রাজ্যে গতকালকের থেকে কমেছে করোনার দৈনিক সংক্রমণ

নতুন গতি, ওয়েব ডেস্ক :২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে অনেকটাই কমল দৈনিক সংক্রমণ। একদিনে সংক্রমিত ৮০৫, মৃত ১০। লক্ষ্মীপুজোর পর থেকে উদ্বেগ বাড়িয়ে ক্রমেই বাড়ছিল করোনা গ্রাফ। কিন্তু সোমবারের পরিসংখ্যানে কিছুটা স্বস্তি চিকিৎসক মহলে। আগামি উৎসব পালনে তাঁরা বেশি করে সংযত হওয়ার বার্তা দিয়েছেন। মাস্ক পরেই পথে নামতে পরামর্শ তাঁদের।

    জানা গিয়েছে, একদিনে সুস্থ হয়েছেন ৮০৭৬ জন, সুস্থতার হার সামান্য কমে ৯৮.৩০%। রাজ্যে এই মুহূর্তে সক্রিয় সংক্রমণ ৭৮৬৯, খানিকটা বেড়ে সংক্রমণের হার ২.৭৭%। মোট আক্রান্ত ১৫,৮৭,২৬০ আর মোট মৃত্যু ১৯,০৬৬। খানিকটা উদ্বেগ জিইয়ে রেখে দৈনিক সংক্রমণের নিরিখে এগিয়ে সেই দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলো। শীর্ষে কলকাতা এবং পরেই তার পার্শ্ববর্তী একাধিক জেলা। কলকাতায় সংক্রমিত ২২৯ জন, উত্তর ২৪ পরগনায় ১৪২। দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ৬৯, এরপরেই হাওড়া এবং হুগলী।

    এদিকে, প্রায় ২০ মাস বন্ধ স্কুল, কলেজ। পঠান-পাঠন চলছে অনলাইনে। প্রবল সমস্যায় পড়ুয়ারা। এই পরিস্থিতিতে দ্বিতীয় ঢেউয়ের পরই সংক্রমণ কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসতেই মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন যে, পুজোর পর স্কুল খোলার চেষ্টা করা হচ্ছে। স্কুল ভবনগুলি মেরামতির জন্য অর্থ বরাদ্দও করেছিল রাজ্য সরকার। আর কিছুদিনের মধ্যেই শারদীয়ার ছুটি শেষ হবে। তার আগেই আজ মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে দিলেন রাজ্যের স্কুল, কলেজ কবে থেকে খুলবে।

    উত্তরকণ্যায় উত্তরবঙ্গের জেলাগুলির প্রশাসনিক বৈঠকে এদিন মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যের স্কুল, কলেজ খোলার বিষয়টি তোলেন। বলেন, ‘১৫ নভেম্বর থেকে খুলবে রাজ্যের স্কুল, কলেজ।’ মুখ্যসচিবকে এ জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার জন্যও নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

    বৈঠক চলাকালীনই মুখ্যসচিবকে উদ্দেশ্য করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘৪ তারিখে কালীপুজো। ৬ তারিখে ভাইফোঁটা। ১০ আর ১১ তারিখ ছট পুজো। ১৩ তারিখে জগদ্ধাত্রী পুজো। তোমাকে যা করতে হবে ১৫ তারিখ থেকে করতে হবে। স্কুল কলেজ খোলার ব্যাপারেও ১৫ তারিখ থেকেই করে দাও। তার আগে স্কুল কলেজগুলি পরিষ্কার করতে হবে। সেগুলিও মাথায় রাখতে হবে।’ আগামী দু’সপ্তাহের মধ্যে স্কুল, কলেজ ভবনগুলির প্রয়োজনীয় জীবাণুমুক্তকরণের কাজ শেষ করার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।

    নিয়ন্ত্রণে থাকলেও করোনা সংক্রমণের এখনও সম্পূর্ণ অবসান হয়নি। এই পরিস্থিতিতে স্কুল, কলেজগুলিতে নিয়মিত ক্লাস করানো হবে কি না? প্রতি ক্লাসে কতজন পড়ুয়া থাকবে? তা নিয়ে এ দিন কোনও কিছু জানাননি মুখ্যমন্ত্রী। কোভিডবিধি মেনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।

    এ রাজ্যে করোনা থাবা বসানোর পরই অর্থাৎ ২০২০ সালের ১৫ মার্চ থেকে স্কুল-কলেজ বন্ধ বলে ঘোষণা করে রাজ্য। পড়ুয়াদের সুরক্ষার কথা বিবেচনা করেই এই পদক্ষেপ বলে জানিয়েছিল নবান্ন। তারপর কেটে গিয়েছে প্রায় ২০ মাস। কিন্তু সংক্রমণের অবসান না ঘটায় ফের স্কুল, কলেজ খোলা সম্ভব হয়নি। অনলাইনে ক্লাস চলছিল। এতে বেশ কিছু বাস্তবিক সমস্যা দেখা দিচ্ছিল। ফলে রাজ্যের কাছে ক্রমেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি খোলার দাবি উঠতে থাকে।