রাস্তায় নামল হিন্দি হাইস্কুলের পড়ুয়ারা

মালদা, ০১ আগস্ট: ছাত্রীর শ্লীলতাহানি এবং পুলিশি লাঠিচার্জের ঘটনায় রাস্তায় নামল মালদা শহরের হিন্দি হাইস্কুলের পড়ুয়ারা। বৃহস্পতিবার সকাল ১১ টা থেকে হিন্দি হাইস্কুলের সামনে বিভিন্ন ক্লাসের পড়ুয়ারা অবস্থান বিক্ষোভে বসে পড়েন।  স্কুলের পঠন-পাঠন স্বাভাবিক রাখা,  এই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হওয়া এবং অভিযুক্ত দুই শিক্ষকের শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ দেখান শতাধিক ছাত্রছাত্রীরা। এরপর ওই স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীরা মালদা শহরে একটি মিছিল করেন। পরে ইংরেজবাজার পুরসভার গিয়ে ডেপুটেশনে দেন। এদিনের এই কর্মসূচিতে ছাত্র-ছাত্রীদের পাশে সামিল হয়েছিলেন জেলা বিজেপির সভা নেত্রী শ্রীরূপা মিত্র চৌধুরী।

    ইংরেজবাজার পৌরসভার চেয়ারম্যান ইন কাউন্সিল অম্লান ভাদুরি বলেন, এই ঘটনার সঙ্গে পুরসভার কোন সম্পর্ক নেই।  যদিও ওই স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা তাদের বিভিন্ন দাবি নিয়ে পুরসভা একটি ডেপুটেশন দিয়েছে। সেই ডেপুটেশনের কপি জেলাশাসকের মাধ্যমে রাজ্য সরকারের কাছে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হবে। ইতিমধ্যে পুলিশ অভিযুক্ত শিক্ষককে গ্রেপ্তার করেছে। তবে এরকম ঘটনা ভবিষ্যতে যাতে না ঘটে তার জন্য বোর্ড অফ কাউন্সেলিং-এর বৈঠকে আলোচনা করে বিভিন্নভাবে সচেতনতামূলক কর্মসূচি নেওয়া হবে।

    উল্লেখ্য, বুধবার মালদা শহরের বালুচর এলাকায় অবস্থিত হিন্দি হাইস্কুলে পঞ্চম শ্রেণি সহ কয়েকজন ছাত্রীকে শ্লীলতাহানির ঘটনায় দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে সোচ্চার হোন পড়ুয়ারা। সেই সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশকে ঘটনাস্থলে গিয়ে লাঠিচার্জ করতে হয় বলে অভিযোগ। পাশাপাশি কাঁদানে সেল ফাটাতে হয়। এই পরিস্থিতিতে চরম উত্তেজনা তৈরি হয় ওই স্কুল চত্বরে। পরে অভিযুক্ত দুই শিক্ষক রাজেশ সাহা এবং স্নেহাশীষ সরকারকে গ্রেফতার করে ইংরেজবাজার থানার পুলিশ।

    স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের অভিযোগ,  তারা শান্তিপূর্ণভাবে বিক্ষোভ অবস্থান করছিলেন। কিছু বহিরাগত স্কুলে এসে ভাঙচুর করে। আর তার পরিপ্রেক্ষিতেই পুলিশ তাদের উপর নির্মম লাঠিচার্জ করে। এমনকি কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটানো হয়। এই পরিস্থিতিতে প্রতিবাদ জানিয়ে বৃহস্পতিবার নতুন করে শহরে মিছিল ও বিক্ষোভ অবস্থান করা হয়েছে। কেন পুলিশ স্কুলের নিরীহ পড়ুয়া এবং তাদের অভিভাবকদের ওপর এরকম ভাবে লাঠিপেটা করলো তারও দাবি করা হয়েছে।

    এদিন স্কুল পড়ুয়াদের সঙ্গে বিক্ষোভ অবস্থান এবং মিছিলে শামিল হন বিজেপির জেলা নেত্রী শ্রীরূপা মিত্র চৌধুরী। তাঁর অভিযোগ, পুলিশ তদন্ত করার আগেই লাঠিপেটা করলো পড়ুয়া এবং তার অভিভাবকদের। এর ষই প্রতিবাদ জানিয়ে ওই স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের পাশে দাঁড়িয়েছি। ইংরেজবাজার পুরসভার ডেপুটেশন দেওয়ার পাশাপাশি ডিআই এবং জেলাশাসকের দপ্তরে সমস্ত ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে ডেপুটেশন দেওয়া হবে।

    যদিও তদন্তকারী পুলিশের একাংশের বক্তব্য, বুধবার ছাত্র বিক্ষোভ পরিস্থিতি সামাল দিতে গিয়ে আক্রান্ত হয়েছেন কয়েকজন পুলিশ কর্মী। ইট, পাথর ছুঁড়ে পুলিশ কর্মীদের উপর হামলা চালানো হয়েছে। সেই পরিস্থিতি সামাল দিতে লাঠিচার্জ করা হয়।

    পুলিশ সুপার অলোক রাজুরিয়া বলেন, হিন্দী হাইস্কুলের দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ হয়েছে তার পরিপ্রেক্ষিতে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুলিশের ওপর কিছু মানুষ হামলা চালিয়েছে।  ফলে বাধ্য হয়ে লাঠিচার্জ করতে হয়েছিল, কাঁদানে গ্যাসের শেলও ফাটাতে হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ওই স্কুল চত্বরে পুলিশ টহলদারি চালাচ্ছে।  স্কুলের শিক্ষার পরিবেশ যাতে স্বাভাবিক থাকে সেদিকেও নজর রাখা হয়েছে।