মহিলা সহকর্মীদের ধর্ষণের তালিকা তৈরি করেছিল মার্কিন নৌসেনা বাহিনী

নতুন গতি নিউজ ডেস্ক: মহিলা সহকর্মীদের ধর্ষণের তালিকা তৈরি করেছিল মার্কিন নৌসেনা বাহিনীর ডুবোজাহাজ ইউএসএস ফ্লোরিডা। তথ্যের স্বাধীনতা আইনের আওতায় স্থানীয় সময় গত শুক্রবার তদন্ত রিপোর্টটি প্রকাশ করেছে মিলিটারি.‌কম নামে একটি ওয়েবসাইট। তারপরই নিন্দার ঝড় বইতে শুরু করেছে আমেরিকায়। হতবাক সারা বিশ্বও।
২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে মহিলা নাবিক নিয়োগ করেছিল মার্কিন নৌসেনার গাইডেড মিসাইল ডুবোজাহাজ ইউএসএস ফ্লোরিডা। ১৭৩ জনের মধ্যে ৩২ জন ছিলেন মহিলা। মিলিটারি.‌কমের ৭৪ পৃষ্ঠার ওই তদন্ত রিপোর্টে প্রকাশ, মহিলাদের নিয়ে দুটি তালিকা তৈরি করেছিলেন তাঁদের পুরুষ সহকর্মীরা। সেখানে প্রত্যেকের নাম, চারিত্রিক গুণাগুণ এবং শারীরিক বিবরণের উল্লেখ করে লেখা ছিল, তাঁদের কাকে কখন এবং কীভাবে ধর্ষণ করা হবে। গত জুনে ডুবোজাহাজেই কর্মরত দুজন নাবিক সেখানে একটি গোপন কম্পিউটারে তুলে রাখা ওই তালিকা দুটি খুঁজে পেয়ে শীর্ষ অফিসারের নজরে আনেন সেগুলি। তাঁরা এটাও উল্লেখ করেছিলেন যে তালিকাগুলি নিয়মিত আপডেট করা হয়। মহিলারা স্বেচ্ছায় যৌনসংসর্গ করেছিলেন কিনা তা অবশ্য উল্লেখ ছিল না তালিকায়।

    অভিযোগ পেয়েও কেন কোনও পদক্ষেপ করেননি বা শীর্ষ অফিসারদের ব্যাপারটি জানাননি সেসম্পর্কে মন্তব্য করতে চাননি ফ্লোরিডার কমান্ডিং অফিসার ক্যাপ্টেন গ্রেগরি কার্চার। তাঁর উপদেষ্টাকেও বিষয়টি জানানো হয়েছিল। কিন্তু নেভাল ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন পরিষেবা কোনও ফরেনসিক পরীক্ষা করেনি। পরিবর্তে কার্চার ওই নাবিকদের শনাক্ত করে তাদের সঙ্গে বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনা করেছিলেন। নির্দিষ্ট দিন জানা না গেলেও ইউএসএস ফ্লোরিডা যখন ভারত মহাসাগরে ছিল, তখন কার্চারের শীর্ষ অফিসাররা তালিকা দুটি হাতে পেয়ে তদন্তে নেমে এই সিদ্ধান্তে আসেন যে কমান্ডের নিজেদের মধ্যে বিশ্বাস সম্পূর্ণ ভেঙে গিয়েছে। মার্কিন নৌসেনার ডুবোজাহাজ গ্রুপ–১০–এর তৎকালীন রিয়ার অ্যাডমিরাল জেফ জ্যাবলন বলছেন, প্রত্যেক মহিলা নাবিকই তাঁর পুরুষ সহকর্মীকে সন্দেহের চোখে দেখতে শুরু করেছিলেন। তাঁরা নিরাপত্তার অভাব এবং মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন। একইভাবে যেসব পুরুষ নাবিকরা এতে জড়িত ছিলেন না তাঁরাও ভয় পেয়ে গিয়েছিলেন। তদন্তের পর কার্চারকে বরখাস্ত করে নৌসেনা। মার্কিন ডুবোজাহাজ বাহিনীর কমান্ডার অ্যাডমিরাল ক্যাস রিচার্ড বিবৃতি দিয়ে বলেছেন, এধরনের ঘটনা আবার ঘটবে না সেই গ্যারান্টি না দিতে পারলেও বাহিনীর নিজেদের মধ্যে আস্থা এবং বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়িয়ে পরস্পরের সঙ্গে সুসম্পর্ক বৃদ্ধির প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন রিচার্ড।