যত সময় ঘনাচ্ছে, ততই ঘূর্ণিঝড় তৈরির সম্ভাবনা বাড়ছে

নতুন গতি নিউজ ডেস্ক: সাইক্লোন কি সত্যি সত্যিই ধেয়ে আসছে? যত সময় ঘনাচ্ছে, ততই ঘূর্ণিঝড় তৈরির সম্ভাবনা বাড়ছে। যদিও এখনই ঘূর্ণিঝড় নিয়ে স্পষ্ট করে কোনও বার্তা দেয়নি হাওয়া অফিস। মনে করা হচ্ছে, দক্ষিণ আন্দামান সাগরে তৈরি ঘূর্ণাবর্ত নিম্নচাপে পরিণত হয়ে যদি ঘূর্ণিঝড়ে রূপান্তরিত হয়, তাহলে আগামী সপ্তাহেই আছড়ে পড়তে পারে। কিন্তু, কোথায় তাণ্ডবলীলা চালাবে এই ঘূর্ণিঝড়? কলকাতায় কেমন প্রভাব পড়বে? এ প্রসঙ্গে এই সময় ডিজিটালে মুখ খুললেন আবহবিদ সুজীব কর।

    ঘূর্ণিঝড় হলে কলকাতায় কী প্রভাব?

    আবহবিদ সুজীব কর জানিয়েছেন, ”কলকাতায় ঝড়-বৃষ্টি হবে। ব্যাপক পরিমাণে ক্ষয়ক্ষতি হবে না। সবে সাইক্লোনটা তৈরি হয়েছে। এখনও ২৭০০ কিমি দূরে রয়েছে। এত আগে আন্দাজ করা মুশকিল। কলকাতায় ঝড়ের বেগ হতে পারে ঘণ্টায় ৬০-৭০ কিমি। ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হবে।”

    সাইক্লোনের ল্যান্ডফল কোথায় হবে?

    এই প্রসঙ্গে সুজীব কর জানিয়েছেন, ”বাংলায় সাইক্লোনের ল্যান্ডফল হবে না। সম্ভবত বাংলাদেশের দিকে সরে যাবে। পশ্চিমবঙ্গ-বাংলাদেশ সীমান্ত বা ওডিশা-পশ্চিমবঙ্গ সীমানায় ল্যান্ডফলের সম্ভাবনা রয়েছে।”

    IMD-র ডিরেক্টর জেনারেল মৃত্যুঞ্জয় মহাপাত্র জানিয়েছেন,”ল্যান্ডফল নিয়ে এখনও পূর্বাভাস নেই। কোন এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হবে, তা এখনই স্পষ্ট নয়। পরিস্থিতির দিকে নজর রাখা হচ্ছে।সাধারণত দুটি সময়ে ঘূর্ণিঝড় তৈরি হয়। একটা প্রাক বর্ষার সময়, অর্থাৎ, মার্চ-এপ্রিল-মে। আরেকটা বর্ষার পর, অর্থাৎ অক্টোবর-নভেম্বর-ডিসেম্বর। বেশিরভাগ ঘূর্ণিঝড় হয় মে মাসে ও নভেম্বরের মধ্যে। মে মাসে ঘূর্ণিঝড়ের সম্ভাবনা পুরোপুরি উড়িয়ে দেওয়া যায় না।” IMD-র বিজ্ঞানী আর কে জেনামনি বলেছেন, ”৬ মে নিম্নচাপ তৈরি হবে। এরপর তা শক্তি সঞ্চয় করে আরও ঘনীভূত হবে। দক্ষিণ আন্দামান ও বঙ্গোপসাগর সংলগ্ন এলাকায় সতর্ক করা হচ্ছে। ওই অঞ্চলে মৎস্যজীবীদের মূলত না যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, কেননা আবহাওয়ায় অনেক বদল ঘটবে।” জানা যাচ্ছে, নিম্নচাপ ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হলে, তার নাম হবে ‘অশনি’।

    এদিকে, ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কায় আগেভাগেই প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে ওডিশা সরকার। বিগত কয়েক বছরে একাধিক ঘূর্ণিঝড়ের বীভৎসতার সাক্ষী থেকেছে বাংলার এই পড়শি রাজ্য। এই প্রসঙ্গে ওডিশার মুখ্যসচিব এস সি মহাপাত্র বলেছেন, ”ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় রাজ্য তৈরি। ক্ষয়ক্ষতি কী হতে পারে, সে ব্যাপারে জেলাশাসকদের তৎপর করা হয়েছে।”

    উল্লেখ্য, গত দু’ বছরে মে মাসে দুটি ঘূর্ণিঝড়ের মুখোমুখি হয়েছে বাংলা। ২০২০ সালে প্রবল ঘূর্ণিঝড় আমফানের তাণ্ডবে তছনছ হয়ে গিয়েছিল রাজ্যের একটা অংশ। এর পরের বছর ২০২১ সালে ঘূর্ণিঝড় ইয়াস তাণ্ডব চালায়।