|
---|
জৈদুল সেখ, বহরমপুর, মুর্শিদাবাদ: দুদিনের জেলা সম্মেলন শেষে বুধবার দলের গঠনতন্ত্র ও ভোটাভুটির মাধ্যমে মুর্শিদাবাদের সিপিএমের জেলা সম্পাদক নির্বাচিত হলেন ডিওয়াইএফআইয়ের প্রাক্তন রাজ্য সম্পাদক জামির মোল্লা। সিপিআই(এম) জেলা সম্পাদকে এই প্রথম মুর্শিদাবাদ জেলার পার্টির শীর্ষ পদে এলেন কোন সংখ্যালঘু নেতা। সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকেই মন্তব্য করেছেন অবশেষে ঘুম ভাঙল সিপিএমের।
প্রসঙ্গত বাংলার একমাত্র জেলা মুর্শিদাবাদ যেখানে মুসলিমরাই সংখ্যাগরিষ্ঠ, অথচ অনেক লড়াই সংগ্রাম করেও পার্টির সম্পাদক পদ থেকে বঞ্চিত ছিলেন। যদিও এ বিষয় নিয়ে মইনুল হাসান আগে অনেকবার মুখ খুলেছিলেন। সিপিআইএমের মুর্শিদাবাদ জেলা সম্পাদক হয়ে ইতিহাস গড়লেন প্রাক্তন যুব নেতা জামির মোল্লা।
বুধবার ২৩ তম সম্মেলন মঞ্চ থেকে সিপিআইএম রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র এদিন রবীন্দ্রসদনে সম্পাদক হিসেবে জামির মোল্লার নাম ঘোষণা করেন। এর আগেও তিনি ছাত্র পরে যুবর সম্পাদক ছিলেন। যুব নেতা সফিউর রহমান বলেন “আমরা এক সঙ্গে কংগ্রেসেরে বিরুদ্ধে কলেজ থেকে শুরু করে রাস্তায় লড়াই আন্দোলন করেছি। শুধু তাই নয় তৃণমূলের জামানাতেও লড়াই আন্দোলনে জামির দা সিপিএমের যোগ্য উত্তরাধিকারী হিসাবে নিজেকে বার বার প্রমাণ করেছে। ”
উল্লেখ্য জেলা সম্মেলনের আগে দীর্ঘদিন ধরে এরিয়া কমিটির সম্মেলন হয়েছে। সিপিএমের প্রায় ৭০ শতাংশ এরিয়া কমিটিতে পুরনো সম্পাদকরা স্বপদে বহাল রয়েছেন। মুর্শিদাবাদে সিপিএমের ৪৬ টি তার মধ্যে ১৬ টি এরিয়া কমিটিতে সম্পাদক হিসেবে নতুন মুখ আনা হয়েছে। সুতরাং পার্টির নিচে আমল কিছু পরিবর্তন আনতে পারেননি বলে দাবি করেছেন প্রাক্তন বাম সদ্যরা।
বহরমপুর রবীন্দ্র সদনে দুই দিন ধরে করোনা বিধি মেনে ২৩ তম রাজ্য সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। উপস্থিত হয়েছিলেন সূর্যকান্ত মিশ্র, মোঃ সেলিম, ধ্রুবজ্যোতি সাহা, বদুরোদ্দোজা খান সহ একাধিক রাজ্য নেতৃত্ব।
বিজেপি সাংসদ ও নেতাদের দলের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ থেকে বেরিয়ে যাওয়া নিয়ে কটাক্ষও করেছেন সি পি আই এমের রাজ্য সম্পাদক তথা পলিটব্যুরো সদস্য সূর্যকান্ত মিশ্র। বহরমপুর রবীন্দ্র সদনে জেলা সম্মেলন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ওরা কখন বেরোয় কখন ঢোকে তা সার্কাসের মত। এ প্রসঙ্গে তৃণমূল নেতা মুকুল রায়ের সাম্প্রতিক মন্তব্যের প্রসঙ্গও উদ্ধৃত করেন তিনি।
এদিন সূর্যকান্ত মিশ্র পৌর ভোট নিয়ে বলেন এই করোনা পরিস্থিতিতে নির্বাচন নিয়ে কমিশন কি সিদ্ধান্ত নিচ্ছে সেটা দেখার বিষয়। তবে জোট নিয়ে কংগ্রেসের সঙ্গে সেই ভাবে কোনো কথা শোনা গেল না। তবে জানান রাজ্যের পুরভোটে বাম কংগ্রেস জোট নিয়ে জেলা বামফ্রণ্ট ও স্থানীয় নেতৃত্বই সিদ্ধান্ত নেবে। যেখানে বিরোধী বিজেপি ও তৃণমূল কংগ্রেস অতীব শক্তিশালী সেখানে জোট পক্ষেই ইঙ্গিত দিয়েছেন পলিটব্যুরো সদস্য তথা সিপি আই এমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র। অন্যদিকে সাম্প্রতিক কালে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতিও একই ইঙ্গিত দেওয়ায় রাজ্যের পুরভোটে বেশ কিছু আসনে বাম-কংগ্রেস সামঝোতা নিশ্চিত বলে রাজনৈতিক ওয়াকিবহাল মহলের দাবি। অন্যান্য আসনে পুর্বের মতই বন্ধুত্বপূর্ণ লড়াইয়ের নামে উভয় পক্ষই পৃথক পৃথক প্রার্থী দিতে পারে বলে অভিমত রাজনৈতিক মহলের।