|
---|
খান আরশাদ, বীরভূম:
প্রাক্তন আই পি এস দেবাশীষ ধর রাজ্য সরকারের আবর্জনা ছিল, খয়রাশোলের সভামঞ্চ থেকে এরকমই মন্তব্য করলেন অভিষেক ব্যানার্জির।
শনিবার বিকেল ২:৪৫ নাগাদ বীরভূমের খয়রাশোলের গোষ্ঠডাঙ্গাল মাঠে তৃণমূল প্রার্থী শতাব্দী রায়ের সমর্থনে সভা করেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক ব্যানার্জি।
সভামঞ্চ থেকে অভিষেক ব্যানার্জি তৃণমূলের উন্নয়নমূলক প্রকল্প তুলে ধরার পাশাপাশি কেন্দ্রের মোদি সরকারের তীব্র সমালোচনা করেন।
বীরভূম লোকসভা কেন্দ্রের ৪২ নম্বর আসনে এবারে তৃণমূলের প্রার্থী হয়েছেন গতবারে বিজয়ী প্রার্থী শতাব্দী রায়। এই কেন্দ্রে প্রাক্তন আই পি এস অফিসার দেবাশীষ ধরকে প্রার্থী করেছিল বিজেপি। কিন্তু দেবাশীষ ধরের মনোনয়ন বাতিলের আশঙ্কা ভেবেই বিজেপি দেবতনু ভট্টাচার্যকেও প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা করে। দেবাশীষ ধরের মনোনয়ন বাতিল হলে দেবতনু ভট্টাচার্যকেই বিজেপি প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করা হয়।
খয়রাশোলের সভা মঞ্চ থেকে অভিষেক ব্যানার্জি বলেন তৃণমূলের যেমন কিছু আবর্জনা ছিল, যাদেরকে বের করে দেওয়া হয়েছে। তেমনি সরকারেরও আবর্জনা ছিল প্রাক্তন আইপিএস দেবাশীষ ধর। এরকমই তিনি মন্তব্য করলেন এবং শীতলকুচিতে দেবাশীষ ধরের নির্দেশে পাঁচজনকে মেরে ফেলা হয়েছিল বলেও অভিযোগ করেন অভিষেক ব্যানার্জি।
অভিষেক ব্যানার্জি তৃণমূলের এবং বিজেপির বিগত ১০ বছরের কার্যকলাপকে সিনেমার ট্রেলার সাথে তুলনা করেন।
তিনি বলেন দশ বছরে মোদি সরকার সিনেমার ট্রেলার দেখিয়েছে। বিজেপির ১০ বছরে ট্রেলারে দেখেছেন ৫০ টাকার পেট্রোল ১০০ টাকা, ৪০ টাকার ডিজেল ৯২ টাকা, ১৭ টাকার কেরোসিন তেল ৭৫ টাকা, ৪০ টাকার ডাল ১৬০ টাকা, ৩ টাকার ডিম ৭ টাকা। ১০ বছরে ট্রেলারের এই অবস্থা যদি হয় তাহলে মোদির সিনেমা কে দেখবেন?
একই সাথে তিনি তৃণমূলের ১০ বছরের কার্যকালকেও সিনেমার ট্রেলার হিসেবে তুলনা করলেন। অভিষেক বললেন মমতার ট্রেলারে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড, লক্ষ্মীর ভান্ডার, ঐক্যশ্রী, রূপশ্রী পেয়েছেন লোকেরা। একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণীর পড়ুয়াদের এককালীন ১০ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়েছে। পথশ্রীতে হাজার হাজার কোটি টাকা খরচা করে গ্রামীণ রাস্তা তৈরি হয়েছে। শুধুমাত্র বীরভূম জেলায় ৩৬ লক্ষ ৭৮ হাজার ৯০ জনকে বিনামূল্যে রেশন দেওয়া হচ্ছে। এরপরেই তিনি সভামঞ্চ থেকে প্রশ্ন তোলেন, কার সিনেমা তাহলে দেখতে চান মোদির না দিদির?
কুচবিহারের বিজেপি নেত্রী দীপা চক্রবর্তীর ভয়েস রেকর্ডিং নিজের মোবাইল থেকে শোনান। যেখানে দীপা চক্রবর্তী সরাসরি লক্ষ্মীর ভান্ডার বন্ধের হুমকি দিয়েছেন। এরপরই অভিষেক বলেন আপনারাই সিদ্ধান্ত নিন। কাকে জান আপনারা, দিদিকে না মোদিকে?
মোদির গ্যারান্টি হল দুইবার প্রার্থী বদল, গ্রামীণ রাস্তার টাকা বন্ধ, আবাস যোজনা টাকা বন্ধ ।
আবাস যোজনার বাড়ি বিষয়ে অভিষেক বলেন রাজ্য আগামী ৩১শে ডিসেম্বর প্রথম কিস্তির বাড়ির টাকা প্রাপকদের একাউন্টে পাঠিয়ে দেবে।
চাকরি বাতিল প্রসঙ্গে তিনি বলেন একদিকে দিদি, চাকরি দিচ্ছে আর অন্যদিকে বিজেপি চাকরির খাচ্ছে।
তৃণমূল প্রার্থী শতাব্দী রায়কে ভোট দেওয়ার আর্জি জানিয়ে অভিষেক বলেন বোতাম টিপবেন এখানে আর ভূমিকম্প হবে দিল্লিতে। ঠিক এভাবেই ভোট দেবেন। যেন ৪ তারিখের ফলাফলে পদ্মফুলের বদলে সর্ষেফুল দেখতে পায় বিজেপি।
এদিনের সভামঞ্চে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহা, ডেপুটি স্পিকার আশীষ ব্যানার্জি, জেলা পরিষদ সভাধিপতি কাজল সেখ, বিকাশ রায় চৌধুরী, বিধায়ক রানা সিনহা, বিধায়ক ডক্টর অশোক চ্যাটার্জি, বিধায়ক বিধান মাঝি, রাজনগর ব্লক সভাপতি সুকুমার সাধু , তৃণমূল নেতা অরুণ চক্রবর্তী সহ অন্যান্য তৃণমূল নেতৃত্ব।