|
---|
রামিজ আহমেদ : সম্প্রতি জ্ঞান মঞ্চে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল ‘শ্রদ্ধাঞ্জলি’২২। গুরু কেলুচরণ মহাপাত্র ও শ্রীমতি স্ংযুক্তা পানিগ্রহীর প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদনে তিন দিনব্যাপী উৎসবের আয়োজন ও পরিচালনা করে কলকাতার ‘ওড়িশি ডান্সার্স ফোরাম’। প্রতি বছরের মতো এই বছরেও বহু নৃত্য সংস্থা এই উৎসবে অংশ নেন। প্রথম দিনের উপস্থাপনায় গুরু পৌষালী মুখার্জীর গ্রূপের ‘গতিভেদ পল্লবী’, রাজনীতা মেহেরা ও গ্রূপের ‘নাগেন্দ্রহারায়’, পিয়ালী ঘোষ ও গ্রূপের ‘শুদ্ধ ধৈবৎ বিভাষ’, শিবঙ্গ-এর ‘দেখো গো’, কৃষ্ণেন্দু রায় ও গ্রূপের ‘শ্রিতকমলা’, পম্পি পাল ও গ্ৰুপের ‘আরভী পল্লবী’ বিশেষ ভাবে নজর কাড়ে। ফোরামের কর্মকর্তারা বলেন “ওডিসি নৃত্য ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য এবং সমস্ত ওডিসি নৃত্যশিল্পীকে একই ছাতার নীচে আনাই হবে আমাদের গুরুজির প্রতি সত্যিকারের শ্রদ্ধাঞ্জলি।” তাই তাঁদের এই প্রয়াসে কোন অংশগ্রহণ মূল্য ছিলনা।
শ্রদ্ধাঞ্জলীর দ্বিতীয় সন্ধ্যায় কাকলি বোস ও তার গ্রূপের ‘দেশ পল্লবী’র প্রাঞ্জল উপস্থাপনা ছিল উৎসব দিবসের যথাযথ শুভারম্ভ। এরপর অর্ণব বন্দ্যোপাধ্যায় ও গ্রূপের ‘অনন্ত’ এবং সুবিকাশ মুখার্জী ও গ্রূপের ‘লহরী’র ভাবনা ও মঞ্চায়ন ছিল অত্যন্ত সুন্দর। দ্বিতীয় সন্ধ্যার বিশেষ আকর্ষন ছিল যুগলবন্দী। এই ভাবনায় পৃৃথক প্রদেশের পৃথক নৃত্য আঙ্গিকের অপরূপ মেলবন্ধন উচ্চ প্রশংসার দাবি রাখে। ভিন্ন আঙ্গিকের খ্যাতনামা নৃত্য গুরুরা শুনিপুন রূপে নৃত্য নির্মান করেন। প্রথমেই ছিলেন ওড়িশি নৃত্য আঙ্গিকের শ্রী রাজীব ভট্টাচার্য ও কত্থক নৃত্য আঙ্গিকের শ্রীমতি পারমিতা মৈত্র তাঁদের শিষ্যরা। কিরোয়ানী রাগে আধারিত ওড়িশি কত্থকের যুগলবন্দী ‘নৃত্যাঞ্জলী’র মধ্য দিয়ে গুরু কেলুচরণ মহাপাত্র ও বিরজু মহারাজের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। ওড়িশি ভারতনাট্যমের এক বলিষ্ঠ যুগলবন্দী ‘দেবী’ উপস্থাপনায় ছিলেন সায়মিতা দাশগুপ্ত ও সম্রাট দত্ত। এরপর অর্পিতা ভেঙ্কটেশ ও তার গ্রূপের নিবেদন মঞ্চকে নানান প্রদেশের রঙে রাঙিয়ে তোলে। একত্রে ওড়িশি, মনিপুরী, ভারতনাট্যাম, কত্থকের মেলবন্ধনে ‘নাগেন্দ্র হারায়’ উৎসবকে করে তোলে আনন্দ মুখর। এদিন সন্ধ্যের সর্বশেষ উপস্থাপনা ছিল ‘ইয়াহি মাধব’। দেখা মেলে ওড়িশি মনিপুরী যুগলবন্দীর, ওড়িশি আঙ্গিকে রাধার ভূমিকায় শ্রীমতি সুস্মিতা ভট্টাচার্য ও মনিপুরী আঙ্গিকে কৃষ্ণের ভূমিকায় সুদীপ ঘোষের অভিনয় ইতিতে মন্ত্রমুগ্ধ করে তোলে। শ্রদ্ধাঞ্জলির তৃতীয় দিনে ছিলেন জগতখ্যাত অতিথি শিল্পীরা। ওড়িশি নৃত্যশিল্পী শ্রীমতি সুজাতা মহাপাত্র পরিবেশন করেন ‘রাম স্তুতি’ ও ‘অর্দ্ধনারীশ্বর’, গুরু রতিকান্ত মহাপাত্র নিবেদন করেন ‘জটায়ু মোক্ষ’। এরপর ভারতনাট্যম নৃত্যশিল্পী শ্রীমতি রমা বৈদ্যনাথন ‘মীরা ভজন’ ও সত্রিয় শিল্পী অনিতা শর্মা ‘কৃষ্ণ বন্দনা’ মঞ্চায়িত হয়। সর্বশেষ উপস্থাপনায় ছিল কত্থক নৃত্য সংস্থা প্রেরণা।