দুয়ারে সরকারে হয়না কাজ, সরকারি অফিসারদের আটকে রাখলো গ্রামবাসীরা

আজিজুর রহমান,গলসি : দুয়ারে সরকারে হয়না কাজ তাই সরকারি অফিসারদের স্কুলে আটকে রেখে দুয়ারে সরকার এর শিবির বন্ধ করলো গ্রামবাসীরা। রাজ্যের বিরল ছবি ধরা পরল গলসি ১ নং ব্লকের শিড়রাই গ্রাম পঞ্চায়েত শিড়রাই গ্রামে। এদিন সকালে গ্রামে দুয়ারে সরকারে আসেন গলসি ১ নং ব্লকের বিডিও অফিস সহ বিভিন্ন দপ্তরের কর্মীরা। গ্রামের আলিজান মল্লিক হাইস্কুলে ঢুকতেই গ্রামবাসীরা তাদের শিবির করতে নিষেধ করেন। এরপরই স্কুলের ভিতরে আটকে রাখা হয় সরকারী কর্মীদের। বেলা গড়ালেও গ্রামবাসীদের ক্ষোভের মুখে পরে শিবির শুরু করতে পরেনি গলসি ১ নং ব্লক প্রশাসন। খবর পেয়ে গলসি পুলিশ পৌছে  পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসীদের দাবী, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জ্জী তাদের প্রয়োজনীয় সকল কাজকে সহজ করতে দুয়ারে সরকার চালু করছেন। তবে গলসি ১ নং ব্লক প্রশাসনের গাফিলতিতে সেই কাজ ঠিকভাবে করছে না। তারা তিনচার বার ফর্ম ফিলাপ করে জমা দিয়েও পায়নি স্বাস্থ্যসাথী, খাদ্যসাথী, কৃষকবন্ধু, লক্ষীর ভান্ডার, বৃদ্ধভাতা, বিধবাভাতা সহ একাধিক পরিসেবা। এর ফলে সরকারি সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন গ্রামের হাজার হাজার মানুষ। গ্রামবাসী পলাশ সেখ বলেন, লক্ষীর ভান্ডারের ফর্ম জমা দিয়েছি চারবার। কৃষক বন্ধুর জন্য আবেদন করেছি তিনবার তারপরও কাজ হয়নি। জমার টোকেন নিয়ে যাচ্ছি আর ঘুরে আসছি। কোথায় গেলে সুরাহা পাবে কেউ সঠিক ভাবে বলছে না। দুপুর নাগাদ গলসি ১ নং ব্লক বিডিও দেবলীনা দাস এসে উপস্থিত হলে গ্রামবাসী উকিল মল্লিক তাকে বলেন, দুয়ারে সরকারে কোন ফর্ম দেওয়া হয়না। তাদের ফর্ম বাইরে থেকে কিনতে হয়। তিনি বলেন, কৃষক বন্ধুর আবেদন করেছি ২০১৮ সাল থেকে। বহুবার চেষ্টা করেছি কিছুতেই হয়নি। কেন হচ্ছে না তারও কোন উত্তর পাচ্ছি না। পরেশ মল্লিক আর এক গ্রামবাসী বলেন, সব পরিসেবা থেকে বঞ্চিত গ্রামের মানুষ। কারও রেশন কার্ড করতে জুতে ছিঁড়ে যাচ্ছে। অফিসে গেলে দুয়ারে সরকার যেতে বলেছে। আর দুয়ারে সরকার জমা দিলেও কিছুতেই হচ্ছে না। তিনি বলেন, গ্রামের বহু মহিলার লক্ষীর ভান্ডার হয়নি। তাদের সব চাইতে প্রয়োজনীয় কৃষক বন্ধু কার্ড হয়নি। তাই নায্যমুল্যে ধান বিক্রি থেকে বঞ্চিত হয়েছেন তারা। ফলে খোলাবাজারে কমদামে ধান বেচতে হচ্ছে। গ্রামবাসীদের দাবী বিডিও এসে প্রতিশ্রুতি দিলে তবেই চালু হবে দুয়ারে সরকার এর শিবির। অবশেষে দুপুর দেড়টা নাগাদ স্কুলে আসেন গলসি ১ নং ব্লক বিডিও দেবলীনা দাস। তিনি গ্রামবাসীদের অভিযোগ শুনে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন। এরপরই শুরু হয় দুয়ারে সরকার।