতাইয়ের অভিযোগ উঠলো কংগ্রেসের বিরুদ্ধে।আক্রান্ত ব্যক্তি আশঙ্কাজনক অবস্থায় মালদার চাঁচল সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল চিকাৎসাধীন।

    মালদার হরিশচন্দ্রপুর থানা এলাকার রাড়িয়াল গ্রামের এক তৃণমূল কর্মীকে মারধরের ঘটনা সামনে এলো। আক্রান্ত ব্যক্তি মহম্মদ বেলাল (৪৭) গতকাল বুধবার পাওনা টাকা চাইতে গিয়ে বিবাদে জড়িয়ে পড়েন। এবং সেই বিবাদের জেরেই বৃহস্পতিবার সকালে তার উপর লোহার রড, ডাঙ নিয়ে চড়াও হয় দুষ্কৃতীরা। এই ঘটনায় রাসেদ আলী, বাসেদ আলী, সামজেদ আলী, সাগর আলী, শাহনওয়াজ আলী নামে পাঁচ ব্যক্তির নাম উঠে এসেছে। স্থানীয় সূত্রে খবর উক্ত ব্যক্তিদের থেকে ১৫ হাজার টাকা পেত মহম্মদ বেলাল এবং সেই টাকা চাইতে গিয়েই বিবাদের সূত্রপাত। এরপর স্থানীয়রা মিলে বকেয়া টাকা পরিশোধের সময়সীমা বাড়িয়ে দিলেও ক্ষান্ত হয়নি দুষ্কৃতীরা। পরিবার সূত্রে জানা যায় বুধবার সন্ধ্যা থেকেই মারধরের ছক কষছিল। পরদিন বৃহস্পতিবার সকালে টাকা নিয়ে ফেরার পথে রারিয়াল প্রাইমারি স্কুলের সামনে বেলালের উপর চড়াও হয়। ডাঙ, লোহার রড দিয়ে তাকে মারধর করা হয়। তার স্ত্রী বাধা দিতে এলে তার উপরও আঘাত হানা হয়। এবং শুধু তাই নয় মালিকের ১ লক্ষ৮০ হাজার টাকা ও তার স্ত্রীর গলার দেড় ভরি সোনার হার ছিনিয়ে নিয়ে যায় দুষ্কৃতীরা। এই ঘটনার পর দুজনকে হরিশচন্দ্রপুর গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে গেলে তার স্ত্রীকে ছেড়ে দিলেও বেলালের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে মালদার চাঁচল সুপার স্পেশালিস্ট হাসপাতালে রেফার করা হয় বলে খবর।

    স্থানীয় সূত্রে খবর হামলাকারীরা কংগ্রেসের কর্মী। বকেয়া টাকা নিয়ে বিবাদের সূত্রপাত হলেও তাতেও রাজনৈতিক রং লেগেছে, হরিশ্চন্দ্রপুর রাজনৈতিক মহল এখন যথেষ্টই উত্তপ্ত। কংগ্রেস এই দায় অস্বীকার করলেও শুরু হয়ে গিয়েছে তৃণমূল-কংগ্রেস রাজনৈতিক তরজা। মহম্মদ বেলালের দাদা সাঞ্জুল আলমের বক্তব্য থেকে জানা যায়, “গতকাল পাওনা টাকা চাইতে গিয়ে বিবাদের শুরু হয়। স্থানীয় লোকের মধ্যস্থতায় ঝামেলা মিটে গেলেও পরদিন সকালে তারা ভাইয়ের উপর আক্রমণ করে। ভাইয়ের কাছে ১,৮০০০০ টাকা ছিল সেটা এবং তার স্ত্রীর দেড় ভরি সোনার হার ছিনিয়ে নিয়ে যায়। আমরা এই ঘটনার যথাযথ বিচার চাইছি। তৃণমূল ব্লক সভাপতি মানিক দাস কংগ্রসকে কটাক্ষ করে বলেছেন ভোটের আগে এসব করা কংগ্রেসের কালচার। তৃণমূলের কালচার নয় এটা। আমার লোক টাকা পেত, সেটা চাইতে গিয়ে তাকে মারধর করা হয়েছে। আমরা আইনি ব্যবস্থা নেব। সামনে ভোট, তার আগে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা হচ্ছে।

    যদিও এই ঘটনার দায় ঝেড়ে ফেলে তৃণমূলের গোষ্ঠী দ্বন্দকে কটাক্ষ করেছেন হরিশ্চন্দ্রপুর ব্লক কংগ্রেস সভাপতি বিমান বিহারী বসাক। তিনি বলেছেন, গতকাল একটা ঝামেলা হয়েছে এবং তার সূত্র ধরে আজ সকালে একটা ধাক্কাধাক্কি হয়েছে। তৃণমূল বলছে কংগ্রেস তার মাটি হারিয়ে ফেলেছে বলে এসব করছে। হরিশচন্দ্রপুরের মাটিতে কংগ্রেস শেষ কথা বলবে। এখানে কংগ্রেস বিধায়ক আছে এবং আগামী দিনেও থাকবে। তারা মালদায় জেতার আশা করে কীভাবে? নিজেদের গোষ্ঠী দ্বন্দ নিয়ে নিজেরাই জর্জরিত। আগে নিজেদের ঝামেলা ঠিক করুক তারপর ভোটে দাঁড়ানোর কথা ভাববে। এছাড়াও তিনি তৃণমূলকে কাটমানির সরকার বলে কটাক্ষ করতেও ছাড়েননি। তোলাবাজি, এবং আম্ফান দুর্নীতি নিয়েও সরব হয়েছেন তিনি। ভোটের আগে ফের উত্তপ্ত হল হরিশ্চন্দ্রপুর এর রাজনৈতিক মহল। বকেয়া টাকা পাওনা নিয়ে বিবাদের সূত্রপাত হলেও তা এখন রাজনৈতিক তরজায় পৌঁছে গেছে।