কাশ্মীর প্রসঙ্গ নিয়ে প্রাক্তন সংসদ কুণাল ঘোষ এর বক্তব্য।

নতুন গতি নিউজ ডেস্ক। কাশ্মীর প্রসঙ্গ নিয়ে প্রাক্তন সংসদ কুণাল ঘোষ জানান – গোটা বিষয়টি একভাবে দেখছি না। একটি, 370 ও 35A সংক্রান্ত। দুই, অন্যটি রাজ্যভাগ ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মর্যাদা সংক্রান্ত। প্রথমাংশে সমর্থন করছি। দ্বিতীয় অংশে আলোচনার অবকাশ আছে; কারণ এই পদ্ধতির অপপ্রয়োগ অন্য রাজ্যে হতে পারে।

    এতকাল “অস্থায়ী ব্যবস্থা” চলছিল। এতবছর বিকল্প পদক্ষেপ হয় নি। যা চলছিল, তাতেও স্থিতিশীলতা ছিল না। তাহলে নতুন ব্যবস্থাটা দেখতে ক্ষতি কী?

    ৩৭০ ধারার বিলুপ্ত অংশ: সব বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে পারত না দেশের সরকার।সংসদ আইন করতে পারত না। আলাদা পতাকা থাকতে পারত। সুপ্রিম কোর্টের রায় চলত না। ইত্যাদি। এগুলি বাতিল হয়ে যদি দেশের মূল অংশের সঙ্গে আসে, ক্ষতি কী?

    ৩৫ এ , স্থায়ী বাসিন্দা ছাড়া কেউ জমি কিনতে পারত না।( লগ্নি, শিল্প, চাকরি কঠিন)। স্থায়ী বাসিন্দা ছাড়া রাজ্যে চাকরির আবেদন নয়। স্থায়ী বাসিন্দা মহিলারা বাইরের কাউকে বিয়ে করলে সম্পত্তির অধিকার থেকে বঞ্চিত হতেন। তাঁর উত্তরসূরিরাও পেতেন না। এই বিধিনিষেধ কেটে যাওয়া তো ভালো।

    এই পর্যন্ত গোটা পদক্ষেপকে সমর্থন করছি। যারা কাশ্মীরের মানুষের অধিকারের নামে প্রতিবাদ করছেন, সেই গুটিকতক প্রাণীর সমালোচনা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত রাজনীতি বলেই মনে করছি। যেগুলি বাতিল হচ্ছে, তাতে কাশ্মীরকে ভারতের মূলস্রোতের মাধ্যাকর্ষণে রাখার প্রবণতা স্পষ্ট।

    তবে রাজ্যভাগ ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল করে দেওয়ার এই বিষয়টি নিয়ে আলোচনার অবকাশ আছে। পদ্ধতির প্রতিবাদও হতে পারে। এই পদ্ধতি অন্য রাজ্যের ক্ষেত্রে অপপ্রয়োগ হলে সেটা ঝামেলা বাড়াবে।

    বড় সিদ্ধান্তের সময়ে কাশ্মীরে কড়া নিরাপত্তাজনিত প্রশাসনিক পদক্ষেপগুলি সমর্থন করাই ভালো। নেট আর কেবল বন্ধর বিষয়টা সর্বত্র স্পর্শকাতর এলাকায় দেখা যায়। রাতারাতি শান্তি ফিরবে ভাবাটাই ভুল। তবু, পদক্ষেপ তো দরকার।

    পাকিস্তানের ক্ষিপ্ত লাফালাফিতেই প্রমাণ হচ্ছে কাশ্মীরের এতদিনের ব্যবস্থাকে তারা তাদের স্বার্থে ব্যবহার করত। এখন স্বার্থে ঘা পড়ার আশঙ্কাতেই এত কথা। ভারতের একটি রাজ্যে ভারত কী করবে ভারত বুঝবে। পাকিস্তান বা অন্য কোনো দেশের প্রতিবাদের অধিকার থাকতে পারে না।

    কাশ্মীর দীর্ঘকালীন সমস্যা। এর সমাধান তো এতদিনে হল না। বড় সংখ্যাগরিষ্ঠতার সরকার ছাড়া এই কাজ করাও মুশকিল। বিজেপি সেই সুযোগ পেয়েছে, ইস্তাহারেও ছিল, সেই কাজ করছে। এর পরিণাম না দেখে অন্ধ বিরোধিতা সাত তাড়াতাড়ি না করাই ভালো। যারা করবেন, মানুষের চোখে তারা বিজেপির নয়, ভারতের স্বার্থের বিরোধিতা করছেন।

    তবে রাজ্য ভাগ বা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মর্যাদার বিষয়টির পদ্ধতি যাতে অন্য রাজ্যে অপপ্রয়োগ না হয়; তা সুনিশ্চিত করতে হবে। কাশ্মীরের পরিস্থিতি সম্পূর্ণ আলাদা। কিন্তু এই কায়দা যেন বিরোধীশাসিত অন্য রাজ্যে ব্যবহার করে রাজনৈতিক ফায়দা তোলার পথে বিজেপি না যায়।

    পুনশ্চ: বৃহস্পতিবার রাতে জাতির উদ্দেশে ভাষণে দেখলাম প্রধানমন্ত্রী বলেছেন: পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে কাশ্মীর রাজ্যের মর্যাদা ফিরে পাবে। ভোটও হবে। একাধিক উন্নয়ন, লগ্নির পরিকল্পনা ঘোষণা করেছেন তিনি। সঙ্গে পুলিশের জন্য আর্থিক সুবিধের প্যাকেজ।

    দেখা যাক কী দাঁড়ায়।