|
---|
মালদা ২৬ জুন: ভাই এর মৃত্যুতে বিয়ে বাড়িতে ঘনিয়ে এল বিষাদের ছায়া । বন্ধ হয়ে গেলো বৌভাতের অনুষ্ঠান । ফিরে গেলো আত্মীয়রা । দুর্ভাগ্যজনক ঘটনাটি মোথবাড়ি থানা এলাকার বাঙ্গীটোলা গ্রাম পঞ্চায়েতে র নসরৎটোলা গ্রামে ।
দাদার বিয়ের দিনে গঙ্গাতে তলিয়ে গেলো আদরের ছোট্ট ভাই । বিয়ে নিয়ে আসার পথে গঙ্গায় তলিয়ে গেলো ভাই । নৌকা থেকে মাঝ গঙ্গায় পড়ার সঙ্গে সঙ্গে ব্যাপক স্রোতে মুখে পড়ে যায় সে। মঙ্গলবার ভাইয়ের দেহ ভেসে উঠলে বিয়ের বাড়িতে নেমে আসে বিষাদের ছায়া । বাতিল করা হয় বিযের ভৌভাতের অনুষ্ঠান। নিমন্ত্রিতদের জানিয়ে দেওয়া হয় ভাইয়ের মৃত্যুর খবর।
মৃত ভাইয়ের নাম জনি শেখ । মোথাবাড়ি থানার নসরৎটোলা গ্রামে বাড়ি তার। সে নসরৎটোলা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণির ছাত্র ছিল। ৫ ভাই ও ৪ বোনের মধ্যে সবার ছোট ছিল বছর সাতেকের জনি আদরের বলে পরিবারের সকলে আদর করে জনি বলে ডাকত তাকে। ভাইদের মধ্যে সবার বড় তাহের। তার বিয়ে ছিল সোমবার। সোমবার সকালে বরযাত্রী নিয়ে দাদা বিয়ে করতে যান ঝাড়খন্ডে। পঞ্চানন্দপুর ঘাট থেকে গঙ্গা পেরোলেই ঝাড়খন্ড। পুলিশ জানিয়েছে, সন্ধের দিকে বিয়ে করে নব বধূকে নিয়ে ফিরছিলেন দাদা। ঝাড়খন্ডের শুভানটোলা ঘাট থেকে বিকেলের দিকে তাঁদের বিয়ের নৌকা ছাড়ে। ৩০ জন মতো বরযাত্রী ছিল নৌকায়। পরিবারের অন্যদের সঙ্গে ছিল জনিও । বিয়ের বাড়িতে খুব আনন্দ করেছে। নৌকাতেও বেশ হাসিখুশি ছিল। মাঝগঙ্গায় এসে আচমকা সব পাল্টে যায়। ভুটভুটি চালিত নৌকা থেকে জলে পড়ার শব্দ পাওয়া গেল। জনির জামার চিহ্ণ দেখার সঙ্গে সঙ্গে জলে ঝাঁপ দেন ৩ জন। ততক্ষণে তলিয়ে যায়। রাতভর চলে তল্লাশি। ফেলা হয় জাল। এদিন সকাল ৯ টা নাগাদ ডুবুরি নামার কথা। তার আগেই ভেসে ওঠে জনির দেহ। পুলিশ দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নিয়ে আসে মালদা মেডিক্যালের মর্গে। ছেলের নিখোঁজের কথা শুনে সোমবার থেকে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন বাবা বাদিরুদ্দিন শেখ ও মা কহিনুর বিবি। মৃতের এক জামাইবাবু জবান শেখ মৃত্যুর কারণ নিয়ে বলতে গিয়ে বলেন,‘আমরা সকলে তখন নৌকায় বসে। সারাদিন হই হুল্লোড় করার পর নৌকায় একটু ঝিমুনি এসেছিল। কেউ তেমন জনিকে লক্ষ্য করি নি। আমাদের মনে হচ্ছে, ওরও মনে হয় ঘুম এসেছিল। ঘুমের ঝোঁকে ঢলে জলে পড়ে যায় হয়ত। কিংবা চলন্ত নৌকা থেকে জলে হাত দিয়ে গিয়ে জলে পড়ে যেতে পারে। জলে পড়ার পর অনেক চেষ্টা করেছিলাম বাঁচানোর। মুহুর্তে তলিয়ে যায় সে।’
মৃত শিশুর পরিবার বারবার কালিয়াচক ২ নম্বর ব্লকের বিডিও অফিস ও পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করলেও গঙ্গায় ডুবুরি নামানো কেন্দ্র করে প্রথমে দায় এড়ানোর চেষ্টা করে ।পরে স্হানীয় তৃণমূলের কংগ্রেসের সংখ্যা লঘু সেলের রাজ্য কার্যকরী সভাপতি নাসির আহমেদ সরাসরি বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরের মন্ত্রী জাভেদ আহমেদ জানালে মন্ত্রীর উদ্যোগে মোথাবাড়ি থানার পুলিশ বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরে জানালে আজ রায় রায়গঞ্জে বিপর্যয় ফোর্থ ব্যাটেলিয়ান বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তর একটি বিশেষ দল গঙ্গায় ডুবুরি নামিয়ে মৃতদেহটি উদ্ধার করে মোথাবাড়ি থানার ওসি সৌমজিৎ মল্লিক জানান গতকাল শিশুটি গঙ্গায় পড়ে যাওয়ার খবর পেয়ে আমরা বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তর কে জানাই এবং আজ সকালে শিশুকে উদ্ধার হয় এবং ময়না তদন্তের জন্য মালদা মেডিকেল কলেজে পাঠানো হয় এই ঘটনায় গোটা বাঙ্গীটোলা পঞ্চনন্দপুর এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে।
তৃণমূলের সংখ্যালঘু সেল রাজ্যে কার্যকরী সভাপতি আহম্মেদের অভিযোগ গঙ্গার বুকে টোল ট্যাক্স ও জলকর রাজস্ব ঝাড়খন্ড সরকার ভোগ করলেও গঙ্গার বুকে আমাদের রাজ্যের কোন মানুষ বিপদে পড়লে তারা উদ্ধার বা কোন সাহায্য করে না ।।এই শিশুটির উদ্ধার করতে ঝাড়খন্ডের কোন সাহায্য পাওয়া যায়নি। আমরা আশা করব অতি দ্রুতই গঙ্গা পারে দুই রাজ্যের সীমানা নির্ধারণ করো করা উচিত নইলে এপার বাংলা মানুষের হাড় প্রতিদিনই এই ধরনের বিপদের মধ্যে পড়বে।গোটা বিষয়টি নিয়ে তিনি বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরের মন্ত্রী জাভেদ আহমেদের কাছে লিখিত ভাবে অভিযোগ জানিয়ে ছেন বলে জানিয়েছেন ।