একদা বীরভূমের রাজধানী রাজনগরের ঐতিহাসিক রাজবাড়ি ও ইমামবাড়া

মহঃ সফিউল আলম , নতুন গতি , রাজনগর :

    একদা বীরভূমের প্রাচীন রাজধানী ছিল রাজনগর ৷ বর্তমানে এটি বীরভূমের সদর — মহকুমা শহর সিউড়ির পশ্চিমে ঝাড়খন্ড সংলগ্ন স্থানে অবস্থিত ৷ সিউড়ি থেকে রাজনগরের দূরত্ব প্রায় ২৫ কিলোমিটার ৷প্রাচীন ঐতিহাসিক কেন্দ্র রাজনগরে বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা স্মৃতিসৌধ ও ইমারতগুলির মধ্যে অন্যতম রাজনগর রাজবাড়ি ও ইমামবাড়া ৷দেশ বিদেশের বহু পর্যটক ও ইতিহাস প্রেমী মানুষ আজও আসেন দেখার জন্য ৷চুন , সুড়কি , কাঠের পোড়া ইঁট দিয়ে তৈরি প্রাসাদ ও কারুকার্য দেখে আজও মুগ্ধ হন তাঁরা ৷নস্টালজিক হয়ে পড়েন কেউ কেউ ৷

    ইতিহাস থেকে জানা যায় , বীর রাজা এক সময় এখানে রাজত্ব করেন ৷ তাঁর নামানুসারে ‘ বীরভূম ‘ নামকরণ হয় বলে মত প্রকাশ করেন অনেকে ৷এছাড়া অন্য মতও প্রচলিত আছে ৷ বীর রাজার আগে সেন বংশের রাজারা , ঊড়িষ্যার রাজা নরসিংহ দেবও এখানে রাজত্ব করেন ৷ বীর রাজার পর আফগানিস্তান থেকে আগত আলি নকি খাঁন , আশাদুল্লা খাঁনদের পূর্বসুরীরা এখানে কয়েকশ বছর রাজত্ব করেন ৷রাজনগরের ইতিহাস ও জনশ্রুতি আজও চর্চার ও গবেষণার বিষয় ৷বীরভূম বিষয়ক ইতিহাসে রাজনগর স্থান পেয়েছে ৷ একাধিক লেখক , গবেষক , সাংবাদিক , আলোকচিত্রীরাও বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ভাবে তুলে ধরেছেন রাজনগরকে ৷

    রাজনগর ইমামবাড়ার সামনের মাঠে ফিবছর মহরম উপলক্ষে একদিনের মেলা বসে ৷ যা সম্প্রীতির মিলন মেলা বলে পরিচিত ৷কয়েক হাজার মানুষের সমাগমে মুখরিত হয়ে ওঠে উক্ত প্রাঙ্গণ ৷রাজনগর রাজ পরিবারের প্রতিনিধিরা আজও রাজনগরে বসবাস করেন ৷ বর্ষীয়াণ প্রতিনিধি মহঃ রফিকুল আলম খাঁন এখনও রাজা সাহেব নামে পরিচিত ৷এলাকায় শিক্ষা , সংস্কৃতি , ধর্মীয় ক্ষেত্রে এই রাজ পরিবারের বিশেষ অবদান রয়েছে বলে জানান এলাকাবাসী ৷রাজবাড়ি , ইমামবাড়া , হামাম তথা স্নানাগার , মতিচুড়া মসজিদ প্রভৃতি সংস্কার করা হয়েছে রাজ্য হেরিটেজ কমিশন কর্তৃক সরকারী অর্থ সহায়তায় ৷আগামী দিনে রাজনগর অন্যতম একটি পর্যটন কেন্দ্র হয়ে উঠতে পারে বলে মনে করছেন ইতিহাস প্রেমীরা ৷ এবিষয়ে তাঁরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন ৷