দুর্গাপুজোর মাঝেই আবারও প্রকাশ্যে চলে এলে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব

দেবজিৎ মুখার্জি, উত্তর দিনাজপুর: দুর্গাপুজোর মাঝেই আবারও প্রকাশ্যে চলে এলে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জ শহরের শক্তিনগর এলাকায়। মহানবমীর সকালে স্থানীয় শক্তিনগর সার্বজনীন দুর্গামন্দিরে তালা ঝুলিয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের এক গোষ্ঠীর লোকজন। ঘটনায় তুমুল চাঞ্চল্য ছড়ায় রায়গঞ্জজুড়ে। এই নিয়ে রায়গঞ্জ থানার দ্বারস্থ হন পৌরসভার ২ ওয়ার্ড কো-অর্ডিনেটর বরুণ বন্দ্যোপাধ্যায়, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও স্থানীয় লোকজনেরা। তাঁদের অভিযোগ, মহানবমীর সকালে পরিচারিকা মন্দিরে কাজে যেতেই ২ দুস্কৃতী তাঁর কাছ থেকে চাবি নিয়ে মন্দিরে তালা মেরে, সেটি নালায় ফেলে দেয়। এরপরই উত্তেজনা ছড়ায়। এদিকে মহানবমীর পুজোর সময় হয়ে এলেও, এই ঘটনার জন্য মন্দিরে ঢুকতে পারেননি পুরোহিত কিংবা পুজো উদ্যোক্তারা।

    ঘটনায় বরুণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগ, ওই দুস্কৃতীরা একসময় বিজেপির সঙ্গে যুক্ত ছিল। পরে তারা তৃণমূলে চলে আসে। বিধানসভা ভোটের সময় থেকে তাদের তাণ্ডব চলছে এলাকায়। নেপথ্যে বড়সড় সমাজবিরোধী শক্তির প্রভাব রয়েছে বলেও দাবি তাঁর। বরুণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের আরও অভিযোগ, দুষ্কৃতীদের তাণ্ডবে সাধারণ মানুষ অতিষ্ঠ। প্রতিবাদ করলেই মিলছে খুনের হুমকি। তাই পুলিশের কাছে এর বিহিত চাওয়া হয়েছে।

    এদিকে বিষয়টিতে তড়িঘড়ি পদক্ষেপ করে পুলিশ। রায়গঞ্জ থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মন্দিরের তালা ভেঙে দেয়। তারপর শুরু হয় নবমীর পুজো। তবে ঘটনায় আতঙ্কের পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে এলাকা জুড়ে। পুরসভার স্থানীয় কো-অর্ডিনেটর বরুণ বন্দ্যোপাধ্যায় টেলিফোনে বলেন, ‘গোটা ঘটনার জন্য দায়ী বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যাণীর অনুগামীরা। তারাই এলাকায় সন্ত্রাসের আবহ তৈরি করছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েও এখনও কোনও বিহিত হয়নি।’ বরুণ আরও বলেন, ‘আমি ২০০৬ সাল থেকে তৃণমূল করি। অথচ সদ্য বিজেপি থেকে আসা বিধায়কের লোকেরা এখন দলে বেশি প্রাধান্য পাচ্ছে।’ আদি তৃণমূল এবং নব্য তৃণমূলের প্রসঙ্গ টেনে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।

    যদিও এ বিষয়ে বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যাণী টেলিফোনে বলেন, ‘ঘটনার খবর পেয়েছি। জমি সংক্রান্ত বিষয়ে স্থানীয় কো-অর্ডিনেটর বরুণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে প্রচুর অভিযোগ রয়েছে। ওই এলাকায় তৃণমূলের অনেক কর্মী মেনে নিতে পারেন না। ফলে ওই দু’টি গোষ্ঠী তৈরি হয়েছে। আমি চেষ্টা করব দুই পক্ষকে বসিয়ে বিষয়টি মিটিয়ে নেওয়ার জন্য।’