|
---|
নিজস্ব প্রতিবেদক:- ৩১ মার্চ অর্থাৎ বৃহস্পতিবার প্রয়াত হয়েছেন রাষ্ট্রপতি পুরস্কার প্রাপ্ত বীরভূমের শোলা শিল্পী অনন্ত মালাকার। তিনি ছিলেন বীরভূমের কীর্ণাহারের বাসিন্দা। দীর্ঘদিন ধরেই হৃদযন্ত্রের সমস্যা এবং পায়ে সংক্রমণজনিত সমস্যায় ভুগছিলেন। এর পরেই গত বৃহস্পতিবার সকালে ৮১ বছর বয়সে তিনি প্রয়াত হন।রাষ্ট্রপতি পুরস্কার প্রাপ্ত এই শিল্পীর শেষ জীবনটা খুব একটা সুখের কাটেনি। শেষ জীবনেও তিনি শিল্পী ভাতা অথবা লকডাউনের সময় রেশনটুকু পাননি বলে জানিয়েছিলেন। তবে এই নিয়ে অবশ্য তিনি কাউকে দোষারোপ করতে চাননি। কিন্তু শেষ জীবন তার সমস্যার মধ্য দিয়েই পার হয়েছে তা স্পষ্ট। পাশাপাশি তিনি তার শেষ সাক্ষাৎকারে দুঃখ প্রকাশ করেছিলেন, বর্তমানে কোন সরকারি তার খোঁজ রাখে না।অথচ এই শিল্পী একসময় নিজের হাতের কাজের জন্য দেশের সামনে পরিচিতি লাভ করেছিলেন। তার শিল্পকর্মের জন্য তিনি ১৯৭০ সালে পেয়েছিলেন রাষ্ট্রপতি পুরস্কার। সেই সময় তার হাতে রাষ্ট্রপতি পুরস্কার তুলে দিয়েছিলেন তৎকালীন রাষ্ট্রপতি ভিভি গীরি। এছাড়াও তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী তাকে বিশেষ পুরস্কারে পুরস্কৃত করেছিলেন। দেশের ২৫তম স্বাধীনতা দিবসে শোলার বৃহৎ দুর্গা প্রতিমা নির্মাণের জন্য তিনি এই পুরস্কার পেয়েছিলেন। এ ছাড়াও দেশ-বিদেশের বিভিন্ন পুরস্কার তার ঝুলিতে এসেছিল তার জীবিতকালে। অন্যদিকে ২০০৪ সালে দেশের তৎকালীন উপরাষ্ট্রপতি ভৈরোঁ সিং শেখাওয়াত তাকে শিল্পগুরু উপাধিতে ভূষিত করেছিলেন। এর পাশাপাশি তার শিল্পকলা প্রদর্শিত হয়েছে মুম্বইয়ের ছত্রপতি শিবাজি সংগ্রহশালা, দিল্লির জাতীয় সংগ্রহশালা, কলকাতার বিড়লা আকাদেমি, আশুতোষ সংগ্রহশালা, ন্যাশনাল কাউন্সিল অফ সাইন্স মিউজিয়াম সহ দেশের একাধিক সংগ্রহশালায়।দেশের পাশাপাশি বিদেশের মাটিতেও তিনি তার শিল্পকলার নিদর্শন রেখেছেন। ১৯৭৮ সালে তিনি রাশিয়ায় গিয়েছিলেন এবং সেখানে লেলিনের শোলার মূর্তি তৈরি করেছিলেন। এর জন্য তিনি একটি সোনার ঘড়ি উপহার পেয়েছিলেন তৎকালীন সোভিয়েত প্রিমিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যালেক্সেই কসয়াগিনের পক্ষ থেকে। পাশাপাশি সদ্য প্রয়াত বীরভূমের এই রাষ্ট্রপতি পুরস্কার প্রাপ্ত শোলা শিল্পী অনন্ত মালাকার তাইওয়ান, আমেরিকার নিউইয়র্ক, ওয়াশিংটন ডিসি, নিউজার্সি, রাশিয়ার মস্কো, কানাডার টোরেন্টোর মত বিদেশের বিভিন্ন জায়গায় নিজের প্রদর্শনী দেখিয়েছিলেন এবং বিভিন্ন দেশের তরফ থেকে বিভিন্ন পুরস্কারে পুরস্কৃত হয়েছিলেন।