|
---|
নিজস্ব প্রতিনিধি : এক মর্মান্তিক ঘটনার সাক্ষী থাকলো তেলেঙ্গানার করিমনগর জেলা। অ্যাম্বুল্যান্স দিলোনা হাসপাতাল। তাই প্রায় বাধ্য হয়ে সাত বছরের নাবালিকা কন্যার মৃতদেহ কোলে নিয়ে রাস্তা হাঁটলেন অসহায় বাবা সম্পত কুমার। তাউ আবার সম্পতের বাড়ি তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাওয়ের নিজের জেলা পেড্ডাপল্লির কুনাভরম গ্রামে। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পরই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও রাজ্য সরকারের প্রবল সমালোচনা করে বিরোধীরা।
সূত্রের খবর, কয়েকদিন আগে অসুস্থ হয়ে পড়েছিল সম্পত কুমারের সাত বছরের মেয়ে কোমলতা। বাধ্য হয়ে তাকে করিমনগর জেলা হাসপাতালে ভরতি করেছিলেন সম্পত। রবিবার সেখানে ভরতি থাকাকালীন মৃত্যু হয় ওই নাবালিকার। বিষয়টি জানতে পেরে মেয়ের মৃতদেহ নিজের গ্রামে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার ইচ্ছেপ্রকাশ করেন সম্পত। এর জন্য হাসপাতাল থেকে একটি অ্যাম্বুল্যান্সও চান। কিন্তু, তা দিতে অস্বীকার করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। জানায়, অ্যাম্বুল্যান্স অচল হয়ে পড়ে আছে। তাই মৃতদেহ নিয়ে যেতে চাইলে বাইরে থেকে অ্যাম্বুল্যান্স ভাড়া করে নিয়ে আসতে হবে। কিন্তু, বাইরে থেকে অ্যাম্বুল্যান্স ভাড়া করার মতো টাকা ছিল না সম্পতের পকেটে।
তাই প্রিয় সন্তানের মৃতদেহ বুকে জড়িয়ে ৫০ কিলোমিটার দূরে থাকা গ্রামের উদ্দেশে রওনা দেন তিনি।
জীবনে যে কোনওদিন এই রকম মুহূর্তেরও সাক্ষী থাকতে হবে তা কোনওদিন আশা করতে পারেনি তিনি। তাই রাস্তা দিতে কাঁদতে কাঁদতে মেয়েকে কোলে নিয়ে ফিরছিলেন সম্পত। কিন্তু, কথায় আছে যার কেউ তাঁর সঙ্গে থাকেন ভগবান! সেই কথাই যেন সত্যি হয়ে উঠে হতভাগ্য ওই বাবার জীবনে। কিছুটা রাস্তা যাওয়ার পর তাঁকে ওই অবস্থায় হাঁটতে দেখে কী হয়েছে জানতে চান এক অটোচালক। আর পুরো বিষয়টি শোনার পর নিজের অটো করে সম্পতকে তাঁর গ্রামের বাড়িতে পৌঁছে দিয়ে আসেন তিনি।
পরে সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে এই ঘটনার কথা ছড়িয়ে পড়ায় শোরগোল পড়ে যায় গোটা তেলেঙ্গানায়। ওই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অমানবিক মনোভাবের সমালোচনায় সরব হয়ে ওঠেন সবাই। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে পুরো বিষয়টি অস্বীকার করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। জানায়, এই ধরনের কোনও ঘটনাই তাদের হাসপাতালে ঘটেনি। বরং ওই ব্যক্তির তাড়াতাড়ি ছিল। তাই তিনি মেয়ের মৃতদেহ হাসপাতাল থেকে বের করে নিয়ে গিয়েছিলেন নিজেই।