সুনীল সোরেনের মুক্তির দাবিতে ভোটের মুখে জোরদার আন্দোলনে নামছে আদিবাসী সমাজ

নতুন গতি ওয়েব ডেস্ক: সুর চড়ছে রাঢ় বঙ্গের বিভিন্ন “গাঁওতার”। অভিমান আর ক্ষোভ দানা বাঁধছে। লাগাতার আন্দোলনের পথে এগোচ্ছে বীরভূম, পশ্চিম বর্ধমান, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া বা ঝাড়গ্রাম জেলার সমগ্র আদিবাসী সমাজ। সাঁওতাল, মুণ্ডা, কোড়া, ওরাং আজ এককাট্টা হয়ে প্রতিবাদের ঝড় তুলে আগামী সপ্তাহের শুরুতেই লাগাতার আন্দোলনের পথে পা বাড়াবেন বলে জানান পশ্চিম বর্ধমান গাঁওতার নেতা শিক্ষক নরেন টুডু।

    উল্লেখ্য ২০১১ সালের ঝাড়খণ্ডের একটা কেসের ওয়ারেন্টের ভিত্তিতে বীরভূম জেলার পুলিশের সাহায্যে গ্রেফতার হন আদিবাসী সমাজের প্রধান মুখ বীরভূমের সিউড়ি স্কুলের ইংরেজি শিক্ষক সুনীল সোরেন। গত ৪ জানুয়ারি গ্রেফতার হন ঝাড়খণ্ডের দুমকা কারাগারে সুনীল। ১৮ জানুয়ারী আবার বীরভূমের লাভপুর থানার এক কেসে আনার পর থেকেই ক্ষোভ দাবানলের মত ছড়িয়ে পড়ে গোটা আদিবাসী সমাজে।

    বিজেপি সর্বভারতীয় সহ সভাপতি মুকুল রায়ের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত সুনীল সোরেন এক প্রধান মুখ সমগ্র রাঢ় বঙ্গের আদিবাসী সমাজের। খাস খবর-কে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে নরেন টুডু বলেন, ‘‘সুনীলের রাজনৈতিক মতাদর্শ যাই থাকুক তাঁর বিপদের সময় কেউই এগিয়ে আসেনি৷ তাই আমরা তাঁর ন্যায্য বিচার চেয়ে পথে নামব৷ লাগাতার শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চালিয়ে যাব৷

    নরেন টুডুর ঘোষণার পর তাঁর এবং আদিবাসী সমাজের পাশে নৈতিক লড়াইয়ের সঙ্গে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন দক্ষিণবঙ্গ বাউরি সমাজের নেতা দেবাশীষ বাউরি। আন্দলনে শরিক হওয়ার পাশাপাশি তিনি জানান যে আন্দলন হবে স্পম্পূর্ণ অরাজনৈতিক। সুনীল শুধু আদিবাসী নেতা নয় আমাদের সমাজের সঙ্গেও জড়িত৷ আর তাই তাঁর ন্যায্য বিচার চেয়ে আমরাও পথে নামব। দেবাশীষ আরও জানান যে এই ক্ষেত্রে কোনও রাজনৈতিক নেতৃত্বের হস্তক্ষেপ বরদাস্ত করব না।

    আদিবাসী গাঁওতা নেতা নরেন টুডু এই প্রসঙ্গে বলেন দক্ষিণবঙ্গে আমাদের ভোট ২০ থেকে ৩৭ শতাংশ, তাই অনেক সময় রাজনৈতিক ফায়দা তুলতে স্তুতি বাক্য দিয়ে চলে যান বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতারা৷ এবার লড়াই হবে সুনীলের মুক্তি আর আমাদের ন্যায্য অধিকারের। আদিবাসী আর বাউরি সমাজের বিভিন্ন সংগঠন আমাদের সঙ্গে আছে।

    সমাজের পিছিয়ে পড়া এই সম্প্রদায়ের জন্য রাজ্য সরকার কিছু প্যাকেজ ঘোষণা করলেও সেটা যথেষ্ট নয় বলেই মনে করেন এদের নেতৃত্ব। খেটে খাওয়া এই মানুষ গুলোর এই মনোভাবে আঁচ ফেলতে পারে রাজ্য রাজনীতিতেও। আদিবাসী উন্নয়ন পর্ষদের কিছু দুর্নীতি নিয়েও আগামী দিনে সোচ্চার হতে পারেন এমনি ইঙ্গিত দিয়েছেন এদের নেতৃত্ব। তবে সত্যি যদি সমগ্র দক্ষিণবঙ্গ জুড়ে এদের আন্দোলন সংগঠিত হয় সেক্ষেত্রে প্রভাব পড়বে সাধারণ জনজীবনেও।