|
---|
নিজস্ব সংবাদদাতা : ফের গৃহবধূকে খুনের অভিযোগে কাঠগড়ায় শ্বশুরবাড়ি। একদিকে পণের চাপ। অন্যদিকে কন্যাসন্তান হওয়ার আশঙ্কায় গৃহবধূকে শ্বাসরোধ করে খুনের অভিযোগ শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের বিরুদ্ধে। প্রমাণ লোপাঠের জন্য মেয়ের পরিবারের সদস্যদের হাত থেকে মৃতদেহ নিয়ে সৎকার্য করার অভিযোগ। ঘটনাটি ঘটেছে মালদার হরিশ্চন্দ্রপুর থানার মহেন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বাংরুয়া গ্রামে। ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত শাশুড়ি সুলতানা খাতুন ও ননদ মুসকান খাতুন পলাতক রয়েছেন। পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ না নেওয়ার অভিযোগ মৃতের পরিবারের। পরে অবশ্য অভিযোগ নেয় পুলিশ । স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে,মৃত গৃহবধূর নাম রেশমা খাতুন (২২)।বাড়ি কাটিহার জেলার আজিম নগর থানার চান্দপুর গ্রামে।স্বামী সুভান আলী ভিন রাজ্যের শ্রমিকের কাজ করে।বছর তিনেক আগে বিয়ে হয় বাংরুয়া গ্রামের বাসিন্দা নুরুল আলির ছেলে সুভান আলির সঙ্গে। মৃতের মা জাকেরা খাতুন জানায়, বিয়ের সময় সাধ্যমতো দামী সামগ্রী ও যৌতুক দিয়েছিলেন। তবে পাত্র পক্ষ আরও দুই লক্ষ টাকা দাবি করেছিল। কিন্তু পরিযায়ী শ্রমিক বাবার পক্ষে ওই টাকা দেওয়া সম্ভব হয়নি। বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের জন্য রেশমার উপর চলত অত্যাচার, এমনটাই অভিযোগ পরিবারের। বিয়ের বছর খানেক পর রেশমার কন্যা সন্তান হয়। কন্যা সন্তান জন্ম হওয়ায় খুশি হয়নি শ্বশুর বাড়ির পরিবার।
অভিযোগ,তারপর থেকেই গৃহবধূর ওপর শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার চালাত স্বামী সহ শ্বশুর বাড়ির লোকেরা।শুধু তাই নয়,ওই গৃহবধূকে বাবার বাড়ি থেকে দুই লক্ষ টাকা নিয়ে আসার জন্য চাপ সৃষ্টি করতেন স্বামী ও শ্বশুর। লোন নিয়ে সেই টাকা দেওয়ার চেষ্টা করছিলেন। তাঁর মেয়ে মুখ বুজে সব সহ্য করে নিয়েছিল। এরই মাঝে তার মেয়ে আবার পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন। এদিকে কন্যা সন্তান জন্ম দেওয়ার আশঙ্কায় স্বামী,শ্বশুর ও দেওরের ষড়যন্ত্র করে বলে অভিযোগ।পরিবারের তরফে অভিযোগ উঠেছে, তাঁদের মেয়েকে খুন করে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে দিয়েছে শাশুড়ি ও ননদ। দেহটি ময়নাতদন্ত না করিয়ে ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেছিল শ্বশুরবাড়ির লোকেরা। খবর জানাজানি হতেই পুলিশ এসে দেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মালদা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন। ময়নাতদন্ত করার পর ওই গৃহবধূর মৃতদেহটি তাঁর বাপের বাড়ির হাত থেকে ছিনিয়ে নিয়ে বলপূর্বক মাটি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে অভিযুক্ত শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে। যদিও সমস্ত ঘটনা হরিশ্চন্দ্রপুর থানায় লিখিত আকারে দায়ের করা হয়েছে।এই মৃত্যুর ঘটনায় প্রকৃত তদন্ত চেয়ে দোষীদের উপযুক্ত শাস্তির দাবি জানিয়েছে মৃতার পরিবার। গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।