গলসির সারুলে বেদখল হওয়া খাসের জমিতে সিপিআইএম এর দলীয় পতাকা

আজিজুর রহমান,গলসি : গলসির সারুলে বেদখল হওয়া খাসের জমিতে সিপিআইএম দলীয় পতাকা লাগালেন চাষিরা। এদিন সারা ভারত কৃষক সভার ব্লক কমিটির নেতৃত্বে গ্রামের বেশকিছু গরীব ক্ষেতমজুর ও ভূমিহীন কৃষকরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে মাঠে যান। তারপর সিপিআইএম এর দলীয় পতাকা হাতে নিয়ে বেশকিছু জমিতে পুঁতে দেন। চাষিরা জানাই, গ্রামের বাসিন্দা রাধারানী রায় চৌধুরী ত্রিশ বছর পূর্বে ওই জমির মালিক ছিলেন। তারপর তখনই সেগুলি খাস হয়। জমিগুলি তাদের পঁচিশ বছর আগে দেওয়া হয়েছিল। জমি থেকে তারা চাষাবাদ করে দিন চালাতেন। কিছুদিন পূর্বে জমিগুলির আল ভেঁঙে চাষ দিয়ে দেন রাধারানী রায় চৌধুরীর ওয়ারিশনরা। এর ফলেই তারা বেদখল হয়ে যান। এদিন তারা সিপিআইএম এর নেতাদের সহযোগিতায় জমিগুলি পুনর্দখল নেন। এবিষয়ে সারা ভারত কৃষক সভার গলসি ২ ব্লক কমিটির সম্পাদক সেখ সাইফুল হক বলেন, পুনরদখল হওয়া জমিগুলো গ্রামের রাধারানী রায় চৌধুরী এর সম্পত্তি ছিল। নিয়ম বহির্ভূত হওয়ায় বাম আমলে সেগুলি খাসজমি করা হয়। তারা কমবেশি সত্তর জন ভূমিহীন চাষিকে ২৫ বছর পূর্বে জমিগুলি বিলি করে ছিলেন। তার অভিযোগ, কিছুদিন পূর্বে তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য পার্থ সারথী চৌধুরী এর নেতৃত্বে জমির আলগুলি ভেঁঙে দেন রাধারানী রায় চৌধুরীর ওয়ারিশেনরা। চাষিরা তৃণমূল নেতাদের কাছে বারবার দরবার করলেও সেই জমি ফিরিয়ে দেবার কোন ব্যবস্থা করেননি তৃণমূল নেতারা। এরপরই তাদের নেতৃত্বে গরীব কৃষকরা একত্রিত হয়ে খাসজমি পুনর্দখলের প্রস্তুতির নেন। তিনি বলেন, বিষয়টি জানতে পেরে গতকাল রাতে গ্রামের তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য চাষিদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে হুমকি দেন। এরপরই সকালে সেই হুমকিকে অগ্রাহ্য করেই শতাধিক গরীব চাষিদের ঐক্যবদ্ধ করেন তারা। এবং জমিগুলিতে তাদের দলীয় পতাকা লাগিয়ে দেন। তার দাবী, জমিগুলি পঁচিশ বছর ধরে গ্রামের সত্তর জন চাষি চাষ করেন। কোন কারনে চাষিদের নামে রেকর্ড হয়নি। তবে সেই জমির মালিক তো রাধারানী রায় চৌধুরীর ওয়ারিশনরা নন। গলসি গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য তথা সারুলের বাসিন্দা পার্থ সারথি চৌধুরী বলেন, আমি কাউকে হুমকি দিইনি আর চাষ দিতেও বলিনি। বরং আইনি প্রক্রিয়ায় খাসের জমিগুলো ওই সকল গরীব চাষিদের নামে করে দিতে চেয়েছিলাম। তার দাবী, বাম আমলে জমিগুলি গ্রামের গরীব চাষিদের বিলি করা হলেও সেগুলি গরীব চাষিদের নামে রেকর্ড করা ছিলনা। হঠাৎ করে রাধারানী রায় চৌধুরীর ওয়ারিশনরা চাষ দেওয়ায় গ্রামে জটিলটা তৈরী হয়েছিল। আমি ওই সমস্যা সমাধানের জন্য  চাষিদের নিয়ে গলসি ২ নম্বর বিডিও এবং বিএলআরও অফিসে আবেদনও করেছিলাম। তিনি জানান, সেই নিয়ে বিডিও অফিস থেকে একটা পাঁচ সদস্যের টিম তৈরী করে কয়েকদিন মধ্যে বসার কথাও হয়েছিল। যাতে খাস হওয়ায় পর থেকে যারা দখলদার ছিল তারাই জমিগুলি পায়। এই বিষয়ে রাধারানী রায় চৌধুরী এক ওয়ারিশন দীনবন্ধু রায় চৌধুরী বলেন, জমিগুলোর মালিক আমরা। বহু আগে সিপিআইএম জোরকরে পতাকা পুঁতে দিয়েছিল। তাদের জমিগুলি ছিঁনিয়ে নিয়ে গ্রামের কিছু লোককে দিয়ে দিয়েছিল। তবে খাস বলে কোন রেকর্ড হয়নি।এখন আমাদের ওয়ারিশনদের নামে এখনও রেকর্ডের কাগজ আছে। তাই জমির মালিক আমরাই। সেইজন্যই আমরা চাষ দিয়েছি। আজকে আবার শুনলাম সিপিআইএম ফ্লাগ পুঁতেছে। দখলদার হিসাবে ওরা কোটে গেলে আমরাও কোটে যাবো।