আদিবাসীদের শিকার উৎসবে মারা পড়ে একটি প্রাপ্ত বয়স্ক বাঘ

নিজস্ব প্রতিবেদক:- দক্ষিণবঙ্গের জঙ্গল অধ্যুষিত এলাকা পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া। এই জেলা গুলির বিস্তীর্ণ অঞ্চলে বসবাস প্রাচীণ জনজাতি আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষের। যুগযুগ ধরে জঙ্গলের উপর নির্ভর করেই জীবন যাপন করে চলেছেন এই সব জনজাতির মানুষ। একদিকে বন রক্ষায় বনদফতরের নানা পদক্ষেপ, অন্যদিকে একটা সময়ে জঙ্গলে মাওবাদীদের অবস্থান, জঙ্গল রক্ষায় অনেকখানি ভুমিকা পালন করেছে। যার ফলে বেড়েছে গাছপালা ও জঙ্গলের বিস্তার, আর তার সাথে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে বন্য প্রাণীর সংখ্যা। যে কারণে পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রামের বিস্তীর্ণ জঙ্গলে ঠিক এই সময়ে ঢুকে পড়েছিল রয়েল বেঙ্গল টাইগার। বিশেষজ্ঞদের মতে, যেখানে পর্যাপ্ত পরিমাণে খাদ্য থাকে, সেখানেই অবস্থান করে হিংস্র পশু (টাইগার)।প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালের আজকের দিনেই ১৪ ই এপ্রিল মেদিনীপুর বন বিভাগের বাঘঘোরার জঙ্গলে আদিবাসীদের শিকার উৎসবে মারা পড়ে একটি প্রাপ্ত বয়স্ক বাঘ (royal bengal tiger)। বিগত কয়েক বছরে এই সমস্ত জঙ্গলে গাছপালার সাথে বেড়েছে বন্য প্রাণী অর্থাৎ বনশুকর, শিয়াল, হরিণ, খরগোশ সহ বিভিন্ন প্রাণী। কিন্তু একশ্রেণীর চোরা কারবারি যেমন জঙ্গলের গাছ কেটে কাঠ পাচারের অসাধু কারবার চালাচ্ছে। তেমনই আদিবাসীদের শিকার উৎসবের সংস্কৃতির ফলে মারা পড়ছে বন্যপ্রাণী। যার প্রভাব শুধু জঙ্গলে পড়ছে না, পড়ছে পরিবেশে।প্রতি বছরই জঙ্গল ও বন্যপ্রাণী বাঁচাতে বিভিন্ন ধরনের সচেতনতা মূলক প্রচার, সেমিনার, পথসভা করে চলেছে বন দফতর। তাতে হয়ত সামান্য হলেও কমেছে বন্যপ্রাণী হত্যালীলা। কিছুটা হলেও আটকানো গেছে জঙ্গলে আগুন লাগানো। কিন্তু এখনও তাতে সেই সফলতা পায়নি বন বিভাগ।বন্যপ্রাণ সংরক্ষণ আইন বলছে, বন্যপ্রাণী হত্যা আইনত অপরাধ। আবার ধর্মীয় সংস্কৃতিতে আঘাত করাও উচিৎ নয়। তাই এবার বন ও বন্যপ্রাণ রক্ষায় আদিবাসী জনজাতির মানুষদের সচেতন করতে আদিবাসী সাংস্কৃতিক বিষয়কে হাতিয়ার করল বন দফতর। মেদিনীপুর সদর ব্লকের গুড়গুড়িপাল থানা ও বন দফতরের যৌথ উদ্যোগে এবার পুরুলিয়ার ছৌনৃত্য এর মাধ্যমে বন ও বন্যপ্রাণ রক্ষায় সচেততামূলক প্রচারাভিযান চালানো হল।