বিশেষ শিবির করতে গিয়ে গ্রামবাসীদের বিক্ষোভের মুখে বাঁকুড়া জেলা প্রশাসন

নিজস্ব প্রতিবেদক:- দুয়ারে সরকার’ প্রকল্পের বিশেষ শিবির করতে গিয়ে গ্রামবাসীদের বিক্ষোভের মুখে বাঁকুড়া জেলা প্রশাসন। বৃহস্পতিবার ছাতনা ব্লকের ধতলা গ্রামে আয়োজিত দুয়ারে সরকার কর্মসূচির ওই বিশেষ শিবিরে যাওয়ার পথে সরকারি কর্মীদের ঘিরে বিক্ষোভ দেখালেন গ্রামবাসীরা। প্রায় আড়াই ঘণ্টা ধরে চলে তা। শেষমেশ প্রশাসনের আশ্বাসে গ্রামবাসীরা বিক্ষোভ তুলে নিলে শুরু হয় দুয়ারে সরকার শিবির।বিক্ষোভকারী গ্রামবাসীদের বক্তব্য, ধতলা বাঁকুড়া জেলার ছাতনা ব্লকের একেবারে শেষ সীমানায়। গ্রামের অধিকাংশ পরিবারই আদিবাসী সাঁওতাল সম্প্রদায়ের। গ্রামে পাকা রাস্তা নেই। রাস্তা কাঁচা মাটির। স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েতের উদ্যোগে আশপাশের গ্রামের রাস্তায় সৌরবাতি বসানো হলেও ধতলায় আলো নেই। গ্রামে নলবাহিত পানীয় জলের জন্য পাইপ বসানো হলেও তা দিয়ে গ্রামে জল যায় না। বার বার প্রশাসনকে জানানো সত্ত্বেও মেরামত করা হয়নি গ্রামের বিকল নলকূপগুলি। গ্রামের একমাত্র আইসিডিএস কেন্দ্রটিরও বেহাল দশা। গ্রামে গভীর নলকূপ বসানো, পুকুর সংস্কার, স্নান ঘাট ও শ্মশান ঘাট নির্মাণের ব্যাপারেও স্থানীয় প্রশাসন নির্বিকার বলে অভিযোগ গ্রামবাসীদের। আগে সেই সব সমস্যার সমাধান করা হোক, তার পর দুয়ারে সরকার, এই দাবিতে জেলা প্রশাসনের কর্মীদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। কৃষ্ণদাস কিস্কু নামে এক বিক্ষোভকারী বলেন, “গ্রামের সমস্যাগুলি বার বার গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে জেলা পরিষদ সর্বত্র জানিয়েছিল আমরা। প্রশাসন আমাদের আশ্বাস দিয়েছে। এর পরেও সমস্যার সমাধান না হলে আগামী দিনে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তুলব।” স্থানীয় বাসিন্দা চুনকারাম হাঁসদা বলেন, “আমাদের গ্রামে উন্নয়নের ছিটেফোঁটাও পৌঁছয়নি। বার বার বিভিন্ন দফতর ঘুরেও লাভ না হওয়ায় আজ এই আন্দোলনে নামতে বাধ্য হয়েছি।”গ্রামবাসীদের বিক্ষোভের মুখে পড়ে প্রায় আড়াই ঘন্টা গ্রামের বাইরেই আটকে থাকতে হয় দুয়ারে সরকার কর্মসূচির বিশেষ শিবিরের কর্মীদের। পরে ছাতনা ব্লকের পদস্থ আধিকারিকরা ঘটনাস্থলে গিয়ে বিক্ষোভকারীদের দ্রুত সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেন। গ্রামবাসীদের বিক্ষোভ প্রসঙ্গে পঞ্চায়েত প্রধান শ্রীমতী মুর্মু বলেন, ‘‘এই গ্রামে রাস্তা ও পানীয় জলের সমস্যা রয়েছে। মাঝে মাঝে গ্রামের লোকজন পঞ্চায়েতে জানিয়েও ছিলেন। গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্যদের সমস্যা সমাধানের জন্য বলেছিলাম। কিন্তু কী কারণে কাজ হয়নি, খোঁজ নিয়ে দেখব। আশা করি, আগামী এক বছরের মধ্যে গ্রামের সব সমস্যা মেটাতে পারব আমরা” বাঁকুড়া সদরের মহকুমা শাসক সুশান্ত কুমার ভক্ত বলেন, “রাস্তা ও পানীয় জলের সমস্যা মেটানোর জন্য পাড়ায় সমাধান শিবির হয়। সেখানে গ্রামবাসীরা আবেদন জানাতে পারতেন। এখন তহবিলে খানিক ঘাটতি রয়েছে। তা নজরে রেখে কী ভাবে সমস্যা মেটানো যায়, তা আমরা দেখছি।”